প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এবারের পুজো মণ্ডপ গুলিতে নো এন্ট্রি জোন করা হয়েছিল। এই নো এন্ট্রি জোনে একমাত্র পুজোর উদ্যোক্তা, পুরোহিত ও ঢাকিদের প্রবেশাধিকার ছিল। তবুও পূজামণ্ডপে প্রবেশ করে অষ্টমীর দিনে অঞ্জলি দিয়েছিলেন নুসরত জাহান, সৃজিত মুখোপাধ্যায় প্রমুখরা। তাই আজ বুধবার আইনি নোটিশ পেতে চলেছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে আইনি নোটিশ দেয়া হবে রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও।

প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমনের কারণে এবারের পুজোর আয়োজন বিষয়ে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাইকোর্ট। পুজো মণ্ডপে প্রবেশ সম্পর্কে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, পূজা মণ্ডপ গুলো নো এন্ট্রি জোন করা হবে। যেখানে একমাত্র প্রবেশ করতে পারবেন পুজোর উদ্যোক্তা, পুরোহিত ও ঢাকিরা। আবার পুজো উদ্যোক্তাদের প্রবেশ সংখ্যাও সীমিত করে দেয়া হয়েছিল।

বড় পূজার ক্ষেত্রে ৪৫ জনকে একসঙ্গে ও ছোট পুজোর ক্ষেত্রে ১৫ জনকে একসঙ্গে মণ্ডপে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আবার কোন কোন উদ্যোক্তা কোন কোন দিন পুজোর মন্ডপে প্রবেশ করবেন, তার তালিকা সকাল আটটার মধ্যে মণ্ডপের বাইরে ঝুলিয়ে দেবার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

যারা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করবেন, বা যারা অষ্টমীর দিন মণ্ডপে প্রবেশ করে অঞ্জলি দেবেন, তাদের সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। সেইমতো, নিয়ম ভঙ্গ কারীদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠানো শুরু করলেন তিনি। জানা গেছে, নুসরত জাহান, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রতি তিনি আইনি নোটিস ডাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যা আজ তাঁরা পেতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার মহাষ্টমীর দিনের সকালে সুরুচি সংঘের পূজামণ্ডপে অঞ্জলি দিয়েছিলেন অভিনেত্রী ও তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান ও তাঁর স্বামী নিখিল জৈন। সেদিন অঞ্জলি দিতে দেখা গিয়েছিল পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও তার স্ত্রী মিথিলাকেও। আবার, ঢাকের বাজনার সঙ্গে সঙ্গে নাচতেও দেখা গিয়েছিল তাঁদের। সেদিন অঞ্জলি দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিলেন যে, হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই নির্দেশ সকলকে পালন করা উচিত। আবার, কেউ যদি জনপ্রতিনিধি হন, তবে নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে তার দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে যায়। এর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জানিয়েছিলেন যে, আদালতের এই নির্দেশ যারা অমান্য করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যাচ্ছে, নুসরত জাহান ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাছে যে আইনি নোটিশ পাঠানো হচ্ছে সেখানে তাঁদের মণ্ডপে প্রবেশ করা সম্পর্কে বেশকিছু বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে। এই বিষয়গুলো যদি স্পষ্ট না হয়, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এ প্রসঙ্গে নুসরত জানিয়েছিলেন যে, তিনি তিন বছর ধরে সুরুচি সংঘের সদস্য আছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও নিজেকে সুরুচি সংঘের সদস্য বলে জানিয়েছেন। তবে, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী মিথিলা ও নুসরতের স্বামী নিখিল জৈন সুরুচি সংঘের সদস্য কিনা? সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার ভাবে জানা যায়নি। এদিকে আবার, সৃজিতের স্ত্রী মিথিলা হলেন বাংলাদেশের নাগরিক। নিয়ম ভঙ্গ করে মহাষ্টমীর অঞ্জলিতে যোগদান করায়, এবার তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের শাস্তির খাড়া নেমে আসে কিনা, সেদিকেই কৌতহল সকলের।