এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > আমপানের ক্ষতিপূরণের নাম প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ২৬ জন আত্মীয় পেলেন টাকা! তীব্র শোরগোল শুরু

আমপানের ক্ষতিপূরণের নাম প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ২৬ জন আত্মীয় পেলেন টাকা! তীব্র শোরগোল শুরু

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –আম্ফান ঝড়ের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বহু বার অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। একাধিক বার এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধীপক্ষ। এমন অভিযোগ উঠেছে যে, ঝরে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণ না দিয়ে যাদের আদৌ কোনো ক্ষতি হয়নি সেই সমস্ত মানুষদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মগরাহাটের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান আলমগীর মোল্লার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত প্রধান আলমগীর মোল্লা তার রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তার ২৬ জন আত্মীয়কে আম্পানের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রসঙ্গত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মগরাহাট ব্লক এর মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে অঞ্চলে অম্ফান ঝরে যাদের বাড়ি সম্পূর্ণ ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের মধ্যে থেকে প্রথম প্রথম পর্যায়ে ২৬০০ জন পঞ্চায়েতের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে আরো ১৪০০ জন স্থানীয় বিডিও অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছিলেন।

প্রশাসন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, ঝরে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানানো এই সমস্ত মানুষের মধ্যে থেকে ইতিমধ্যে ১০০০ মানুষকে ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হয়েছে। আর ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রাপকের এই তালিকায় আছেন মগরাহাটের পঞ্চায়েত প্রধান আলমগীর মোল্লার দাদা, ভাই, বোন, ও আরো কয়েকজন আত্মীয় সমেত ২৬ জন। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘ মিথ্যা অভিয়োগ করা হচ্ছে। আত্মীয়-পরিজন হলেও যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরাই টাকা পেয়েছেন। ’’

কিন্তু বিরোধী পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত প্রধানের এই আত্মীয়রা কোনভাবেই আম্ফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন নি। এই আত্মীয়দের মধ্যে বেশকিছু হলেন দোতলা বাড়ির মালিক, অনেক সরকারি চাকরিতে কর্মরত, অনেকের আবার আছে বড় ব্যবসা।

কিন্তু গ্রামের বাসিন্দা সমর দলুই, অমর দলুই ঝরে যাদের ঘর ভেঙে ভেঙে গেছে, দীননাথ কাঁড়া, রামকৃষ্ণ কাঁরা যাদের ঘরে জল ঢুকে গেছে। বাসস্থান হারিয়ে যারা আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। তারা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ” বার বার পঞ্চায়েতের কাছে দরবার করেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। কোনও রকমে ত্রিপল জোগাড় করে মাথা গুঁজে আছি। লকডাউনে কাজকর্ম নেই। নতুন করে ঘর তৈরির ক্ষমতা নেই আমাদের মতো আরও অনেকেরই। অথচ, জানতে পারছি পাশাপাশি এলাকার অনেক পাকা বাড়ির মালিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।’’

নিজের খেয়াল-খুশি মতো ঝরে ক্ষতিপূরণের তালিকায় নিজের আত্মীয়দের প্রধান স্থান দিয়েছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন মগরাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি নেতা অভিষেক ঘোষ। বিডিওর কাছে তিনি এর বিরুদ্ধে একটি অনলাইন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই গরমিল প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে মগরাহাট পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য পার্থ হালদার জানিয়েছেন, ‘‘ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকে টাকা পাননি। অথচ প্রধান নিজের পরিবার-পরিজনের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।’’

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান আলমগীর মোল্লা। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, তার নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। তাছাড়া বিরোধী নেতারা একটি ক্ষতিপূরণের আবেদন পত্রে যখন স্বাক্ষর করে ছিলেন তখন তারা এ বিষয়ে কোন আপত্তি তোলেননি?

তবে এ সম্পর্কে বিজেপি নেতা অভিষেক ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘ আমি কোনও আবেদনপত্রে সই করিনি। ব্লক প্রশাসন থেকে আমাকে জানিয়েছিল, ২৬০০ জন ক্ষতিগ্রস্তের আবেদন জমা পড়েছে। সেই সম্পূর্ণ তালিকায় আমি সই করেছিলাম। ’’ প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ জানিয়ে আজ বুধবার মগরাহাট পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করতে চলেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।

অন্যদিকে এই তছরূপী সম্পর্কে মগরাহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ হালদার প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ” বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব “। আর এ বিষয়ে মগরাহাটের বিডিও রথীন বিশ্বাস জানিয়েছেন, ” লিখিত অভিযোগ এখনও হাতে আসেনি। বিস্তারিত খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!