এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কাজ করেছেন ১৫ গুন বেশি লোক, কাজ হয়েছে হাজার ভাগের ১ ভাগ? কেন্দ্রীয় অডিট টীম ঘুম ওড়াতে পারে?

কাজ করেছেন ১৫ গুন বেশি লোক, কাজ হয়েছে হাজার ভাগের ১ ভাগ? কেন্দ্রীয় অডিট টীম ঘুম ওড়াতে পারে?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারকে বারবার গর্ব করতে দেখা গেছে। রাজ্য সরকার পক্ষ থেকে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে, এই রাজ্যের মত অন্য কোন রাজ্যে কতটা এতটা সফল হতে পারেনি একশো দিনের কাজের প্রকল্প। অন্যদিকে দেশে আনলক পর্ব শুরু হবার সময় থেকেই একশো দিনের প্রকল্পর বিস্তারের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে এই প্রকল্পের কাজ পায় তার চেষ্টা করতে দেখা গেছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

কিন্তু এই ১০০ দিনের কাজের হিসেবে অনেকটা গরমিল দেখা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ক্ষেত্রে। সাধারণত প্রতি মাসে ১০০ যত পরিবার এই ১০০ দিনের কাজে যুক্ত হয়ে থাকেন, লকডাউন এর সময় দেখা যাচ্ছে তার ১১ থেকে ১৪ গুন বেশি পরিমাণ ১০০ দিনের কাজ পেয়েছেন। কিন্তু কাজের তেমন কোনো অগ্রগতিই হয়নি। তাই এই সমস্ত কিছুর হিসেব নিতে জলপাইগুড়িতে আসতে কেন্দ্রীয় অডিট দল।

প্রসঙ্গত, কোন একটি মাসে ইতিপূর্বে জলপাইগুড়ি জেলায় যে কটি শ্রমদিবস তৈরি হয়, দেখা যাচ্ছে গত জুলাই মাসে তার চাইতে প্রায় ১৫ গুণ বেশি শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, রাজ্যে লকডাউন শুরু হবার পর এপ্রিল মাসে জলপাইগুড়ির ১২,৫৭৬ টি পরিবার ১০০ দিনের কাজে যোগদানের সুযোগ পেয়েছিল।

কিন্তু মে মাসে দেখা যাচ্ছে এপ্রিল মাসের চেয়ে ১১ গুণ বেশি পরিবার ১০০ দিনের কাজ পেয়েছে। মে মাসে ১০০ দিনের কাজ পাওয়া পরিবারের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৪৩৬ টি । জুন মাসে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেল। তখন দেখা গেল ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ২৫৪ টি পরিবার এই প্রকল্পে যুক্ত। এই পর্যন্ত এটি একটি রেকর্ড বলে দাবি করছেন এই প্রকল্পের যুক্ত সমস্ত সরকারি কর্মী ও আধিকারিকেরা।

অন্যদিকে এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে ১০০ দিনের কাজে নিয়োগ করে কাজের শ্রমদিবসও ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে জেলায় যেখানে ২ লক্ষ ১১ হাজার শ্রম দিবস। ছিল মে মাসে সেটা বেড়ে হয়েছে ২৩ লক্ষ এবং জুন মাসে তা ৩০ লক্ষ। এমনটাই এই প্রকল্পের মাসিক রিপোর্টে পাওয়া যাচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যেখানে এত সংখ্যক মানুষকে কাজ দেওয়া হলে, এতটা শ্রম দিবস বাড়িয়ে দেওয়া হল কিন্তু কাজের বেলায় তার কিছুই প্রতিফলন দেখা গেল না। কারণ, ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শেষ করার ব্যাপারে শতাংশ হারে রাজ্যের অন্যান্য বেশকিছু জেলার কাছে পিছিয়ে রয়েছে জলপাইগুড়ি।

জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে এখনো পর্যন্ত জেলায় ৬৭৭৪ টি ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও তার মধ্যে মাত্র ৭২ টি প্রকল্প ইতিপূর্বে শেষ হয়েছে। অর্থাৎ, ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ অবস্থার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়। একদিকে বিপুলসংখ্যক কাজে যোগদান অন্যদিকে কাজের অগ্রগতি অত্যন্ত কম এই সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অডিট দল।

১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জেলার এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জলপাইগুড়ি জেলা শাসক অভিষেক তিওয়ারিকে প্রশ্ন করা হলে এর উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, ” নতুন কাজ সে ভাবে বাড়েনি। তবে লকডাউনের সময়ে আমাদের লক্ষ্য ছিল যত বেশি সংখ্যক পরিবারকে একবার করে কাজ পাইয়ে দেওয়া যায়। তাই সংখ্যাটি কয়েক মাসে বেশি মনে হচ্ছে। বছরের শেষে মোট কাজ পাওয়া পরিবারের গড় সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় খুব বেশি হেরফের হবে না।” আবার এই প্রকল্পের কাজের ঢিলেমি সম্পর্কে তাঁর অভিমত,
“কাজ শেষের সব তথ্য ওয়েবসাইটে আপটেড করা যায়নি। গত কয়েক দিন ধরে আপডেটের কাজ বন্ধ রয়েছে। আপডেট হলে পূর্ণাঙ্গ তথ্য মিলবে।”

তবে জেলার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মধ্যে গরমিলের আশঙ্কা করছে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বমি বলেছেন,  ” কেন্দ্রীয় অডিট দল এসে আসল তথ্য বের করতে পারবেন। আমাদের আশঙ্কা অনেক তথ্যে জল মেশোনা হয়েছে, কোথাও বা জলে তথ্যে মেশোনা হয়েছে।

তবে, জলপাইগুড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজেপির এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ রূপে নস্যাৎ করতে দেখা গেল। তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে এ প্রসঙ্গে জানানো হলো, ‘‘এটা পুরোপুরি প্রশাসনিক বিষয়। তাই এখানে দলের তরফে কিছু বলার নেই।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!