এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > নিজের দলের ব্লক সভাপতিকেই গ্রেপ্তারির নিদান দিয়ে শোরগোল ফেলে দিলেন অনুব্রত মন্ডল

নিজের দলের ব্লক সভাপতিকেই গ্রেপ্তারির নিদান দিয়ে শোরগোল ফেলে দিলেন অনুব্রত মন্ডল

বিরোধীদের চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করতে যাকে প্রায়শই দেখা যায়। যাকে বরাবরই বিরোধীদের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় তোপ দেগে বিতর্কে জড়াতে দেখা যায় তিনিই এবার বেনজিরভাবে নিজের দলীয় সহকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়ে রাজ্যরাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিলেন। কথা হচ্ছে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী নেতা অনুব্রত মন্ডলের।

এদিন জেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভা থেকেই খয়রাশোল ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্জ্বল কাদেরিকে গ্রেপ্তার করানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। শুধু তাই নয়, তাকে ‘বোমা মারার নায়ক’ বলেও সম্বোধন করলেন।

গতকাল বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূল জেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভায় অনুব্রতবাবু সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে উদ্দেশ করে বলেন,’উজ্জ্বল কাদেরিকে গ্রেপ্তার করতে বলুন। ওখানকার বোমা মারার নায়ক উজ্জ্বল কাদেরি।’

পাশাপাশি তৃণমূলের আগামী বিগ্রেড সমাবেশে ৫ থেকে ৬ লক্ষ মানুষ জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান দলীয় কর্মীদের। এছাড়া বিরোধীদের উদ্দেশ্যেও ছিল তাঁর কড়া বার্তা,”ব্রিগেডের পরই অনুর্বর জমিতে পাচন দিয়ে উর্বর করার কাজ শুরু হবে, তৈরি থাকুন। বিজেপি বহিরাগত ঢোকালে আমরা হাতে চুড়ি পরে বসে থাকব না।”

জেলা সূত্রের খবর বলছে,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমে চড়া হয়েছে খয়রাশোলে। আর লোকসভা ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে কতোটা তীব্র আকার ধারণ করেছে তার প্রমাণ দিয়ে দিল গত ২১ অক্টোবর ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ খুনের ঘটনা। দীপক বাবু ব্লক সভাপতির ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তাঁর ও উজ্জ্বল কাদেরির দলবলের মধ্যে ব্যাপক মতানৈক্য ছিল।

এই পরিস্থিতি যাতে আরো বিগড়ে না যায়,তার জন্যে জেলা সভাপতি দীপক বাবুকে ব্লক সভাপতি এবং উজ্জ্বল কাদেরিকে কার্যকরী সভাপতি করে দেন। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দমনের এই টোটকা কাজে আসেনি। বরং উল্টে এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপর গোষ্ঠীর হিংসা আরো প্রবল হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে প্রাণ গেল ব্লক সভাপতির।

দীপক খুনে প্রথমে অনুব্রত বাবু বিজেপি দুষ্কৃতিদের কাঠগড়ায় তুললেও নিহতের স্ত্রী কিন্তু অভিযোগের আঙুল তুলেছে উজ্জ্বল কাদেরির দুই আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে আবার কেউ কেউ শাসকদলের অঞ্চলের দায়িত্বে রয়েছেন। এই অভিযোগই গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের প্রমাণ দিয়েছে।

তারপর এদিন অনুব্রত বাবু কার্যকরী সভাপতিকে গ্রেফতার করার নিদান দেওয়ায় সেই গোষ্ঠী কোন্দলেই সিলমোহর দিলেন। শুধু তাই নয়,এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মাথায় রেখেই নতুন করে কাউকে ব্লক সভাপতির দায়িত্বে আনা হল না। সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই ব্লকের যাবতীয় কাজকর্ম আপাতত তদারক করবেন।

উল্লেখ্য,হঠাৎ করে অনুব্রত বাবুর এভাবে উজ্জ্বল বাবুর বিরুদ্ধে কড়া নিদান দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেউ কেউ মনে করছেন, লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ব্লক সভাপতি খুনের ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অন্যদিকে,এটাও মনে করা হচ্ছে তিনি যদি ব্লক সভাপতি খুনের পর কড়া সিদ্ধান্ত না নিতেন তাহলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতো। খয়রাশোলে দীপক অনুগামীদের বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতো। এর পাশাপাশি তিনি দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন অন্যায় করলে কেউই নিস্তার পাবেন না। শাস্তি অপরাধকারীকে পেতেই হবে,তা সে যতোই দলীয় কর্মী হোক না কেন। একই সুরে কথা বলতে দেখা গেল সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

অভিযুক্ত উজ্জ্বল কাদেরিও এ ব্যাপারে জেলা নেতৃত্বের আদেশকে মান্যতা দিলেন। বললেন,”কেষ্টদাই আমার অভিভাবক। তিনি যদি আমাকে অপরাধী মনে করেন তাঁর অফিসে আমাকে ডেকে পাঠান, সেখান থেকেই আমাকে পুলিসের হাতে তুলে দিন।” গোটা ঘটনাটি নিয়ে আপাতত থমথমে অবস্থায় খয়রাশোল। চাপানউতোর তুঙ্গে জেলা তৃনমূল শিবিরে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!