এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > আরাবুলকে হঠাৎ গ্রেফতার! মমতার ভয়ঙ্কর প্ল্যান, বিলম্বিত বোধোদয়, সোচ্চার বিজেপি!

আরাবুলকে হঠাৎ গ্রেফতার! মমতার ভয়ঙ্কর প্ল্যান, বিলম্বিত বোধোদয়, সোচ্চার বিজেপি!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কি ধীরে ধীরে শুভবুদ্ধির উদয় হতে শুরু করেছে? নাকি মূল বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা! নাকি দুষ্কৃতীদের নিজের আচলের তলায় রেখে লোকসভা ভোটের আগে যাতে বিতর্ক না হয়, তার চেষ্টা! এই সমস্ত প্রশ্ন উঠছে এই কারণেই, কারণ বৃহস্পতিবার উত্তর কাশিপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামকে। রাজ্য রাজনীতি নিয়ে যারা চর্চা করেন, তারা সকলেই জানেন যে, এই আরাবুল ইসলাম কতটা ভয়ংকর। তার দাপটে বাঘে গরুতে ভাঙ্গড়ে এক ঘাটে জল খায়। অনেকটা ওই সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের মত। কিন্তু বর্তমানে সন্দেশখালির দিকে তাকালেই বোঝা যাবে যে, এই সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি হচ্ছে। গতকালের পর আজকেও সন্দেশখালিতে মানুষের বিক্ষোভ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মানুষ আর কোনো কিছুতেই ভয় পাচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতেই হঠাৎ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের এত কি করে শুভ বুদ্ধির উদয় হল যে, তৃণমূলের এত বড় নেতাকে তারা গ্রেপ্তার করে নিল! স্বয়ং পুলিশ মন্ত্রী নির্দেশ না দিলে যে এই কাজ এই রাজ্যের দলদাস পুলিশ করবে না, সেটা স্পষ্ট। কিন্তু নিজের দলের নেতাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলেন কেন! তাহলে কি আইনের শাসন রক্ষা করার চেষ্টা করছেন তিনি! নাকি এর পেছনে তার ভয়ঙ্কর প্ল্যান রয়েছে! ইতিমধ্যেই তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা।

সূত্রের খবর, তোলাবাজির অভিযোগে নাকি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভাঙড়ের আরাবুল ইসলামকে। কিন্তু এতদিন সেই আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে কতই না অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সেই শুরু হয়েছিল এক অধ্যাপিকাকে জগ ছুড়ে মারা নিয়ে। তারপর এই নেতার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি এদের সম্পদ ভাবেন। সেই কারণে একের পর এক মানুষ খুন হলেও, ভাঙ্গড় উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও এই নেতার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি দলদাস প্রশাসনকে। তবে হঠাৎ করেই আজ সেই আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হলো। তাই এটাকে সহজ সরল ভাবে মানতে কিছুটা হলেও অসুবিধে হচ্ছে সমালোচকদের। তাদের মতে, পেছনে তো অনেক বড় কোনো গল্প রয়েছে। সন্দেশ খালিতে যখন জনরোষ বাড়ছে, তখন ভাঙ্গরেও তা আছড়ে পড়তে পারে, এটা হয়ত খবর পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন জায়গায় যেখানে যেখানেই তৃণমূলের নেতারা মানুষকে ভয় দেখাচ্ছেন, সেখানেই সন্দেশখালীর ঘটনা থেকে উজ্জীবিত হয়ে সাধারণ মানুষ এবার রাস্তায় নামতে পারেন। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে সোচ্চার হতে পারেন। তাই কি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখানোর চেষ্টা করছেন যে, দল, মতের ঊর্ধ্বে উঠে তার প্রশাসন কাজ করে। কিন্তু এখন এই সমস্ত আইওয়াশ করে যদি তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, তার প্রশাসন নিরপেক্ষ এবং তিনি দলের নেতারা দোষ করলে ছাড়েন না, তাহলে বলতে হবে যে, অনেকটাই দেরি করে ফেলেছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এইসব নাটক করে এখন কোনো লাভ হবে না এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। এতদিন এই সমস্ত গুন্ডাদের দিয়ে রাজ্যকে ধ্বংসের কিনারে নিয়ে গিয়েছেন। তাই মানুষের মধ্যে এখন শুভবুদ্ধির উদয় হচ্ছে। সন্দেশ খালীর ঘটনার পর এই রাজ্যে শাসক দল ভয় পেয়ে গিয়েছে। সেই কারণে আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে তারা আইওয়াশ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মন থেকেও করে থাকেন, তাহলে তা বিলম্বিত বোধোদয়। কিন্তু এত পরে রাজ্যের মানুষ আর এই সরকার ভালো কাজ করলেও তাদের মেনে নেবে না বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই শেখ শাহজাহান, শওকত মোল্লা, আরাবুল ইসলামদের মত মডেলরাই তৃণমূলের নির্বাচন পার করে। বিভিন্ন সময় প্রত্যেকটি নির্বাচনে জেতার জন্য এই সমস্ত ব্যক্তিদের ধমক চমক সহ্য করতে হয় স্থানীয় মানুষকে। তবে সন্দেশখালীর মানুষ কিন্তু আর সেটা সহ্য করতে চাইছে না। মহিলারা একেবারে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা, কাউকেই এই সাধারণ মানুষ আর পরোয়া করছে না। আর এসব দেখেই ভয় পেয়ে গিয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বুঝতে পারছেন, বাম আমলের শেষের দিকে যেভাবে জনরোষ আছড়ে পড়েছিল, এই সরকারের বিরুদ্ধেও তাই হচ্ছে। তার বিদায়ের সময় হয়ত খুব কাছেই। ফলে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে তিনি যে আইন মেনেই কাজ করেন, তার প্রমাণ দেওয়ার জন্য আরাবুল ইসলামকে বলির পাঁঠা করলেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তবে পুরোটাই যে একটা ব্লু প্রিন্ট এবং সন্দেশখালীর ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই, সেই ব্যাপারে দ্বিমত নেই বিরোধীদের মধ্যে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!