বর্ষা বিদায় নিলেও বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে না! ফসল পাকার মরশুমে মাথায় হাত চাষীদের, উড়ছে ঘুম? রাজ্য হাওড়া-হুগলি November 2, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্ষা ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই দেখা যাচ্ছে আকাশে কালো মেঘ এবং মাঝে মাঝেই হয়ে যাচ্ছে এক পশলা বৃষ্টি। দুর্গাপূজার সময় দেখা দিয়েছিল নিম্নচাপের আশঙ্কা। যদিও নিম্নচাপের অভিমুখ বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যাওয়াতে সে যাত্রা রক্ষা পাওয়া গিয়েছে কিন্তু তারপরেও নতুন করে বঙ্গোপসাগরে আরও একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আর তারই জেরে বেশ কিছু জায়গায় মাঝে মাঝেই একপশলা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আরামবাগ মহকুমার চাষীদের দুশ্চিন্তা অন্যত্র। কারণ আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে সেখানে ধান কাটার কাজ এবং এবছর দীর্ঘদিন পর আমন ধানের চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু যেভাবে মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, তাতে চাষীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। স্বাভাবিকভাবেই তাদের স্মৃতিতে ফিরে এসেছে বুলবুল ও আমফানের স্মৃতি। যদিও আরামবাগ ব্লক কৃষি আধিকারিক শুভম প্রামাণিক আশ্বস্ত করেছেন, এই সামান্য বৃষ্টিতে চাষের সেরম কোনো ক্ষতি হবে না এবং ভারী ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। অন্যদিকে আরামবাগ মহকুমা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ছ’টি ব্লকে প্রায় সাড়ে 64 হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিল। এ বছর সেখানে 500 হেক্টর জমিতে চাষ বেশি হয়েছে। অর্থাৎ মহকুমা জুড়ে প্রায় 65 হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। প্রসঙ্গত, এবছর পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত এবং উপযুক্ত কৃষি আবহাওয়ার জন্য ফলন ভাল হবার আশা। যথারীতি ফসলের গুণগত মানও যেরকম ভালো হবে তেমন উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রকোপে দীর্ঘদিন লকডাউন চলেছে। সেসময় বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিক অন্যান্য জেলার মতন আরামবাগেও ফিরে এসেছে। যথারীতি তাঁরাও এবছর কৃষি কাজে হাত লাগিয়েছেন বলে জানা গেছে। আর তাতেই এবছর ধান চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়তো আর দশ বারো দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে এই মহকুমার চাষীদের একাংশ জানিয়েছেন, শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকেই আমন ধান চাষ হয়। তারপর রক্ষণাবেক্ষণ, কীটনাশক স্প্রে, জমির উর্বরতা বাড়াতে সারের প্রয়োগ সব মিলিয়ে প্রায় এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ধান চাষ করতে 12 থেকে 15 হাজার টাকা। গতবছরের বুলবুল ঝড়ের কারণে চাষাবাদ মারাত্মক রকমভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। পাকা ধান জমিতেই নষ্ট হয়েছিল। যারা বীমার আওতায় ছিলেন, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। অন্যান্য চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন বলে জানা গেছে। এরপর বোরো ধান চাষের সময় আমফান ঝড় আসে, যথারীতি ব্যাপক ক্ষতি হয় চাষাবাদের। বর্তমানে সামান্য বৃষ্টিই তাই চাষীদের ভয় ধরাচ্ছে। তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা আর কয়েকদিন মোটামুটি আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে আমন চাষের মাধ্যমে বাংলার কৃষি অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন। কিন্তু এই হঠাৎ বৃষ্টি যদি দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়, তাহলে কিন্তু বলাই বাহুল্য এত কষ্ট করে করা, এত ব্যাপকভাবে আমন চাষের বহুল ক্ষতি হবে। তার ওপর কৃষকরা পড়বেন আতান্তরে। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক অবস্থা এমনিতেই সবার যথেষ্ট খারাপ। তাই কৃষকদের কাছে এখন একটাই চাহিদা যে কোনো মূল্যে ধান কেটে ঘরে তোলা। আপনার মতামত জানান -