এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিরোধীদের নাকি জেলে ভরবেন মমতা! হরিদাস পাল বলে চরম কটাক্ষ শুভেন্দুর!

বিরোধীদের নাকি জেলে ভরবেন মমতা! হরিদাস পাল বলে চরম কটাক্ষ শুভেন্দুর!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একের পর এক নেতা-মন্ত্রী জেলে যাচ্ছে, চুরিতে জড়িয়ে পড়েছে গোটা তৃণমূল দল। সবাই তাদের চোর বলে আক্রমণ করছে। আর সেই সময় বড়াই করতে ছাড়ছেন না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অনেকে আবার বলছেন, চোরের মায়ের তো বড় বেলা হবেই। যখন একের পর এক নেতারা ধরা পড়ে যাচ্ছেন, যখন তাদের চুরি মানুষ ধরে ফেলছে, তখন বদলার রাজনীতির কথা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। প্রকাশ্য সভা মঞ্চ থেকে তিনি কি বলেছেন, সেটা রাজ্যের মানুষ জানে। তার বক্তব্য যে, তাদের চারজনকে যদি ধরা হয়, তাহলে তিনি বিরোধীদের আট জনকে ধরবেন। কিন্তু পুলিশ মন্ত্রী হয়েছেন বলে কি মাথা কিনে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? কি পেয়েছেন তিনি! এই রাজ্যটা কি তার মগের মুলুক, নাকি তার জমিদারি! তার সাহস কি করে হয় এই ধরনের কথা বলার? কোথা থেকে আসে এই ধরনের ঔদ্ধত্য? কোন রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের বুকে তিনি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন! বিরোধীরা তো বটেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর তাকে আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না।

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাত্রিবেলা আবার তাকে সাংবাদিকরা এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। আর তখন রীতিমত মুখ্যমন্ত্রীকে ধুয়ে দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। মুখের মত জবাব দিয়ে তিনি রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, “উনি জেলে ঢোকানোর কে? উনি কে হরিদাস পাল! ওনাকে কে এই অধিকার দিয়েছে?” অনেকে বলছেন, রাজ্যে বিরোধীদের ওপর কি পরিমান সন্ত্রাস মুখ্যমন্ত্রী চালান, সেটা রাজ্যের মানুষ জানেন। প্রত্যেক দিন ঘুম থেকে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটাই টার্গেট হয়, বিরোধীদের সভা আটকানো, তাদের জেলে ঢোকানো। সেইখানে আর নতুন করে তার এই ধরনের কথা না বললেও চলত। কিন্তু তিনি যখন পুলিশ মন্ত্রী হয়ে এই ধরনের কথা বলছেন, তখন নিঃসন্দেহে তা চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতির যে কথা মাননীয়ার গলায় শোনা গেল, তাতে একটা জিনিস আরও স্পষ্ট হচ্ছে যে, আগামী দিন আরও হিংস্র, আরও ভয়ানক হয়ে উঠবে এই রাজ্যের শাসক দল। তাই এই প্রবনতাকে, এই চেষ্টাকে বন্ধ করতে হলে এখন থেকেই প্রতিবাদ প্রয়োজন। তাই সেটাই জারি রেখে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে যে এই বক্তব্যের জন্য বিন্দুমাত্র জায়গা ছেড়ে দেবেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আক্রমণ শানিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিও। তাদের বক্তব্য, শুভেন্দু অধিকারী তো ঠিক কথাই বলেছেন। এই বক্তব্য দিয়েও যদি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের না হয়, তাহলে তো তিনি আরও আস্কারা পেয়ে যাবেন। হয়ত পুলিশ এফআইআর নাও নিতে পারে। তারা হয়তো কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাটুকু দেখাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আদালতে গিয়ে এই সরকারকে একটা শিক্ষা অন্তত দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্যে এত চুরিহ ডাকাতি, গুলি চলছে। সেটা সামলানোর মতো সময় নেই। কিন্তু বিরোধীদের কি করে জেলে ঢোকাতে হয়, সেই দিকে ভালোই নজর রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তাই প্রকাশ্যে একজন জনপ্রতিনিধি তথা পুলিশ মন্ত্রী যদি এই ধরনের কথা বলেন, তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, রাজ্য কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে আইন ব্যবস্থা হোক বা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত যে, প্রতিহিংসার রাজনীতি বরদাস্ত করবে না বাংলা। গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠমহলের পক্ষ থেকে এমনটাই বলা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, নিজের চুরি ঢাকার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত কিছু করছেন। তিনি জানেন, তার সামনে গভীর অন্ধকার। বিরোধী দলনেতার দাবি অনুযায়ী হয়ত ভবিষ্যতে গোটা মন্ত্রিসভাও জেলে চলে যেতে পারেন। যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে, তাতে এটা হলে অবিশ্বাস্য কিছু হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে উঠবেন, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে তো এই হিংসাকে আটকানো প্রয়োজন। তাই অবিলম্বে বিরোধী দলনেতা যা বলছেন, তা যদি হয়, আইনগত পদক্ষেপ যদি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়, তাহলে অন্তত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। তবে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পর, এফআইআর করার পর রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, সামান্য কথা বলার মত ক্ষমতা এই মেরুদণ্ডহীন পুলিশের হবে না। কিন্তু পরবর্তীতে যদি মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী রাজ্যের বিরোধীদলের নেতাদের জেলে ঢোকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং সেটা যদি হয় প্রতিহিংসাবশত, তাহলে আদালতেও যেতে পারে বিরোধী দল। আর তার জন্যই এখন পুলিশের কাছে একটা এফআইআর করা অত্যন্ত প্রয়োজন। যাতে পরবর্তীতে তারা আদালতের কাছে গিয়ে বলতে পারে যে, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিহিংসা পরায়ণ বক্তব্যের জন্যেই আজকে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!