এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > বিজেপিই ভবিষ্যত, কর্মী বিক্ষোভে বিরাট সম্ভাবনা দেখছেন শুভেন্দু!

বিজেপিই ভবিষ্যত, কর্মী বিক্ষোভে বিরাট সম্ভাবনা দেখছেন শুভেন্দু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-কিছুদিন ধরে টেলিভিশনের পর্দা খুললেই একটা খবর সকাল, বিকেল কান ঝালাপালা করে দিত যে, বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে, বিজেপি শেষ হয়ে যাচ্ছে রাজ্যে, কর্মী-বিক্ষোভে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে পারছে না বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। স্বভাবতই যারা মন থেকে বিজেপিকে ভালোবাসেন, তারা এই খবর দেখে হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী এর পেছনে বড় চক্রান্তের গন্ধ পেয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তৃণমূল থেকে কেউ বা কারা বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে বিজেপিকে চাপে ফেলতে চাইছে। কিন্তু এসব নিয়ে তারা মোটেই চিন্তিত নন। বরং যারা প্রকৃত বিজেপি কর্মী, যাদের মনে ক্ষোভ রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু এবার সেই কর্মী বিক্ষোভ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তাতে তৃণমূলের যেমন ঘুম উড়লো, তেমনই ঘুম উড়লো বিজেপি বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এদিন সাংবাদিকদের কার্যত গুগলি উত্তর দেন। দিনের আলোর মতো পরিষ্কারভাবে তিনি বুঝিয়ে দেন, রাজ্যে তো অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে। কেন তাদের অফিসের সামনে কর্মীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে না? কেন সেই সমস্ত ভিড় জমছে বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে? এখন যারা তৃণমূলকে ভালবাসেন, যারা অনুপ্রাণিত মিডিয়া, তারা শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে বলবেন, ড্যামেজ কন্ট্রোল করছেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু তারাও একটু ভালোমতো যদি ভেবে দেখেন, তাহলে বুঝবেন যে, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দল হিসেবে দিনকে দিন গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে জন্যেই, তাদের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে জন্যেই আজকে কর্মীদের এত ভিড় বাড়ছে বিজেপি অফিসের সামনে।

প্রসঙ্গত, এদিন অমিত শাহের সফর নিয়ে অফিসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। আর সেখানেই যোগ দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাইরে বেরিয়ে আসতেই সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন যে, বিজেপি অফিসের সামনে কেন এত কর্মী বিক্ষোভ হচ্ছে? আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের মন খারাপ করিয়ে একটি মোক্ষম উত্তর দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “যে গাছের ফল যত মিষ্টি, সেই গাছে তত ঢিল পড়ে। সবাই বলছে, পদ্মের পদ চাই। আজকে কেউ তৃণমূলের অফিসে যাচ্ছে না, সিপিএমের অফিসে যাচ্ছে না। সবাই বিজেপির অফিসে আসছে। তার মানে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।”এখন অনেকে বলতেই পারেন, বিষয়টাকে এত সহজেই কেন ঘুরিয়ে দিচ্ছেন শুভেন্দুবাবু? কেন তিনি এটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না! এতে তো তার দলেরই ক্ষতি হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, বিজেপির ক্ষতিটা বিজেপিকে বুঝে নিতে দিলেই বেশি ভালো হবে। তৃণমূল এবং তার অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবে না। যে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রতিদিন খবরের কাগজে হেডলাইন হয়, যে দলে পিসি-ভাইপোর মধ্যে টানাটানি হয়, কে কতদিন চেয়ারে থাকবে, তা নিয়ে। সেই আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতাদের অন্তত বিজেপিকে নিয়ে ভাবার কোনো কারণ নেই বলেই দাবি সমালোচকদের।

গেরুয়া শিবিরের দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি একদিকে যেমন শৃঙ্খলা পরায়ন দল, ঠিক তেমনই বিজেপিতে দিনকে দিন কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে কর্মীদের প্রত্যাশা থাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে তারা বসবে। পেছন থেকে হয়তো তৃণমূল চেষ্টা করেছে, এই চক্রান্তকে ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ধরে ফেলেছেন শুভেন্দুবাবু। তাই বিদ্রোহ সেই পর্যায়ে যাওয়ার আগেই তা সামাল দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু এই বিক্ষোভে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গেল যে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষ বিকল্প শক্তি হিসেবে বিজেপিকে পছন্দ করছেন সে জন্যেই, বিজেপিতে কর্মীদের ভিড় বাড়ছে জন্যেই আজকে পদের জন্য প্রত্যাশী বিজেপি কর্মীরা অফিসের সামনে জড়ো হয়ে তাদের দাবি জানাচ্ছেন। ফলে আগামী দিন যে বিজেপিরই হতে চলেছে, তা স্পষ্ট। তার ফলে ভয় পেয়ে এই ধরনের বিক্ষোভকে এন্টারটেইন করা ছাড়া তৃণমূলের আর কোনো কাজ নেই বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দুবাবু দক্ষ এবং সাংগঠনিক নেতা, এই সম্পর্কে আজকে আর কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি একদিকে যেমন তৃণমূলকে কাবু করতে জানেন, ঠিক তেমনই জানেন, কি করে এই সমস্ত বিদ্রোহ সামাল দিতে হয়! তাই সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কথা বলে তিনি ঠিকমতোই কর্মীদের ম্যানেজ করে নিয়েছেন। তবে সাংবাদিকরা অর্থাৎ অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা এ নিয়ে মাতামাতি করছেন। তারা তৃণমূলকে প্রচারের আলোয় এনে বিজেপিকে ময়দানের বাইরে পাঠানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারীকে তারা এই বিষয়ে প্রশ্ন করবেন। আর শুভেন্দু অধিকারী এমন কিছু বলবেন যা নিয়ে তারা সারাদিন চর্চা করতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দুবাবু তাদের যে মোক্ষম জবাবটা দিলেন, তাতে আখেরে লাভ হলো বিজেপিরই। যা শুনে পূজোর মরশুমেও যথেষ্ট হতাশ হয়ে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল। কারণ নিজের অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের লেলিয়ে দিয়েও, বিজেপিকে খাটো করার শত চেষ্টা করেও, শুভেন্দু অধিকারীকে কাবু করার প্রচুর উদ্দেশ্য নিলেও, কোনো লাভ হলো না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!