এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিজেপির বঙ্গভঙ্গের পেছনে বৃহৎ ষড়যন্ত্র ফাঁস, বিস্ফোরক বাম-কংগ্রেস! জেনে নিন!

বিজেপির বঙ্গভঙ্গের পেছনে বৃহৎ ষড়যন্ত্র ফাঁস, বিস্ফোরক বাম-কংগ্রেস! জেনে নিন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর বিজেপি বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে। তৃতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরই বাংলা ভাগের মত বিস্ফোরক দাবি তুলতে শুরু করেছেন বিজেপির একের পর এক সাংসদ। প্রথমে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোকে নিয়ে বঞ্চনার কথা তুলে ধরে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি করেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা।

যদিও বা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যকে তারা কোনোমতেই সমর্থন করেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তারপরেও জঙ্গলমহলের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে দেখা যায় বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। যার জেরে বিড়ম্বনার মুখে পড়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টি। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে।

তবে শাসকদলের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে এহেন যুক্তি দেওয়া হলেও, সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত শূন্য হয়ে যাওয়া বাম এবং কংগ্রেস নেতাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। গোটা ঘটনার পেছনে আরএসএসের চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করলেন উত্তরবঙ্গের দুই বাম এবং কংগ্রেস নেতা। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা ঘটনায় কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

সূত্রের খবর, এদিন আরএসএসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেস নেতা শংকর মালাকার। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ি পৌরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এটা নতুন কিছু নয়। 2009 সাল থেকেই বিজেপি রাজ্যভাগের কথা বলে দার্জিলিঙে ভোট করেছে। আমরা লক্ষ্য করছি, আসামে বিজেপি সরকার হওয়ার পর থেকেই আরএসএস এই ব্যাপারে সক্রিয়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জাতি, জনজাতি ও আদিবাসী মানুষের মধ্যে তারা অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে এবং ঐক্য ভাঙতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে সার্বিক আন্দোলন প্রয়োজন।”

পাশাপাশি এই গোটা ঘটনায় তৃণমূলের মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করতে দেখা যায় অশোক ভট্টাচার্যকে। এদিকে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা যে যুক্তি দিয়েছেন, তার পেছনে আরএসএসের চক্রান্ত রয়েছে বলে অশোকবাবুর পথেই হাঁটতে দেখা গেল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক শংকর মালাকারকে। এদিন তিনি বলেন, “আলাদা রাজ্যের কথা বলেই 2009-এ যশোবন্ত সিংহ, 2014 তে এসে এসএস আলুওয়ালিয়া জয়লাভ করেছিলেন। 2019 সালেও গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে উস্কে দিয়ে ভোটে জয়লাভ করেছেন। এর মধ্যে লুকোছাপার কোনো ব্যাপার নেই। যা বলা হচ্ছে, সবই আরএসএসের গেমপ্ল্যান। অমিত শাহের এক চ্যালা আছেন, অনন্ত মহারাজ। তিনি সবসময় রাজবংশীদের খেপিয়ে রাখেন। আর ভিতরে ভিতরে এই ষড়যন্ত্র করছে, তা তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরাও জানে না, তা নয়।আমরা ঐক্যের পক্ষে। এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে যদি রাস্তায় নামতে হয়, তাহলে আমরা প্রস্তুত।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অর্থাৎ রাজ্য ভাগের দাবি তোলার বক্তব্যকে হাতিয়ার করে একদিকে যেমন বিজেপি ও আরএসএসকে একহাত নিলেন দুই বাম- কংগ্রেস নেতা, পাশাপাশি তৃণমূলের অস্বস্তিও বাড়িয়ে দিলেন তারা। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গের দুই বাম এবং কংগ্রেস নেতার এই যুক্তির পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেস কার্যত শূন্য হয়ে গিয়েছে। সেদিক থেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন রাজ্য ভাগের দাবি নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে তরজা চলছে, তখন মধ্যমণি হয়ে দুই দলকেই দোষারোপ করে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার সুকৌশলী চেষ্টা করলেন এই দুই বাম এবং কংগ্রেস নেতা।

এক্ষেত্রে বিজেপিকে দায়ী করে যেমন আরএসএসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তারা, ঠিক তেমনই এই গোটা ঘটনার পেছনে তৃণমূল সম্পূর্ণরূপে অবহিত বলেও দাবি করার চেষ্টা করলেন অশোক ভট্টাচার্য এবং শংকর মালাকার। পাশাপাশি রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে একতা নিয়ে তারা পথে নেমে লড়াই করবে বলে জানিয়ে দিতে দেখা গেল এই দুই হেভিওয়েট নেতাকে।

অর্থাৎ নির্বাচনে শুন্য হয়ে গেলেও বাংলার একতা অটুট রাখতে তারা যে সবসময় সচেষ্ট, তা প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা করলেন উত্তরবঙ্গের পোড় খাওয়া এই দুই রাজনৈতিক নেতা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাদের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বিজেপি, আরএসএস এবং তৃণমূল কংগ্রেস যে সমানভাবে অস্বস্তি মুখে পড়ল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!