এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কৃষক ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে উপনির্বাচনে বিজেপিকে নক-আউট করতে কোমর বাঁধছে তৃণমূল

কৃষক ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে উপনির্বাচনে বিজেপিকে নক-আউট করতে কোমর বাঁধছে তৃণমূল


 

হাতে আর মাত্র কিছুদিন বাকি। তারপরেই করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচন। প্রায় 39 বছর পর গত 2016 সালের এই কেন্দ্র থেকে জিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। তবে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে জয়ী হওয়ায় তার ছেড়ে যাওয়া এই করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে এবার উপনির্বাচন হচ্ছে।

যেখানে তৃণমূলের কাছ থেকে এই কেন্দ্র নিয়ে নিজেদের দখলে রাখতে প্রচার চালাতে তৎপর ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে নিজেদের দখলে থাকা কেন্দ্র যাতে নিজেদের দখলেই রাখা যায়, তার জন্য পাল্টা কৌশল নিচ্ছে ঘাসফুল শিবির। বস্তুত, যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনুন্নয়ন এই সমস্ত বিষয়কে খাড়া করছে বিজেপি, ঠিক তখনই পাট চাষীদের দুর্দশার বিষয় তুলে ধরে বিজেপিকে চাপে রাখতে তৎপর তৃণমূল কংগ্রেস।

জানা যায়, করিমপুর 1 এবং 2 ব্লক মিলিয়ে প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। যেখানে পাট চাষের সংখ্যা প্রায় 30 হাজারের মত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেই পাটচাষিরা সমস্যায় রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েও সেই পাট চাষিদের কথা কিন্তু ভাবেনি বলেও দাবি করতে শুরু করেছে তৃনমূল কংগ্রেস। কেননা জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া তরফেই এই পাট কেনা হয়।

কিন্তু বর্তমানে সেই পাট চাষের পর পাট কেনা নিয়ে চাষীদের প্রবল সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আর এই ব্যাপার নিয়ে এবার করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে চাষীদের সমস্যার দিক তুলে ধরে বিজেপির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে করিমপুর বাজারের ব্যবসায়ী বিজন ঘটক বলেন, “জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়াকে পাট বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু সাড়ে তিন হাজার টাকা পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে তিন কুইন্টাল পাট চাষ করতে হয়। চাষ করতে খরচ পড়ে সাড়ে 12 হাজার টাকা। কিন্তু পাট বেচে 10 হাজার 500 টাকা পাওয়া যায়। এত কষ্ট করেও চাষ করে দাম না পেলে কার ভালো লাগে; পাট পচানো এখন বিরাট ঝামেলার ব্যপার। বরাবরই পাটের দাম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। আমরা জানি, এখানে রাজ্য সরকারের কিছু করার নেই।”

আর পাট চাষিরা এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলায় করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে সেই পাট চাষিদের সমর্থন নিজেদের দিকে আনতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে করিমপুর 1 ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ সাহা বলেন, “পাট করিমপুরের প্রধান অর্থকরী ফসল। কিন্তু পাট কেনার বিষয়টি রাজ্যের হাতে নেই। ওটা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাই করে। কিন্তু পাট চাষীদের মারাত্মক বেহাল অবস্থা। দাম পাওয়া তো দূরের কথা, চাষের খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এত বছর ধরে পাট চাষীদের জন্য কেন বিজেপি সরকার কিছু করেনি! মানুষ সেই উত্তর চায়। নির্বাচনে এটা যে একটা ইস্যু, তা অস্বীকার করার কিছু নেই।”

আর তৃণমূল নেতৃত্বের এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে, করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে পাট চাষীদের এই সমস্যার কথা তুলে ধরে তারা বিজেপিকে কটাক্ষ করে রাজনৈতিক ময়দানে ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে বলে দাবি একাংশের। যদিও বা এই ব্যাপারে নদিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “পাট কেনার জন্য জেসিআই থেকে বহু কেন্দ্র খোলা হয়। পাট কেনার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই চাষীদের দাম দিয়ে দেওয়া হয়। এখনও পাট কেনা চলছে। চাষীদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তৃণমূল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করার জন্যই এইসব বলে যাচ্ছে।”

তবে বিজেপির তরফ যে কথাই বলা হোক না কেন, যেভাবে পাট চাষীদের এই বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপিকে চাপে ফেলতে চাইছে তৃণমূল, তাতে শেষপর্যন্ত তারা কতটা সাফল্য পায়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!