এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মোদি হাজার কোটির অগ্রিম দিতেই বড় ক্ষতিপূরণের লক্ষ্যে মোট ক্ষতির হিসাব সেরে ফেলতে চান মমতা

মোদি হাজার কোটির অগ্রিম দিতেই বড় ক্ষতিপূরণের লক্ষ্যে মোট ক্ষতির হিসাব সেরে ফেলতে চান মমতা


সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের মধ্যেই রাজ্যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমপান তার দাপট দেখিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং সেই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকার বীভৎস ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যাওয়ায় প্রথম দিনেই হতাশার সুর শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে এই ব্যাপারে রাজ্যকে সাহায্য করে, তার জন্য আবেদন করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। আর এরপরই শুক্রবার রাজ্য পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

হেলিকপ্টারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে সাথে নিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এরপরই বসিরহাট কলেজে প্রশাসনিক বৈঠক করে এই ভয়াবহ দুর্যোগের জন্য রাজ্যকে 1000 কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যকে এই আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আগে অগ্রিম কথাটি যুক্ত করেছেন। আর তাতেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এই “অগ্রিম” শব্দ উচ্চারণ করাতে স্পষ্ট হয়ে গেছে, আপাতত জরুরী ভিত্তিতে এই অর্থ দেওয়া হল।

কিন্তু এরপরেও যদি অর্থ লাগে, তাহলে তা দিয়ে রাজ্যকে কি সহযোগিতা করবে কেন্দ্র! এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। জানা যাচ্ছে, এই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে রাজ্যের কোন অঞ্চলে কত ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে এখনও সমীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে উদ্ধারকাজ চলছে। তাই এমত একটা পরিস্থিতিতে সমীক্ষা করে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। তবে এরকম ভয়াবহ দুর্যোগের পরে কেন্দ্র অতীতে কিরকম পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা দেখলেই গোটা ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছে একাংশ।

বস্তুত, গত বছর মে মাসে ফনি নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এসেছিল। যার প্রভাব পড়েছিল ওড়িশায়। তবে পশ্চিমবঙ্গও এর থেকে বাদ যায়নি। এর ফলে ওড়িশার বহু জেলায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আর তারপরে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে 341 কোটি টাকা অনুদান পাঠানো হয়েছিল ওড়িশা রাজ্যকে। তবে 3 মে উড়িষ্যায় এই ঝড় আছড়ে পড়লেও, 29 এপ্রিল কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সেই টাকা ওড়িশার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই ঝড় তান্ডব চালানোর পর দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে আরও 1000 কোটি টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও সেই দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী একই আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করায় নানা মহলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন। এদিকে এই ঘটনার পর ওড়িশা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দুর্যোগ কতটা হয়েছে, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। আর তারপরেই ওড়িশা সরকারের তরফে ক্ষয়ক্ষতি এবং পুনর্বাসনের জন্য 9 হাজার 336 কোটি টাকা চাওয়া হয় কেন্দ্রের কাছে। অন্যদিকে পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য চাওয়া হয় আরও 5 হাজার 227 কোটি টাকা।

যার ফলস্বরুপ গত বছর আগষ্ট মাসে ওড়িশা সরকারকে আরও 3338.22 কোটি টাকা অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর ভয়াবহ দুর্যোগের পর ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে সমীক্ষা চালিয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যেভাবে ওড়িশা সাহায্য পেয়েছিল, এবার সেই একই পন্থায় চলতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। জানা গেছে, এদিন প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন‌।

তবে দ্রুত সমীক্ষা করে কতটা বিপর্যয় হয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়ে আর্থিক আর্থিক সাহায্য পেতে চাইছে রাজ্য সরকার বলে মত একাংশের। এদিন এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য খুব শিগগিরই সমীক্ষার কাজ সেরে ফেলবে। কেন্দ্রের টিম এসে তাদের মত সমীক্ষা করুক। কোনো অসুবিধে নেই। তারপরে দেখা যাক, কেন্দ্র শেষমেষ কত টাকা অনুদান করে।”

অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, যাতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আরও আর্থিক সাহায্য দরকার। তাই বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে এখন সমীক্ষা করে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লিপিবদ্ধ করে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দিতে চাইছেন তিনি। সব মিলিয়ে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব মিলিয়ে কেন্দ্রকে কি রিপোর্ট পাঠান এবং কেন্দ্রের কাছে কি দাবি করেন, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!