এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কলকাতা হাইকোর্টে ডিএ মামলার রিভিউ পিটিশনের শুনানি – কি হল আজকে? জানুন বিস্তারিত

কলকাতা হাইকোর্টে ডিএ মামলার রিভিউ পিটিশনের শুনানি – কি হল আজকে? জানুন বিস্তারিত

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের করা ডিএ মামলায় ‘নিশ্চিত হার’ বুঝে কি ‘পালিয়ে বেড়াচ্ছে’ রাজ্য সরকার? দীর্ঘদিন ধরে চলা এই গুঞ্জন আজ তীব্রতর হল কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে। কেননা, রাজ্য সরকারেরই করা এই ডিএ মামলা নিয়ে রিভিউ পিটিশনের শুনানিতে এলেনই না রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত! উল্টে, কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আবারো অতিরিক্ত সময়ের দাবি জানানো হল রাজ্য সরকারের তরফে – যা সরকারি কর্মচারীদের রসিকতায় এখন ‘তারিখ পে তারিখ’ ফর্মুলা!

গত ৩১ শে আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার ডিএ মামলা নিয়ে প্রথম ধাক্কা খায় – যখন এক ঐতিহাসিক রায়ে আদালত জানিয়ে দেয় – ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার। রাজ্য সরকার এতদিন যে প্রচার করত ডিএ আদতে রাজ্য সরকারের দয়ার দান, তা এককথায় নস্যাৎ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আর আদালতে ধাক্কা খেয়ে ঢোঁক গিলতে বাধ্য হয় রাজ্য সরকার – আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনোরকম বিরোধিতা করতে দেখা যায় না রাজ্য সরকারকে।

কিন্তু এরপরেই, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই ডিএ মামলা যায় স্যাটে – যেখানে ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে তা নির্ধারিত হওয়ার কথা। সেই মামলায় হলফনামাই জমা করে না রাজ্য সরকার – উল্টে শুনানির দিন দাবি করে বসে এবার হলফনামার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক। স্যাটের বিচারপতিরা সেই দাবি উড়িয়ে দিলে বিনা হলফনামাতেই শুরু হয় শুনানি। আর সেই গোটা শুনানি পর্ব জুড়ে রাজ্য সরকার যেসব যুক্তি দেখায় – তাতে একদিকে স্যাটের বিচারপতিদের কাছে ভর্ৎসিত হতে হয়, অন্যদিকে ওঠে তীব্র হাসির রোল!

আর শুনানি শেষে স্যাট রাজ্য সরকারকে নিজেদের দাবির স্বপক্ষে যখন প্রামাণ্য নথি জমা দিতে বলে – তখন রাজ্য সরকার আবার ‘তারিখ পে তারিখ’ ফর্মুলায় জানায় যে এই সংক্রান্ত বেশ কিছু ফাইল ‘মিসপ্লেসড’ হয়ে গেছে, চাই আরো অতিরিক্ত সময়। স্যাট তা নস্যাৎ করে দিলে রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে – আর সেখানেও প্রথমে ভুল হলফনামা জমা পরে। বিচারপতিদের সামনে আবারো তার জন্য অতিরিক্ত সময় দাবি করে রাজ্য সরকার। এদিকে সেই রিভিউ পিটিশনের শুনানি গত ১৮ ই ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তা হয় না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এর পরে প্রধান বিচারপতি অবসর গ্রহণ করলে এই মামলা যে ডিভিশন বেঞ্চে ছিল তা ভেঙে যায়। রাজ্য সরকারও কার্যত এই নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে! উপায়ান্তর না দেখে অন্যতম মামলাকারী কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশনের তরফে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির কাছে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলার শুনানির জন্য আবেদন করা হয় – কেননা আগামী ২৪ সে জানুয়ারী স্যাটে এই মামলার পরবর্তী দিন। এইসব ‘তারিখ পে তারিখ’ করতে করতে তা পেরিয়ে গেলে – আবার হয়ত একমাস পরে সেখানে দিন পাওয়া যাবে!

কনফেডারেশনের আবেদনে সাড়া দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এই মামলার জন্য বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি শেখর বি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করেন ও আজ সেই মামলার শুনানির দিন রাখেন। এই প্রসঙ্গে এই মামলার সঙ্গে প্রথম থেকেই জড়িত কনফেডারেশনের অন্যতম শীর্ষনেতা সুবীর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই মামলার সবকিছু হয়ে গেছে – কিন্তু শুধু রায়দান আটকে আছে রাজ্য সরকারের এই রিভিউ পিটিশনের জন্য। অথচ রাজ্য সরকারের করা রিভিউ পিটিশনে এলেনই না রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল!

সুবীরবাবুর আরও বক্তব্য, উল্টে তাঁর প্রতিনিধি জানালেন তিনি বিষয়ে কাজে ব্যস্ত – তাই আরও সমস্যা দেওয়া হোক। যা শুনে মাননীয় বিচারপতিরা রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাজ্য সরকারের দাবি মত ২১ শে জানুয়ারী নয় ১৮ ই জানুয়ারী এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন তাঁরা। তবে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে মাননীয় বিচারপতিরা জানিয়েছেন এই মামলায় বিশেষ কিছু সুযোগ নেই! তাই আমাদের আইনজীবীদের ধারণা – এই রিভিউ পিটিশনের যে রায়ই তা আগামী পরশুই আদালত জানিয়ে দেবে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৪ সে জানুয়ারী স্যাট এই ডিএ মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে সদর্থক রায় দেবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!