এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > আসছে রথযাত্রা – জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার ৩ রথের নাম ও বৈশিষ্ট্য জানেন? কিভাবে তৈরী হয় এই রথ?

আসছে রথযাত্রা – জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার ৩ রথের নাম ও বৈশিষ্ট্য জানেন? কিভাবে তৈরী হয় এই রথ?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – আষাঢ় মাসে শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়াতে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। মূলত পুরিতে জগন্নাথ দেবের মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়ার কারণে অত্যন্ত ধুমধাম করে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সেখানে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পুরীর রথযাত্রা প্রত্যেকটি মানুষের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় অতি দীর্ঘকাল ধরেই। জানাগেছে এখনো পর্যন্ত পুরীর রাজা বংশপরম্পরায় রথ যাত্রার উদ্বোধন করেন।

রাজত্ব না থাকলেও বংশপরম্পরায় যিনি রাজা উপাধি লাভ করেন তিনি রথের সামনে পুষ্পাঞ্জলী দিয়ে সোনার ঝাড়ু এবং সুগন্ধি জল দিয়ে রথের সামনের অংশ পরিষ্কার করেন। এই কাজটি সমাপ্ত হবার পর রথের দড়িতে টান পড়ে। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, “রথস্থ বাম নং দৃষ্টাপুনর্জন্ম ন বিদ্যতে” অর্থাৎ যদি কোনো বামনরথে অধিষ্ঠিত অবস্থায় জগন্নাথ দর্শন করেন তবে তার আর পুনর্জন্ম হয়না। পৌরাণিক মত অনুযায়ী রথের দড়ি টানাকেও অত্যন্ত পুণ্যের কাজ বলে মনে করেন হিন্দু ধর্ম সমাজ।

কিন্তু জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার জন্য তিনটি আলাদা রথে আলাদা রংয়ের আবরণ দিয়ে রথগুলিকে সাজানো হয়। আর এই তিনটি রথেরই আবরণের রং, রথের আকৃতি, চাকার সংখ্যা সমস্ত আলাদা হয়। অতীতের পরম্পরা অনুযায়ী সবার আগে যে রথটি বের হয় তাতে থাকেন বড় ভাই বলভদ্র। এরপরের রথটিতে থাকেন সুভদ্রা এবং সবার শেষে থাকে শ্রীকৃষ্ণ অর্থাৎ জগন্নাথের রথ। প্রতিটি রথের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে।

জগন্নাথ দেবের রথটির নাম নন্দীঘোষ। রথটি ৮৩২ টি কাঠের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। রথটিতে চাকার সংখ্যা থাকে ১৬ টি এবং রথটিকে লাল-হলুদ আবরণ দিয়ে সাজানো হয় এবং রথটিরর মাথায় যে ধ্বজা থাকে তার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী। নন্দীঘোষের উচ্চতা হয় ৪৫ ফুট। জগন্নাথ দেবের রথে‌ তাঁর সঙ্গী হন মদনমোহন। নন্দীঘোষের সারথির নাম দারুকা এবং রথটির রশিটির নাম ‘শঙ্খচূড়া নাগুনি’। এই রথটি ৪ টি ঘোড়ার মাধ্যমে চালানো হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

নন্দীঘোষে জগন্নাথের সাথে গারুদা নামের একজন রক্ষীও থাকে। এছাড়াও এই রথটিতে জগন্নাথের সাথে স‌ওয়ার হন গোবর্ধন, কৃষ্ণ, নরসিংহ, রাম, নারায়ন, হনুমান, রুদ্র। এই রথটি সবকটি রথের শেষে থাকে। সবার আগে যে রথটি বের হয় তা হলো বলভদ্রের রথ। বলরামের রথের নাম তালধ্বজ। বলরামের সাথে তাঁর রথে সঙ্গী হন রামকৃষ্ণ। তালধ্বজের আবরণটি লাল ও সবুজ কাপড়ে সাজানো হয় এবং এর মাথায় যে পতাকাটি থাকে তার নাম হলো উন্যানী।

বলরামের রথের উচ্চতা ৪৪ ফুট এবং এই রথটি ৭৬৩ কাঠের সমন্বয় তৈরি হয়। রথটিতে চাকার সংখ্যা থাকে ১৪ টি। তালধ্বজের রশিটির নাম বাসুকি নাগ এবং এই রথটির সারথির নাম মাতালি। তালধ্বজের লক্ষী হিসাবে থাকেন বাসুদেব। এছাড়াও বলরামের সঙ্গে রথটিতে স‌ওয়ার হন কার্তিক, গণেশ, সর্বমঙ্গলা, মুক্তেশ্বর। সুভদ্রার রথটি জগন্নাথ এবং বলরামের মাঝখানে থাকে। সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন এবং সুভদ্রার সঙ্গিনী হিসেবে থাকেন সুদর্শনা। দর্পদলনের উচ্চতা ৪৩ ফুট এবং এই রথে বারোটি চাকা থাকে।

রথটি লাল এবং কালো কাপড়ের আবরণ দিয়ে সাজানো হয়। আর এর মাথায় যে পতাকাটি থাকে তার নাম নদম্বিকা দর্পদলনের সারথি হিসাবে থাকেন অর্জুন এবং এই রথটির রশিটির নাম ‘স্বর্ণচূড়া নাগুনি’। এই রথটিও ৪ টি ঘোড়া দ্বারা টানা হয়। দর্পদলনে সুভদ্রার সাথে স‌ওয়ার হন চন্ডী, চামুণ্ডা, বনদুর্গা, শ্যামাকালী, বিমলা ইত্যাদি দেবী। প্রতিবছর এই রথগুলি নতুন কাঠ দিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়। পুরীর সংলগ্ন দাশপাল্লা ও রানাপুর নামের দুটি জঙ্গল থেকে প্রতিবছর কাঠ সংগ্রহ করা হয়। এই দুটো জঙ্গলের যতগুলি গাছ কাটা হয় তার দ্বিগুণ গাছ প্রতিবছর রোপন করা হয়।

পুরীর রথযাত্রা নিয়ে নানা মানুষের বিভিন্ন মত রয়েছে। জানা যাচ্ছে পুণ্যার্থীদের মত অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত একটি বছর আসেনি যে রথের দিন পুরীতে বৃষ্টি হয়নি। এছাড়াও জানা গেছে রথগুলি যে তৈরি করা হয় তাতে কোনরকম অত্যাধুনিক যন্ত্র, স্ক্রু, নাট বল্টু কোন কিছুই ব্যবহৃত হয় না। এছাড়াও এই রথ তৈরি করার জন্য নতুন করে কোন কর্মী নিয়োগ করা হয় না বংশপরম্পরায় যারা তৈরি করে আসছে তারাই প্রতিবছর তৈরি করেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!