এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ইডির নোটিশে সুবিধেই হলো অভিষেকের? তবে চরম সমস্যায় তৃণমূল কর্মীরা!

ইডির নোটিশে সুবিধেই হলো অভিষেকের? তবে চরম সমস্যায় তৃণমূল কর্মীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-আগামী মাসের 2 এবং 3 তারিখ দিল্লিতে ধর্ণা কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। মূলত বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের দিল্লিতে এই কর্মসূচি। যেখানে কার্যত ট্রেন ভাড়া করে অনেক বঞ্চিত একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে ঘাসফুল শিবির। যে কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু আজ হঠাৎ করেই তাকে ইডির পক্ষ থেকে নোটিশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে যে, আগামী 3 তারিখে তাকে কলকাতায় ইডি দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে। অনেকেই বলছেন, এটা সেটিং ছাড়া আর কিছু নয়। বেছে বেছে এই দিনেই কেন ইডি তাকে ডেকে পাঠালো? আবার অনেকে বলছেন, সেটিং থাকুক, আর যাই থাকুক, এই নোটিশের ফলে আখেরে লাভবান হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই। কিন্তু কেন এই ধরনের কথা বলা হচ্ছে? নোটিশে তো অভিষেকবাবুর অস্বস্তিতে পড়ার কথা। কেন তিনি লাভবান হবেন বলে মনে করছেন সমালোচকদের একটি অংশে?

বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ বলছেন তৃণমূল খুব ভালো মতো জানে, দিল্লিতে হই হট্টগোল করা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। কারণ আদৌ তাদের সঙ্গে কত কর্মী যাবে, এটাই একটা বড় প্রশ্ন। 50 হাজার টার্গেট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সেটা 20 হাজার পেরোবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তিত আঞ্চলিক দল তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিদেশ থেকে হাটাহাটি করে বেশ ভালোমতো রাজ্যে ফিরলেও, হঠাৎ করেই আবার পায়ের চোটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়েও নানা মহলে অনেকে প্রশ্ন জুড়ে দিচ্ছেন যে, দিল্লির কর্মসূচি সফল হবে না জেনেই সেখানে যাচ্ছেন না তৃণমূল নেত্রী। আর এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোটিশ আখেরে তার সুবিধাই করে দিল। যদি তিনি দিল্লির কর্মসূচিতে যান, তাহলে সেটা অন্য বিষয়। কিন্তু যদি তিনি এই নোটিশের বিষয়টিকে সামনে এই নিয়ে কর্মীদের জানিয়ে দেন যে, তিনি দিল্লিতে যাবেন না, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হবেন এবং তাদের মুখে ঝামা ঘষে দেবেন, ইত্যাদি বড় বড় কথা বলেন, তাহলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, তৃণমূল নেতৃত্ব আগেভাগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিল দিল্লিতে না যাওয়ার ব্যাপারে। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হঠাৎ উবে যাওয়া এবং সেই কারণেই এই নোটিশ বলেই কটাক্ষ বিরোধীদের।

তবে যদি শেষমেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেউই দিল্লিতে না যান, তাহলে কারা করবে সেখানে এই কর্মসূচি? একাংশের দাবি, দিল্লি পুলিশ আর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এক নয়। দিল্লিতে তৃণমূলের কিছুই নেই। সেখানকার পুলিশ পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আর তার দায়িত্বে রয়েছেন স্বয়ং অমিত শাহ। বাংলায় যেভাবে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে, দিল্লিতে যদি বাংলার বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল গন্ডগোল করার সুযোগ খোঁজে, তাহলে সেই পুলিশ কি করে তাদের জব্দ করতে হয়, তা খুব ভালো মতো জানে। তাই নেতৃত্ব হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কেউই না যান, তাহলে আখেরে বিপদে পড়বেন দিল্লি যাওয়া তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব এবং কর্মীরা। তাদেরকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তারা সেখানে গিয়ে দিকভ্রষ্ট হয়ে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

অনেকে আবার এটাও বলছেন যে, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো খুব ভালো মতোই জানে যে, দিল্লিতে তারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে আন্দোলন করবে, আর দিল্লী পুলিশ তাদের ছেড়ে দেবে না। আদৌ তারা সেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারবে কিনা, সেটাই একটা বড় প্রশ্ন। ফলে প্রেস্টিজ যাওয়ার থেকে বাংলায় ইডির মুখোমুখি হাজিরা দেওয়া অনেক ভালো। হয়তো এই পরিকল্পনা মনে মনে ছকেই রেখেছেন তৃণমূলের এক সর্বভারতীয় যুবরাজ। তাই শেষমেষ তিনি যদি দিল্লি সফরে না যান, যদি কর্মীদেরকে একাই ছেড়ে দেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, দিল্লিতে গিয়ে আদৌ কোনো লাভ হবে না তৃণমূলের। বরঞ্চ মুখ খাওয়া যেত তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। তাই পিসির পাশাপাশি এবার ভাইপোও সেখানে না গিয়ে ইডির মুখোমুখি হওয়াটাকেই বেশি সুবিধাজনক বলে মনে করছেন। এমনটাই দাবি একাংশের। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি কি করবেন, তা তিনিই জানেন। ইডির নোটিশের সারা দেবেন, নাকি পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী দিল্লি যাত্রা করবেন, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজ্যবাসীর।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!