এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > হলদিয়া পুরসভার সম্পত্তি বাঁচাতে নয়া উদ্যোগ, জেনে নিন

হলদিয়া পুরসভার সম্পত্তি বাঁচাতে নয়া উদ্যোগ, জেনে নিন

সামনের পুরো নির্বাচন ও বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে হলদিয়া পুরসভা অভিনব উদ্যোগ নিল। শহরকে পরিষ্কার রাখার স্বার্থে তাঁদের এই উদ্যোগ। যদিও বিরোধী শিবিরের দাবি, পুরোটাই ভোট টানার ম্যাজিক। ম্যাজিক অক্ষুন্ন রাখতেই হলদিয়া পুরসভা এই নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। পুরসভার নিরাপত্তা ও সম্পদ রক্ষার জন্য এবার হলদিয়া পুরসভা সিটি গার্ড নিয়োগ করলো। এই পরিষেবা পেয়ে আপাতত হলদিয়া বাসীর মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু বিরোধী শিবিরের জল্পনা তুঙ্গে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, হলদিয়া পুরসভা কর্তৃক এই উদ্যোগটি বেশ অভিনব।

এবার হলদিয়া পুরসভা সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতে সিটি গার্ড নিয়োগ করলো পুরো ভবনের গেটে নজরদারি করার পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুরসভার সম্পদ দেখভাল করবে তাঁরা। এবং নাগরিকরা পুরো আইন ভাঙলে তাদের সতর্ক করবেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের পুর পরিষেবা পেতেও সাহায্য করবেন তাঁরা। সাইকেলে বা বাইকে চেপে ওয়ার্ড ঘুরে শহরের বাসিন্দাদের সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন খোঁজখবর রাখবেন তাঁরা। নিয়মিত ওয়ার্ডগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকছে কিনা সেই তথ্য পুর কর্তৃপক্ষ এবং কাউন্সিলরকে জানাবেন। মোদ্দাকথা, বহুমুখী উদ্দেশ্য সফল করতেই পুরসভার এই সিদ্ধান্ত। এই উদ্যোগকে কার্যকরী করতে পুরসভা নিজে থেকেই তহবিল থেকে খরচ চালাচ্ছে।

এদিন হলদিয়া পৌরসভার পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু শেখর মন্ডল জানান, নিরাপত্তা ও নাগরিক পরিষেবা দেওয়ার জন্য 58 জন সিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুজন করে সিটি গার্ড আছেন। যে য়ার্ডের যে বাসিন্দা, সেই ওয়ার্ডে তাকেই সিটি গার্ড করা হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের মতই সিটি গার্ড দের ড্রেস কোড করা হয়েছে। এবং পুরসভা থেকে ‘সিটি গার্ড’ লেখা আইডেন্টিটি কার্ড দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত হলদিয়া পুরসভার 87 জন সিকিউরিটি কর্মী ছিলেন আগেই। নতুন সিকিউরিটি গার্ড যুক্ত হওয়ায় সিকিউরিটি কর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 145 জন। তবে সিটি গার্ডরা নিরাপত্তার পাশাপাশি পুরসভার পুর পরিষেবার বিষয়টিও দেখবেন।

হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সত্যব্রত দাস জানিয়েছেন, হলদিয়া শহরে সিটি গার্ড নিয়োগের ভাবনা সম্পূর্ণ নতুন। এজন্য বাছাই করা তরুণদের নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে প্রতি ওয়ার্ডে কর্মসংস্থান হয়েছে। সিটি গার্ডদের ডিউটির সময় সকাল 7 টা থেকে সন্ধ্যা 7 টা পর্যন্ত। এদের বেতন হল সাড়ে সাত হাজার টাকা। হলদিয়া পুর কার্যালয়ে বেশকয়েকজন সিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। পুরসভায় কাজের উদ্দেশ্যে আসা ভিজিটরদের সম্পূর্ণ সাহায্য করার জন্য এই সিটি গার্ডরা রয়েছেন। নিরাপত্তা ছাড়াও পরিষেবা মূলক কাজে সাহায্যের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে সিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্ট্রিটলাইট, হাইমাস্ট লাইট, অডিটোরিয়াম, মুক্ত মঞ্চ, জলের পাম্প, পার্ক বা সুসজ্জিত রাস্তার মতো যে স্থায়ী সম্পদ রয়েছে, সেগুলোতে দেখভাল করার জন্য সিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। অডিটোরিয়াম বা জলের পাম্প দেখার জন্য পুরসভার নিজস্ব সিকিউরিটি গার্ড আগেই ছিল কিন্তু এই প্রথম সেখানে মোবাইল সিকিউরিটি নিয়োগ করা হলো। গ্রীন সিটি মিশনে হলদিয়া শহর সেজে উঠেছে। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই সেইসব রাস্তা এবং ফুটপাতে দখল হয়ে যাচ্ছে।

এবার পুরো এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতে বেআইনি দখল, আইন ভেঙে বাড়ি নির্মাণ বা পৌরসভার সাপ্লাই লাইন থেকে বেআইনিভাবে জল নিলে সাথে সাথে সিটি গার্ডরা খবর দেবে পুরসভায় ও কাউন্সিলরকে। এছাড়া পুরসভায় কেউ যদি রাস্তায় প্লাস্টিক ফেলে রাস্তা অপরিচ্ছন্ন করে, তাহলেও তাকে সিটি গার্ডরা সতর্ক করবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে ড্রেন বা ভ‍্যাটগুলি পরিষ্কার হচ্ছে কিনা সেগুলি নজরদারি করে কাউন্সিলরকে জানাতে হবে।

অন্যদিকে নাগরিকদেরও পুর সুবিধা পেতে কোন অসুবিধা হলে বা কোন সমস্যা হলে সেটি সিটি গার্ডের মাধ্যমে কাউন্সিলর বা পুর কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবেন। এমনকি কোন বয়স্ক বা দরিদ্র মানুষের কাছে পুরসেবা পৌঁছে দিতে সিটি গার্ডরা সাহায্য করছেন।

সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, হলদিয়া পুরসভার এই সিটি গার্ড নিয়োগের উদ্যোগ যথেষ্ট অভিনব। শাসক শিবিরের তরফ থেকে বলা হয়েছে, হলদিয়ার নাগরিকদের আরো বেশি করে সুবিধা দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হলো। নাগরিক উন্নয়নই মূল লক্ষ্য তাঁদের। অন্যদিকে, বিরোধী শিবির দাবি করেছে, হলদিয়া পুরসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ চালু করেছে। তবে শাসক দল, বিরোধী দল যাই বলুক এই উদ্যোগের ফলে যে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন সে বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!