পদ হারাতেই হেভিওয়েট নেতা ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের নিয়ে বৈঠকে! দলবদল? নাকি কড়া পদক্ষেপ বাড়ছে জল্পনা উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য May 18, 2020 যত গন্ডগোল এবার যেন জলপাইগুড়িতে। প্রশাসক পদে বসানো নিয়ে এখন যেন তীব্র শোরগোল তৈরি হয়েছে। বর্তমানে সমস্ত মেয়াদ উত্তীর্ন পৌরসভাগুলিতে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু শাসক থেকে বিরোধী বিভিন্ন পৌরসভাগুলোতে সেখানকার প্রাক্তন মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের প্রশাসক করা হলেও, ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি পৌরসভায়। সেখানে এতদিন মোহন বসু চেয়ারম্যান থাকলেও, তাকে প্রশাসক করা হয়নি। যার জায়গায় প্রশাসক করা হয়েছে সেই পৌরসভার বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান পাপিয়া পালকে। আর এতেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। জানা গেছে, সোমবার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন পাপিয়া দেবী। পাশাপাশি এই পৌরসভায় সেই প্রশাসক বোর্ডে আরও চারজন তৃণমূল কাউন্সিলরকে সদস্য করা হয়েছে। তবে সেখানেও নাম নেই প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসুর। অনেকেরই প্রশ্ন, যেখানে মোহনবাবু দীর্ঘ 17 বছর ধরেই জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ সামলে আসছেন, সেখানে কেন তাঁকে প্রশাসক করা হল না? একাংশের মতে, জেলা সভাপতি পদে কিষাণ কুমার কল্যাণী বসার পর থেকেই মোহন বসুর সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। সেদিক থেকে এই কিষান বাবুর অঙ্গুলিহেলনে প্রশাসক বোর্ড তৈরি হয়েছে। আর তাতে জায়গা পাননি প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু। তবে অন্য অংশ আবার বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই মোহনবাবু অসুস্থ ছিলেন। তাই তাকে এই বোর্ডের দায়িত্বে রাখা হয়নি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান পদ সামলানো মোহন বসু এবার কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে শুরু করেছেন। আর তার এই আলোচনা ঘিরে জলপাইগুড়ি জেলা রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে জল্পনা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে মোহন বসু বলেন, “জেলা নেতৃত্ব ভালো কাজ করলে তার প্রশংসা করব। জেলা কমিটি যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে আঘাত করে বা সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে প্রতিবাদ করব। আমি সবসময়ই প্রতিবাদ করে এসেছি। আগামী দিনেও অন্যায়ের প্রতিবাদের পথে থাকব। দল আমি একা করি না। আমরা একটা টিম ওয়ার্ক করি। আমার উপরে আরও লিডার রয়েছেন। তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন। আগামী দিনের কর্মসূচি 2-4 দিনের মধ্যেই আমরা পরিষ্কার করে দেব। দলের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অনেকে ফোন করছেন। আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করে এসেছি। আগামী দিনেও সেই কাজ করে যাব। প্রশাসক পদে রাজ্য আমাকে মনোনীত না করায় অধিকাংশ কাউন্সিলার প্রতিবাদ করেছেন। অনেকের সমর্থন আমার প্রতি রয়েছে। ওই কাউন্সিলররা বলেছেন, লিখেওছেন। তারপরেও অন্য কিছু হল।” অর্থাৎ রাজ্য সরকারের তরফে জলপাইগুড়ি পৌরসভায় প্রশাসক বোর্ডে তার নাম না থাকা যে তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না, তা মোহন বসুর এই কথাতেই পরিস্কার হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি যে এই ঘটনার জন্য প্রবলভাবে ক্ষিপ্ত এবং কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন, তাও নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। আর এখানেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন, তাহলে কি মোহন বসুকে আগামী দিনে পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস টিকিট দেবে না? আর তাই কি তাকে আগেভাগেই প্রশাসক বোর্ডে না রাখার মত সিদ্ধান্ত নিল শাসক দল? অন্যদিকে গুরুত্ব হারাতে শুরু করায় তিনি যেভাবে এখন কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন বলে জানিয়েছেন, তাতে তিনি কি অন্য দলে পা বাড়ানোর কথা ভাবছেন, তা নিয়েও দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। যদিও এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত মুখ খোলেননি মোহনবাবু ও তাঁর অনুগামীরা। তবে তৃণমূলের দাবি তিনি এমন কিছু করবেন না। জলপাইগুড়ি জেলা রাজনীতিতে কোনো উত্থান-পতন হতে দেখা যায় কিনা, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -