এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে এবার কড়া মনোভাব তৃণমূলের, নেওয়া হচ্ছে বড়সড় পদক্ষেপ, বাড়ছে জল্পনা

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে এবার কড়া মনোভাব তৃণমূলের, নেওয়া হচ্ছে বড়সড় পদক্ষেপ, বাড়ছে জল্পনা


2011 সালে তৃণমূল যেদিন থেকে ক্ষমতায় এসেছে, ঠিক তার কিছুদিন পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের ভেতরে নেতায়-নেতায় বনিবনা নেই, কর্মীতে কর্মীতে বনিবনা নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এক নেতা আর এক নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। দলের তরফে দেওয়া হয়েছে কড়া বার্তা। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি। প্রথমদিকে শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দেওয়ার পর নেতারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেবেন বলে শীর্ষ নেতাদের সামনে জানিয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু জেলায় ফিরেই আবার একে অপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে গত লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল হওয়ার পরেও শিক্ষা হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের। তবে লোকসভার পুনরাবৃত্তি যাতে আগামী বিধানসভায় আর না হয় এবং দলের এই গোষ্ঠী কোন্দল যাতে মারাত্মক আকার ধারণ না করে, তার জন্য অতীতের মত আরও একবার কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে।

সূত্রের খবর, এবার মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হল, দলের অনুমোদন ছাড়া কেউ কোনো নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে যদি প্রকাশ্যে মুখ খোলেন, তাহলে তাকে শোকজ, সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হবে। জানা গেছে, সম্প্রতি মালদহের রতুয়ায় তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী সাংবাদিক সম্মেলন করে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হন।

যেখানে রতুয়া 1 ব্লকের প্রাক্তন সাংগঠনিক সভাপতি ফজলুল হক বর্তমান বিধায়কের পরিবর্তে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে স্থানীয় যুব নেতাকে প্রার্থী করা হোক বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন। আর এরপরেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। কিভাবে দলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য করলেন এই তৃণমূল নেতা, তা নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন। পাল্টা সেই ফজলুল হকের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একইভাবে বৈষ্ণবনগরেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে কাউকে প্রার্থী করা হোক বলে দাবি জানানো হয়। অর্থাৎ মালদার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে এখন থেকেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে প্রকাশ্যে যেভাবে দলের নেতারা মন্তব্য করেছেন, তাতে এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে আগামী নির্বাচনে দল ভালো ফল করতে পারবে না বলেই আশঙ্কা ছিল রাজনৈতিক মহলের। আর এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে এভাবে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে দলের বিভিন্ন নেতা মন্তব্য করায় অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই সেই সমস্ত নেতাদের মুখে লাগাম লাগাতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

সূত্রের খবর, এদিন এই প্রসঙ্গে বেলাগাম মন্তব্য যাতে না করা হয়, তার জন্য সকলকে সতর্ক করে দেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। তিনি বলেন, “সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ব্লক থেকে দলের একাংশের বিভিন্ন কার্যকলাপ আমাদের নজরে এসেছে। এমন কিছু বক্তব্য রাখা হয়েছে বা আচরণ করা হয়েছে, যা আমাদের দলের রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদন করে না। রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশ অনুযায়ী সেই নেতা-নেত্রীদের একাংশকে ইতিমধ্যেই মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাদের কাছে প্রতিটি বিষয় নিয়ে পৃথক পৃথক লিখিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। সেই রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুত রাজ্য নেতৃত্বকে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”

এদিকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কে প্রার্থী হবে, তা নিয়ে বিভিন্ন নেতা বিভিন্ন মত পোষণ করলে, সেই ব্যাপারেও মুখ খুলতে দেখা গেছে মৌসাম বেনজির নুরকে। তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কে হবেন, তা ঠিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে কারো কোনো মন্তব্য করার এক্তিয়ার নেই। করলে তা দল বিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য হবে। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে শোকজ, সাসপেন্ড ও বহিষ্কারের মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।” আর মৌসম নূরের এই কথা থেকেই স্পষ্ট, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের কথা না ভেবে গোষ্ঠী কোন্দল যাতে বৃদ্ধি না পায়, তার জন্য সকলকে সতর্ক করে দিতে বাধ্য হল তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই কোন লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের কে প্রার্থী হবে, তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল‌। এমনকি দলের অনেক প্রার্থী হওয়ার আশা করলেও, পরবর্তীতে প্রার্থী হতে না পেরে তারা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে অনেক আসনে হারতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে।

আর এবার আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যখন তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে ঘাসফুল শিবির, তখন প্রার্থীর কথা ভেবে যেভাবে প্রকাশ্যে নেতারা মন্তব্য করেছেন, তাতে অস্বস্তিতে পড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই সেই অস্বস্তি যাতে বৃদ্ধি না পায়, তাই এই ব্যাপারে মন্তব্য করলে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়ে রাখল মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী নেতারা মুখে লাগাম লাগলেও, বাস্তবে কতটা তারা দলের অনুগত হয়ে চলেন, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!