এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দেবশ্রীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কি এবার শোভন -বৈশাখীর বন্ধুত্বে চির, জল্পনা বাড়ালেন বৈশাখী

দেবশ্রীর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কি এবার শোভন -বৈশাখীর বন্ধুত্বে চির, জল্পনা বাড়ালেন বৈশাখী


বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপির প্রতি ক্ষোভ সামনে আসতে শুরু করেছিল। গেরুয়া শিবিরের নাম লেখালেও মঙ্গলবারই কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়রের বান্ধবী জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, অপমান সহ্য করে তিনি রাজনীতি করবেন না। আর এবার রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠলে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হল।

বস্তুত, গত 14 আগস্ট নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সময় কাউকে না জানিয়ে রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়কেও সেই বিজেপির সদর দপ্তরে উপস্থিত হতে দেখা যায়। জানা যায়, দেবশ্রী রায়ও শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেদিন গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন। কিন্তু দেবশ্রী রায়কে দলে নিলে তিনি এবং বৈশাখী দেবী বিজেপিতে যোগদান করবেন না বলে গেরুয়া শিবিরকে জানিয়ে দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।

যার জেরে বিজেপির সদর দপ্তরে এক নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে দেবশ্রী রায়কে দলে না নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতকে মান্যতা দিয়ে তাঁকে এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে নিয়েছিল বিজেপি। তবে এবার হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নরম হতে শুরু করল। সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই মঙ্গলবারই বিজেপির তরফে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, দেবশ্রী রায়কে বিজেপিতে স্বাগত জানানোর বিষয়ে কোনরূপ আপত্তি করা চলবে না।

এমনকি দলবদলের সময় দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগদান করা নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিরোধিতা করলেও, এবার বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশে তিনি সেইভাবে বিরোধিতাও করেননি বলে জানা গেছে। এদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে বিজেপির তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে সংবর্ধনায় শুধু শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম থাকায় তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সদর দপ্তরে যেতে নারাজ ছিলেন।

পরে অবশ্য বিজেপির তরফ থেকে এই ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে একটি সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সংবর্ধিত করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বৈশাখীদেবীকে এই ব্যাপারে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করতেও দেখা যায় বিজেপির রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে। এদিন এই প্রসঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি গোঁসা করে ঘরে বসে থাকলে শোভনদার সংবর্ধনা ম্লান হয়ে যেত, তাই এসেছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে বিজেপির তরফে এই সংবর্ধনা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই, দলের অন্যান্য বিধায়ক ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি বৈঠক করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। স্বাভাবিকভাবেই যেহেতু তিনি বিধায়ক নন, তাই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাথে থাকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই বৈঠকে ঢুকতে বারণ করেছিলেন দিলীপবাবু বলে জানা যায়। আর ভেতরে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দিলীপ ঘোষ দেবশ্রী রায়ের ব্যাপারে বলেন। দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে তিনি যেন কোনো আপত্তি না করেন, তার জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বার্তাও দেওয়া হয়।

অনেকে বলছেন, দিলীপ ঘোষ শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে একান্ত বৈঠকে দেবশ্রী রায়ের প্রসঙ্গটি তুলবেন তা জেনেই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই বৈঠকে নিয়ে যাননি। কেননা দেবশ্রী রায় বিজেপিতে যোগ দিলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সেই কথা শুনতেন, তাহলে তিনি প্রকাশ্যেই আপত্তি জানাতেন। যার জেরে শোভন চট্টোপাধ্যায় হয়ত বৈশাখীদেবীর মতেই সীলমোহর দিতেন। তাই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করে সেই দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ানোর ব্যাপারটি পাকা করে নিতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব।

সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি রাজ্য বিজেপির এক সহ-সভাপতির উপস্থিতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং দেবশ্রী রায়ের একটি বৈঠক হতে চলেছে। কিন্তু দেবশ্রী রায় যদি বিজেপিতে যোগ দেন, তাহলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কি করবেন! জানা গেছে, মঙ্গলবার যেভাবে গোটা ঘটনা ঘটেছে, তাতে বৈশাখীদেবী ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন যে, তিনি নীরবে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেবেন।

এদিন দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে বৈশাখীদেবী বলেন, আমিও শুনেছি যে দেবশ্রী রায়কে দলে নেওয়ার বিষয়ে কোনো একটা বার্তা শোভনবাবুকে দেওয়া হয়েছে। তবে সবটাই শোনা-কথা। দলের তরফে আমাকে নিয়ে কেউ কিছু জানায়নি। কে কাকে দলে নেবেন, নেবেন না এটা বিজেপি নেতৃত্ব স্থির করবেন। এখানে আমার কিছু বলার নেই।” কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায় তো তার বন্ধু।

সেক্ষেত্রে তিনি দেবশ্রী রায়কে সহ্য করতে না পারলেও তার বন্ধু দলের নেতৃত্বের জন্য দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনো আপত্তি না জানানোয় কি তাদের বন্ধুত্বের মধ্যে এবার বিবাদ সৃষ্টি হবে! এদিন এই প্রসঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশলী জবাব, “চিড় যে ধরে যায়নি, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন কিভাবে!” তাহলে কি দেবশ্রী রায়কে নিয়ে এবার শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্ধুত্বেও ছেদ পড়তে চলেছে! তীব্র জল্পনা সর্বত্র।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!