এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > লবির প্রশ্নই নেই, শুভেন্দু-সুকান্ততে একজোট বিজেপি! টেনশন মুক্ত কর্মীরা!

লবির প্রশ্নই নেই, শুভেন্দু-সুকান্ততে একজোট বিজেপি! টেনশন মুক্ত কর্মীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গত দুদিন ধরে অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা এমন একটা খবর সারাদিন ধরে টিভি চ্যানেলে দেখাতে শুরু করেছিলেন, যেন বিজেপি রাজ্য থেকে উঠে গেল। খবরের মধ্যে দিয়ে বারবার একটা জিনিস তারা তুলে ধরেছিলেন যে, ক্ষমতায় আসার আগেই বিজেপি এত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ফলে তারা ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হবে না। কিন্তু সেই মিডিয়াদের কর্মকর্তারা ভুলে যাচ্ছিলেন, বিজেপি আর যাই হোক, আঞ্চলিক দল তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতাদের মত নয়।

বিজেপি একটি সর্বভারতীয় দল এবং যেহেতু বিজেপি এখন পশ্চিমবঙ্গে দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই অন্য দল থেকে আসা নেতা কর্মীদের বহর যখন বাড়ে, তখন একটু দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। কিন্তু তা সামাল দেওয়ার মত নেতা বিজেপিতে রয়েছে। এতদিন অনেকেই ভাবছিলেন যে, বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতির সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কিন্তু এদিন যে তথ্য সামনে এলো, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট যে, শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদারের জুটি আগামী দিনে ঘুম ওড়াবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

প্রসঙ্গত, এদিন পিংলায় একটি কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখানেই ক্রমাগত রাজ্যজুড়ে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে যে খবর দেখানো হচ্ছে, তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। আর সেখানেই তার মুখ থেকে উঠে আসে তিনি এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি একত্রিত হয়েই যে কাজ করছেন, সেই বিষয়টি। এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “যে গাছের ফল যত মিষ্টি, সেখানে তত ঢিল পড়ে। বিজেপি বড় হচ্ছে। তাই একটু আধটু এই ধরনের খবর আসছে। এসব নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি এবং সুকান্ত মজুমদার দুজনে একসাথে হয়ে কাজ করছি। আমরা দুজন খুব কঠিন মানুষ আছি। কেউ আটকাতে পারবে না।”

আর শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য শুনে বিজেপি কর্মীরা কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হয়েছেন। কারণ কর্মী মহলে শুভেন্দু অধিকারী দিনকে দিন ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন সকলের কাছে। তাই তার সঙ্গে বিজেপির যারা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী, তাদের যদি দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তাহলে কর্মীরা কোথায় যাবে, তা নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এদিন কর্মীরাও আশ্বস্ত হলেন যে, সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী কার্যত একসাথেই আলোচনা করেই সমস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাদেরকে নিয়ে নানা মহলে হয়ত নানা আলোচনা করছেন একাংশ। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে তারা এক রয়েছেন এবং একসাথেই যে সংগঠনের সমস্ত কার্যক্রম করছেন, তা স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

গেরুয়া শিবিরের একাংশ বলছেন, এতদিন কর্মীদের মধ্যেও এই বিষয়টা নিয়ে একটা আলোচনা তৈরি হয়েছিল। সকলের মনে একটা সন্দেহের বীজ বপন হয়েছিল যে, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কি সুকান্ত মজুমদারের দূরত্ব বাড়ছে? হয়ত তৃণমূল এসব দেখে আনন্দে উচ্ছ্বসিত হতে শুরু করেছিল। কিন্তু তাদের সেই সব আনন্দ মাটি হয়ে গেল। শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিলেন, সুকান্ত মজুমদার এবং তিনি হাতে হাত রেখে যে কাজ করছেন, তাতে আগামী দিন চরম দুঃসময় অপেক্ষা করছে শাসক দলের জন্য। দল বড় হলে হালকা বিবাদ কর্মীদের মধ্যে হতেই পারে।

তৃণমূলে তো সেই বিবাদ হয় জন্য আজকের তৃণমূলকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জরাজীর্ণ দল বলে নানা কটাক্ষ শুনতে হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নেত্রীও সেই দ্বন্দ্বকে সামাল দিতে পারছেন না। কিন্তু বিজেপি অন্য জিনিস। অন্য ধাতুতে তৈরি এই দল। তাই অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা দ্বন্দ্বের খবর করে বিজেপিকে চাপে রাখার চেষ্টা করলেও, তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন বর্তমান নেতৃত্ব। কর্মীদের একত্রিত করে তাদের একটাই লক্ষ্য, তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করা। আর সেই লক্ষ্যেই আগামী দিন একসাথে কাজ করবেন শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদার বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হিসেবে অত্যন্ত সভ্য এবং ভদ্র মানুষ। তবে তার সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়ে বারবার দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। তবে শুভেন্দু অধিকারীর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি এলাকায় সংগঠনকে দাঁড় করিয়েছেন। গোটা রাজ্যে তৃণমূল বিরোধী ঝড় তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। তবে এই দুই জনের মধ্যেই যদি সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে বিজেপির শোচনীয় পরিস্থিতি তৈরি হত পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তাতে আর বিজেপি কর্মীদের চিন্তিত হওয়ার মতো কিছু নেই।

কারণ সুকান্তবাবু এবং শুভেন্দুবাবু যদি এক থাকেন, তাহলে কোনো শক্তিই বিজেপিকে এই রাজ্য থেকে মুছে ফেলতে পারবে না। ফলে বিজেপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মুছে যাবে বলে যে মিডিয়ারা একটা হইহই রব তুলেছিলেন, তাদের এখন দুঃখের সময়। শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট যে, বঙ্গ বিজেপিতে লবির কোনো প্রশ্নই নেই। হাতে হাত ধরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে শেষ দিন পর্যন্ত যতক্ষণ না তৃণমূলকে বিদায় জানানো যায়, ততক্ষণ একসাথেই লড়বে গেরুয়া শিবির। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!