প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি সর্বভারতীয় নেত্রী! বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে তিনি লোকসভা নির্বাচনকে টার্গেট করে সমস্ত বিজেপি বিরোধী দল গুলোকে নিয়ে একত্রিত হয়ে নিজে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেই বিজেপি বিরোধী জোট গঠন হলেও, তাদের সফলতা যে আসবে না, তা জানেন সকলেই। তবে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের রাজ্যে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান, তারপরেও তার লজ্জা হয় না। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, তিনি নাকি নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সরকারকে দেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন। যাই হোক, স্বপ্ন যে কেউ দেখতেই পারেন। কিন্তু এবার বাংলা থেকেই সর্বভারতীয় স্তরে গঠিত হওয়া সেই বিজেপি বিরোধী জোটের দফারফা করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি এমন একটি মন্তব্য করলেন, যার ফলে সেই বিজেপি বিরোধী জোটের ভূমিকা মানুষের কাছে প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল।

প্রসঙ্গত, এদিন মেদিনীপুরে একটি বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “এই বিজেপি বিরোধী জোট গঠন হয়েছে তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। প্রথম উদ্দেশ্য, পরিবারবাদ, নিজের পরিবারকে ভালো রাখা, তাদের শ্রীবৃদ্ধি করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, দুর্নীতি। আর তৃতীয় উদ্দেশ্য, তোষণের রাজনীতি। এটাই এই বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান লক্ষ্য।” তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও বিজেপি বিরোধী জোট গঠন হওয়ার দিন থেকেই এই অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, তিনি একেবারে হাতেনাতে একের পর এক তথ্য তুলে ধরে সেই জোটে যে সমস্ত দল রয়েছে এবং নেতা-নেত্রী রয়েছেন, তাদের কারা কারা জেলে গিয়েছেন, সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। ফলে তার কথায় মানুষ বিশ্বাস করছে এবং এই বিজেপি বিরোধী জোটের ভূমিকা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে। তাই নিজের রাজ্যে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে এই যুক্তিতেই দশ শূন্য গোল খেয়ে হেরে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিজেপির দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশের নেত্রী হওয়ার আগে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে লড়াই করে জিতে আসুন। বিধানসভা নির্বাচনে যখন তৃণমূলের এত সমর্থন ছিল, তখন তিনি শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে গিয়েছেন। ফলে লোকসভা নির্বাচন বিজেপির পক্ষে হবে। এবার আরও বেশি সংখ্যক আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। তাই সেখানে বিরোধী জোটে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদি ক্ষমতা থাকে, তাহলে তিনি নিজের রাজ্যে অন্তত 20 টি আসন দখল করার মত জায়গায় আসুন। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই বাংলা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিপুল আসন তুলে দেবেন মোদিজীর হাতে। তাই বিরোধী জোটকে কুপোকাত করতে শুভেন্দু অধিকারীর যুক্তিতে মুখ পুড়ছে বিজেপি বিরোধী দলগুলোর বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী ধীরে ধীরে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছেন। শুধু বাংলা নয়, বাইরের যে সমস্ত রাজ্য রয়েছে, সেখানেও বাঙালি ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার জন্য বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব কাজে লাগাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর মত মুখকে। কারণ তারা খুব ভালো মত জানে যে, শুভেন্দু অধিকারী লড়াইয়ের অপর নাম। বাংলায় যেভাবে এই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তাতে অন্য কোনো বিজেপি নেতা সেই কাজ করতে পারেনি। আর এবার আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিজেপি বিরোধী জোটে রয়েছেন, সেই জোট নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া বিরোধী জোটের প্রধান তিনটি উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে তাদের দফারফা করে দিলেন তিনি। অর্থাৎ এক কথায় বাংলা থেকেই ছক্কা হাঁকিয়ে বিরোধীদের কুপোকাত করলেন শুভেন্দুবাবু। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।