এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতার দিল্লি সফর বাতিলের পেছনে অন্য গল্প, বড় তথ্য ফাঁস করলেন শুভেন্দু !

মমতার দিল্লি সফর বাতিলের পেছনে অন্য গল্প, বড় তথ্য ফাঁস করলেন শুভেন্দু !


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কথা ছিল, তিনি এক দেশ এক ভোট নিয়ে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন। কিন্তু তখন থেকেই একটা অংশের সন্দেহ হয়েছিল যে, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় বড় বৈঠকে না গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন, সেখানে এই বৈঠকে তিনি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছেন কেন! তাও আবার বৈঠকের আগের দিন সন্ধ্যাতেই তার দিল্লি পৌঁছে যাওয়ার কথা শুনে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। আর এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী দিল্লি পৌঁছে গিয়ে এই রাজ্যের অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি সহ একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং দেশের উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যায়ে এসে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তার দিল্লি সফর বাতিল করছেন। কারণ তার নাকি রাজ্য বাজেট রয়েছে। আর সেই কারণে তিনি আর দিল্লী যাচ্ছেন না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আগে থেকেই তো মুখ্যমন্ত্রী এই সফর ঠিক করে রেখেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি কেন তা বাতিল করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? গোটা বিষয়কে রাজ্য বাজেটের সঙ্গে জুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, এর পেছনে একটা বড় গল্প রয়েছে। আর সেটাই এদিন ফাঁস করে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কতটা গুরুত্বহীন হয়ে গিয়েছেন দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বড় বড় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে, তা আবার স্পষ্ট হয়ে গেল। যে কথা শুভেন্দু অধিকারী বললেন, তাতে তৃণমূলের মধ্যেও এখন চরম অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফর বাতিল হওয়া নিয়ে শুভেন্দু বাবুকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ জবাব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি জানিয়ে দেন যে, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনেকের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। দেশের বড় বড় বিশিষ্ট মানুষদের সঙ্গে তিনি দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কেউ তাকে পাত্তা দেয়নি। কেউ তাকে সময় দিয়ে সময়ের অপব্যবহার করতে চায়নি। ইন্ডি জোটে থাকা লোকেরাও যেমন পাত্তা দেয়নি, ঠিক তেমনই ভারত সরকারের লোকেরাও পাত্তা দেয়নি। সেই কারণেই বেকার পাত্তা না পেয়েই তিনি এই সফর বাতিল করেছেন। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন যে, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা বিপদে পড়েছেন, বোঝাই যাচ্ছে। তিনি আগের দিন দিল্লি যেতে চেয়েছিলেন। তার একটাই কারণ, তিনি যে দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে, তাতে তার নাম এসে যেতে পারে। হয়ত সেটা আঁচ করতে পেরেছেন। সেই কারণেই আবার কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে একটা সেটিংদের রাস্তা হয়ত বেছে নিতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাত্তা দিচ্ছে না, সেটা বুঝে গিয়েই দিল্লি সফর যে ব্যর্থ হবে, সেই কারণেই তিনি তার সফর বাতিল করেছেন। আর শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা কেন, তিনি যে ইন্ডি জোটে রয়েছেন, সেই বিরোধী দলের অনেক নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেও তিনি দেখা করার জন্য সময় চেয়েও নাকি সময় পাননি। শুভেন্দু অধিকারীর এই দাবিও যদি সত্যি হয়, তাহলে দেশের শাসক দলে থাকা বিজেপি হোক বা বিরোধী দলে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দল হোক, কেউই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর পাত্তা দিতে চাইছেন না, তা স্পষ্ট। অর্থাৎ এক কথায় রাজ্য তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্ব হারাচ্ছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিজেপির দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের দুর্নীতি গোটা দেশের মানুষ জানেন। গোটা দেশের কোনো রাজনৈতিক দলই তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে রাজি নয়। নিজেদের চুরি ঢাকার জন্য এখন সব চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু এসব করে লাভ হবে না। আইন আইনের পথে চলবে। চোর, ফ্যাসিস্ট দলের সঙ্গে কেউ আলোচনা করতে চায় না।‌ তিনি যতই বাজেটের কারণকে দেখিয়ে দিল্লি সফর বাতিল করুন না কেন, তার চালাকির পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীর কথা যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য। আর তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ এই শুভেন্দু অধিকারী মাঝেমধ্যেই দাবি করে থাকেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশেপাশে যে সমস্ত লোকেরা থাকেন, তারাই তাকে সমস্ত খবর দেন। এমনকি অতীতে বেশ কিছু গোপন তথ্য শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে ফাঁস করেছেন এবং পরবর্তীতে সেই সমস্ত তথ্য যেভাবে সত্য হিসেবে উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, রাজ্য রাজনীতিতে ফেলনা কথা বলার লোক নন এই শুভেন্দু অধিকারী। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব কিছু ঠিক করে নিয়েও শেষ মুহূর্তে এসে দিল্লি সফর বাতিল করছেন, এটা নিয়ে যখন অনেকের মধ্যেই আলোচনা চলছে, তখন আসল গল্পটা ঠিক কি, তার পর্দাফাঁস করে দিলেন এই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। অর্থাৎ দেশের বিশিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে সময় চেয়েও সময় পাননি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই শেষ পর্যন্ত নিজের মুখ বাঁচানোর জন্য নিজের দিল্লি সফর বাতিল করেছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!