এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার ফ্যাসিস্ট আচরণ, এবার টক শো হবে তো? বেকায়দায় ফেললেন শুভেন্দু!

মমতার ফ্যাসিস্ট আচরণ, এবার টক শো হবে তো? বেকায়দায় ফেললেন শুভেন্দু!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়ার রিপোর্ট- এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সব খবর তো ফলাও করে দিনভর দেখাতে থাকেন অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা। কিন্তু তারা এবার বিধানসভার ভেতরে যেভাবে সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হলো, সেই খবরটা পরিবেশন করবেন তো! সেই নিয়ে সন্ধ্যায় টক শো বসাবেন তো? কারণ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সব সময় ভালো খবর প্রচার করেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার মিলে বিধানসভায় এত বড় সিদ্ধান্ত নিল, সংবাদমাধ্যমের ওপর এত বড় আঘাত নেমে এলো, অথচ তা নিয়ে একটা আলোচনা হবে না, এ কেমন কথা! তাহলে কি নিজেদের ক্ষতি হলেও দিদিমণি করেছেন ভেবে সেটাতেও চুপ থাকবেন অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা!

ইতিমধ্যেই কিন্তু এই সমস্ত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আজ বিধানসভায় মিডিয়া সেন্টারের ঘরেও তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে, শুভেন্দু অধিকারীর আতঙ্কের জন্যেই এই নির্দেশ স্পিকারকে দিয়ে দেওয়াতে বাধ্য করেছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ অবশ্য তেমনটাই। আর এই পরিস্থিতিতে এই বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম, যারা দিনরাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বড় বড় খবর করেন, তাদের উদ্দেশ্যেই বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন সেই শুভেন্দু অধিকারী।

প্রসঙ্গত, রাজ্য বাজেট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মিডিয়া সেন্টারের ঘরে শুভেন্দু অধিকারীর সাংবাদিক বৈঠক শুরু হওয়া নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দেখতে পান যে, তিনি আর মিডিয়ার টিআরপি পাচ্ছেন না। তাই হয়ত শেষ পর্যন্ত বাজেট অধিবেশনের পরের দিনই বিধানসভায় যাতে সংবাদ মাধ্যমের ঘরে কেউ প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর সেই বিষয় নিয়ে বলতে গিয়েই শুভেন্দু অধিকারী এই সমস্ত অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের উদ্দেশ্যে বড় প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই যে, বিধানসভায় এখনও পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি।

আজকে যা হয়েছে, এটা গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে হত্যা করা হলো। তাহলে এই নিয়ে আপনাদের চ্যানেল গুলোতে টক শো হবে তো! কখন হবে আপনাদের টক শো?” অনেকে বলছেন, সত্যিই তো তাই। একদম এই সমস্ত অনুপ্রাণিত মিডিয়া, যারা একতরফা তৃণমূলের প্রচার করতে ব্যস্ত, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন পাবেন ভেবে এই সরকারের গুণগান করেন, তাদের তো অন্তত এই কন্ঠ রোধের বিষয়টা নিয়ে একটা টক শো করা উচিত। তাহলেই তো বোঝা যাবে যে, তারা নিরপেক্ষ। দিন রাত নিরপেক্ষ, নিরপেক্ষ বলে চেঁচামেচি করলে তো হবে না। নিজেদের প্রকৃত খবর মানুষের কাছে পৌঁছনোই তো সংবাদ মাধ্যমের একমাত্র কাজ। তাহলে তাদের যখন গতি রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিধানসভার মধ্যে, তখন সেই নিয়ে সংবাদ মাধ্যম যদি সোচ্চার না হয়, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, তারাও পক্ষপাত মূলক আচরণ করছেন। কয়েকজন এই কথা বলা ছাড়া সকলেই যে নীরব, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিজেপির দাবি, সঠিক কথাই বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আজকে সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব ছাড়া প্রকৃত সত্যটা ধরে তুলে ধরার মত মেরুদন্ড অনেক সংবাদ মাধ্যমেরই নেই। সেই কারণে মানুষ এই অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের খবর দেখতে আর পছন্দ করেন না। কারণ তারা এই সরকারের তোষামোদ করতে ব্যস্ত। কিন্তু যারা সত্যটাকে তুলে ধরেন, তারা নিশ্চিতভাবেই এই খবর তুলে ধরবেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর এই কথার পরেও যদি অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের বিবেকবোধ জাগ্রত না হয়, তাহলে আগামী দিন মানুষ তাদের বয়কট করবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী কিন্তু সঠিক জায়গায় এদিন প্রশ্নটা করতে পেরেছেন। এটাতে তো শুভেন্দু অধিকারীর কোনো অসুবিধা হলো না। তিনি তো নিজের ফেসবুক লাইভ করে নিজের বক্তব্য মানুষের কাছে তুলে ধরতেই পারবেন।

কিন্তু অসুবিধে তো হলো সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের।তারা ইচ্ছা করলেও এই বিধানসভার নিয়মের বাইরে বেরোতে পারবেন না। তারা মিডিয়া সেন্টারে গিয়ে বসে থাকতে পারবেন না নেতাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য। ফলে তাদের গতি যখন আটকে দেওয়া হচ্ছে, বিধানসভার ভেতরে তাদের কাজে যখন বাধা দেওয়া হচ্ছে, তখন তারা সোচ্চার হবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এই কাজ করার মত মেরুদন্ড অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের থাকবে তো? বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বিজেপির অশান্তি নিয়ে তো তারা অনেক খবর করে। তাহলে তার সঙ্গে আজকে তাদের কাজেই যখন বাধা হচ্ছে, তখন সেই নিয়ে একটা খবর তো অবশ্যই করা উচিত। কিন্তু যদি তারা এটা না করে গোটা বিষয়টিকে এড়িয়ে যান, তাহলে বুঝতে হবে যে, ভাতাজিবী সাংবাদিকদের এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার মত মেরুদন্ডটা আজকে সত্যিই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!