প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে বহুবার বিজেপির নামে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছিল। বস্তুত তারা যে বাংলার মানুষ নন, এবং বাংলার সংস্কৃতি তারা জানেন না আর তাই বাংলায় শাসন করার তোদের কোন অধিকার নেই, এই দাবীতে বারবার মুখর হতে দেখা গিয়েছিল একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীকে। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চালাতে দেখা গেছে তৃণমূলকে।

অন্যদিকে এরইমধ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। যেখানে তৃণমূলেরই একাধিক নেতা মন্ত্রীর কাছে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। যা থেকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনা যে প্রবল হয়ে উঠেছে, সেই আশঙ্কাই করতে দেখা গিয়েছিল বিশেষজ্ঞদের।

আর সেখানে বিজেপি যদি বহিরাগত হয়, তবে প্রশান্ত কিশোরও বহিরাগত সেই নিয়েও বলতে শোনা গিয়েছিল বিজেপি নেতা মন্ত্রীদের। অন্যদিকে, ইতিমধ্যে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তৃণমূলে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। প্রথমত যেখানে তাঁর নামে উত্তর থেকে দক্ষিণ নানা জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা দলের প্রতীক চিহ্ন ছাড়া পোস্টার পড়ায় তিনি দল ছাড়ছেন এমন সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে।

সেখানে তিনি নিজের দল করছেন সেই সম্ভাবনাও লক্ষ্য করেন কেউ কেউ। আর যার পর বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম থেকেও তাঁকে নিজেদের দলে যোগদান করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। যদিও এরই মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে আবারও জল্পনা তৈরি হয়েছে যে আদৌ তিনি জল ছাড়বেন কিনা। কিন্তু তারই মাঝে আবারো নৈহাটিতে পোস্টার পড়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

তবে এবারের বিষয় অবশ্য একা শুভেন্দু অধিকারী নয়। জানা গেছে পোস্টারে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের। জানা গেছে, বুধবার সকালে নৈহাটির রেল স্টেশন রোড, জর্জ রোড-সহ বহু জায়গায় একই পোস্টার লাগানো হয়েছে। যেখানে লেখা আছে ‘প্রশান্ত কিশোর বহিরাগত’।

শুধু তাই নয়, সেইসঙ্গে নিচে লেখা আছে ‘দাদার অনুগামী’। আর এখানেই এটা দেখা মাত্র স্বাভাবিকভাবেই পোস্টার ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর বিরোধীদের মতে, দাদার অনুগামী লেখা থাকায় শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরাই একাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও দলে শুভেন্দু অধিকারীর অবস্থান নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে।

সেখানে একাধিকবার দলের তরফে তাঁর সঙ্গে কথাও বলা হয়। এদিকে দাদার সমর্থনে জেলায় জেলায় পোস্টার দিয়েছেন অনুগামীরা। আর সেখানে তাঁর অনেক অনুগামী যে প্রশান্ত কিশোরের ওপর অসন্তুষ্ট সেটাই কারো অজানা নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এর মধ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনাই লক্ষ্য করেছেন বিরোধীরা।

অন্যদিকে, এপ্রসঙ্গে অবশ্য তৃণমলের নৈহাটির টাউন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, প্রশান্ত কিশোর বহুদিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। সেইসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরাও প্রশান্ত কিশোরের কাজে খুশি বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই ঘটনায় কোনওভাবে শুভেন্দু অনুগামীদের যোগ নেই।

অন্যদিকে, বিজেপিই পরিকল্পনা করে এসব করেছে বলেও অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ মানতে নারাজ নৈহাটির বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এক্ষেত্রে গেরুয়া শিবির তরফে জানানো হয়েছে যে, তারা কোনওভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। নিজেদের দোষ ঢাকতে শুধু শুধু এমন কাজ করেছেন বলেই জানিয়েছেন তারা।