প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে শিক্ষা, বিভিন্ন বিষয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, অনেক সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যপালকে “বিজেপির মুখপাত্র” বলেও আক্রমণ করা হয়।

যার ফলে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বনাম সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যেকার তরজা আশঙ্কার সৃষ্টি করে রাজনৈতিক মহলে। এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সমস্ত ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে মাঝে এই গন্ডগোল কিছুটা হলেও বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার ফের রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বিরুদ্ধে সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

সূত্রের খবর, শনিবার পরপর তিনটি টুইট করেন রাজ্যপাল। যেখানে রাজ্যের আইনশৃংখলার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য দিনকে দিন বোমা তৈরির আঁতুড়ঘরে পরিণত হচ্ছে বলে সরব হন তিনি। পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে।

আর বেশ কিছুদিন পর রাজ্যপালের এহেন মন্তব্য নতুন করে রাজ্য বনাম রাজভবনের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, বর্তমান সময়ে বিরোধীরা বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে সরব হচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান যেভাবে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন, তা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের রাতের ঘুম কেড়ে নিল বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু হঠাৎ করে কেন এই ধরনের মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল? একাংশ বলছেন, শনিবার সকালে কেরলের এরনাকুলাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার এগারোটি জায়গায় তল্লাশি চালায় এনআইএর তদন্তকারীরা। যার ফলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছয়জন এবং কেরল থেকে তিনজন আল-কায়েদা জঙ্গি গ্রেফতার হয়। আর এর পরবর্তী সময়কালে রাজ্যপালের এই ধরনের টুইট নিঃসন্দেহে রাজ্য প্রশাসনকে অস্বস্তিতে ফেলে দিল। অর্থাৎ রাজ্যপাল টুইট করে বুঝিয়ে দিলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ঠিক অবস্থায় নেই।

যা বর্তমান সরকারের দিকে আরও ব্যাপক প্রশ্ন ধেয়ে আনল বলেই দাবি বিরোধীদের। আর এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীরা রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে যে আরও বেশি করে ময়দানে নামবে এবং তৃণমূল সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যেকার সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।