প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে তৃণমূল দলের সর্বেসর্বা হবেন, তা স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া অনেকটাই সম্পন্ন করে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেছেন। একাধিক বড় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নিয়েছেন সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যখন বিভিন্ন জায়গায় হিংসার খবর সামনে আসছে, কার্যত চাপে পড়ছে রাজ্যের শাসক দল, ঠিক তখনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচির প্রশংসা করে ইঙ্গিত পূর্ণ বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নবজোয়ার কর্মসূচির কারণেই এবার নির্বাচনে এত হিংসা কমেছে এবং বিরোধীরাও প্রচুর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন প্রায় 45 জন মানুষ। যা নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমালোচনার শিকার হচ্ছে রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন। তবে এর মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন যে, সুষ্ঠভাবেই হয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়া। দুই একটি বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া কোনো গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেনি রাজ্যে। শুধু তাই নয়, তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে নবজোয়ার কর্মসূচি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গোটা রাজ্যজুড়ে হয়েছে, সেই কর্মসূচির কারণেই এবারের নির্বাচনে অশান্তি কমেছে এবং প্রচুর বিরোধী দল মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছে বলে দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

আর এখানেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইলেন যে, আগামী দিনে সমস্ত দিক সামলাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি অভিষেকবাবুর নাম না বললেও নবজোয়ার কর্মসূচির প্রশংসা করে সেই ক্ষেত্র প্রস্তুত করার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। বিরোধীদের মতে, রাজ্যজুড়ে এত মানুষ খুন হলেন, বিভিন্ন জায়গায় ছাপ্পা হলো, কিন্তু তারপরেও অশান্তি দেখতে পেলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশ্যই বরাবর তিনি তাই করে এসেছেন। আর এবার তিনি আরও সেই অশান্তি দেখতে পাবেন না। কারণ তার ভাইপোকে দলের একদম মাথায় বসিয়ে দিতে হবে, তার ভাইপোর হাতে সব ক্ষমতা দিয়ে দিতে হবে, রাজ্যভার তুলে দিতে হবে। সেই কারণে ভাইপোর রাস্তা পরিষ্কার করতে এই ধরনের কথা বলে নিজের বক্তব্যের পক্ষে জনমত নিয়ে আসার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার বিরোধী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলেই বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে তৃণমূল দলের অস্তিত্ব আর কিছু থাকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া এই দলের সম্পদ বলতে আর কেউ নেই। তবে এখন থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দল রক্ষার চেষ্টায় মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রসঙ্গ যখন রাজ্য জুড়ে উঠছে, ঠিক তখনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দু মাস ধরে করা নবজোয়ার কর্মসূচির প্রশংসা করে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে এগিয়ে দেওয়ার জন্য এত কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তার দলের কর্মীরাই সেই অভিষেকবাবুকে কতটা মানবেন, সেটাই বড় প্রশ্ন সকলের কাছে।