এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চের ‘ঠেকতুত ভাইয়েরা’ DM-কে লক্ষাধিক টাকা করোনা ত্রানে তুলে দিলেন

বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চের ‘ঠেকতুত ভাইয়েরা’ DM-কে লক্ষাধিক টাকা করোনা ত্রানে তুলে দিলেন


করোনার করাল গ্রাসে ঠকঠক করে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। বিশ্বজনীন এই মহামারী ভারত তথা বাংলার বুকেও আছড়ে পড়েছে। এই মারণ ভাইরাসকে রুখতে এখনও পর্যন্ত কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরী না হওয়ায় – সুরক্ষিত থাকার একমাত্র উপায় – গৃহবন্দী থাকা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারও কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে, তাই গোটা দেশকে লকডাউন করে দিয়েছে। তাতে করোনার বিস্তার কিছুটা এড়ানো গেলেও – বেজায় মুশকিলে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

বিশেষ করে দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষগুলির অবস্থা ক্রমশ হয়ে উঠেছে শোচনীয়। আর তাই তাঁদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা সেই দলের নেতা নেত্রীরা। কিন্তু, এই কঠিন বিপদের দিনে তা বোধহয় যথেষ্ট নয় – সামগ্রিকভাবে, সামাজিকভাবে ও মানবিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে বোধহয় আমাদের সকলকে। আর সেই ব্যাপারেই এবার পথ দেখালেন পূর্ব বর্ধমানের গর্ব – বর্ধমান লোক সংস্কৃতি মঞ্চকে ঘিরে বেড়ে ওঠা ‘ঠেকতুত ভাইয়েরা’।

সংস্কৃতি লোক মঞ্চকে ঘিরে আড্ডা দিয়ে বেড়ে ওঠা যুবকেরা আজকে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। অনেকে হয়ত কোনোরকমে চালাচ্ছেন সংসার। কিন্তু, সেসবকে সরিয়ে রেখে, ধর্ম-বর্ণ-রাজনৈতিক রঙকে ভুলে এই অঞ্চলের যুব সমাজ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আবেদন রেখেছিলেন – এই কঠিন সময়ে কিছুটা অর্থ সংগ্রহ করে তুলে দেওয়া হোক প্রশাসনের হাতে। আর সেই মত অল্প কিছুদিনের প্রচেষ্টাতেই ১ লক্ষ ১১ হাজার ১১১ টাকা সংগ্রহ করে ফেলেন তাঁরা এবং তুলে দেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক বিজয় ভারতীর হাতে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যেসব তরুণ-তরুণী মিলে এই মহৎ কার্য করলেন তাঁদের তরফে শুভাশীষ ঘোষ এক ফেসবুক পোস্টে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন – করোনার গ্রাসে দেশব্যাপী লকডাউনের আঁচ আমাদের প্রাণের শহর বর্ধমানেও খুব স্বাভাবিক ভাবেই এসে পড়েছে। স্বাভাবিক জনজীবন যেমন বিপর্যস্ত, তেমনই চা-পেয়দের ঠেকের আড্ডাটিও করোনার কারণে সম্পূর্ণ মাটি! আমরা কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নই, সরকারি খাতায় নথিভুক্ত কোন স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা নই, দেবা দা’র চায়ের ঠেকের ‘ঠেকতুত’ ভাই আমাদের বলা যায়।

তিনি আরও লিখেছেন – দেবা দা’র চায়ের ঠেকটি সংস্কৃতি লোকমঞ্চ চত্বরে, যা আমাদের এই মফস্বলি জীবনে একাধারে কফি হাউস, অফিস পাড়া, ধর্মতলা ও নন্দন। জীবিকার ঠেলা ঠেলতে ঠেলতে রোজ সন্ধ্যায় ফুরসতে বা কখনো সপ্তাহান্তে আমাদের জড়ো হওয়া দেবা দা’র চায়ের দোকানের আড্ডায়। এ শহরে দেবা দা’র মতো আরো অগণিত মানুষের জীবন ও জীবিকার ঠেলা করোনার কারণে স্তব্ধ, বিপর্যস্ত। তাদের পাশে দাঁড়াতেই হোয়াটস্যাপের গ্রূপে গ্রূপে ও ফেসবুকের টাইমলাইনে ছিলো একটি ছোট্ট আর্জি।

শুভাশীষ ঘোষের বক্তব্য অনুযায়ী – ঠেকবাজ অয়ন চ্যাটার্জি, দেবরাজ বসু, রাকেশ হাতি, শুভজিৎ রক্ষিত, অয়ন দাঁ ও আমাদের ঠেকের মস্তিষ্ক প্রসূত সেই আর্জি, ভাবনায় যে এইরকম সাড়া পাবো তা ছিলো কল্পনার অতীত।
এই ভাবনাচিন্তা বাস্তবে রূপান্তরিত হতোনা যদি না আমরা পাশে পেতাম আমাদের বন্ধু-বান্ধবী ও তাদের পরিবারকে। বিন্দু বিন্দু দিয়ে গড়ে তোলা আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার এক লক্ষ এগারো’হাজার একশ এগারো টাকা (₹111111/-) আজ তুলে দিয়ে এলাম পূর্ব বর্ধমান জেলার ডি. এম. শ্রী বিজয় ভারতী মহাশয়ের হেফাজতে।

সবশেষে শুভাশীষবাবু জানিয়েছেন – ধন্যবাদ নয়, সবাইকে জানাই এভাবেই পাশে থাকুন। আর এই পরিস্থিতিতে খুব প্রয়োজন না থাকলে ঘরে থাকুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। বর্ধমানের একদল তরুণ তুর্কী যেভাবে এই কঠিন বিপদের দিনে মানবিক হয়ে এগিয়ে এলেন, তাকে সাধুবাদ জানাতে ভুলছেন না কেউই। করোনার কোরাল গ্রাস থেকে এই বিশ্ব কবে বা কিভাবে মুক্তি পাবে জানে না কেউই। কিন্তু তার মাঝেই এইভাবে দিকে দিকে জাগরুক হোক ‘ঠেকতুত ভাইয়েরা’, নিজেদের সামর্থ মত এগিয়ে এসে আরও দৃঢ় করুক মানববন্ধনকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!