রাজ্যপালের কঠিন প্রশ্ন, বিদেশ থেকে ফিরেও শান্তি নেই মমতার? তুমুল শোরগোল রাজ্যে! রাজনীতি রাজ্য September 24, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের আগে উপাচার্য নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়েছিল রাজ্য বনাম রাজ্যপালের মধ্যে। যার পর মধ্য রাতে মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দুটো চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। পরবর্তীতে সেই চিঠির রহস্য ভেদ করার জন্য সাংবাদিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যপাল চিঠি দিয়েছেন বিদেশ যাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়ে। আর এবার 12 দিনের বিদেশ সফর শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্যে ফিরলেন, ঠিক তখনই ফের তাকে চিঠি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। জানতে চাইলেন, কেমন হলো বিদেশ সফর? এখন সরকার পক্ষ রাজ্যপালের এই প্রশ্নকে স্বাভাবিক হিসেবে নিতেই পারে। তবে যেভাবে সকলেই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করছেন যে, তিনি শুধুমাত্র বিদেশে গিয়ে কি ঘুরেছেন? লাভের লাভ কি কিছুই করেননি! সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যপালের এই প্রশ্ন ভবিষ্যতে চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে নবান্নের কাছে। প্রসঙ্গত, 12 দিনের বিদেশ সফর শেষ করে শনিবার রাতে কলকাতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করেছেন, এবারের বৈঠক অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। সাফল্যের মুখ দেখবে রাজ্য। অর্থাৎ রাজ্যবাসী আশায় বুক বাঁধছে যে, এবার হয়তো মুখ্যমন্ত্রী কাজের কাজটা করে এসেছেন বিদেশ থেকে। আর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে আসার সাথে সাথেই তাকে একটি চিঠি দিয়ে রাজ্যপাল জানতে চেয়েছেন। তার এই বিদেশ সফর কেমন হয়েছে? উত্তরে পাল্টা চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছেন, তার এই বিদেশ সফর ভালো হয়েছে। কিন্তু বিদেশ সফরে কি লাভ হয়েছে রাজ্যের! তা জানতেই হয়তো রাজ্যপাল তাকে চিঠি দিয়েছেন। তাই আগামী দিনে যদি এই বিদেশ সফর নিয়ে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে চেপে ধরেন, তাহলে তিনি তার সদুত্তর দিতে পারবেন তো? শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বোঝাতে পারবেন তো রাজ্যের মানুষকে, যে, বিদেশে গিয়ে তিনি কত শিল্প এনেছেন বাংলার জন্য! একাংশের যুক্তি, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে এই চিঠি দিতেই পারেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসন কি করছে, কতটা ভাল কাজ করছে, শিল্পের জন্য যে চেষ্টা করছে, তা ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা, তার দিকে নজর রেখেছেন তিনি। আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফর থেকে ফেরার পরেই সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে প্রশাসনিক প্রধানের কাছে জিজ্ঞাসা করেছেন। তাই এর মধ্যে তেমন কোনো জটিল বিষয় নেই। তবে জটিলতা তখনই আসবে, যখন রাজ্যপাল সরকারের কাছে শিল্প নিয়ে যে বড় বড় দাবি সরকার পক্ষ করছে, তার তথ্য জানতে চাইবেন। ফলে সেই উত্তর নবান্নের কাছে রয়েছে তো? সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে পরবর্তীতে যদি শিল্পে বিনিয়োগের তালিকা জানতে চান রাজ্যপাল, তখন আবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে আক্রমণ করে বসবেন না তো? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছে সরকার, তা কার্যত নজিরবিহীন। এখনও সরকারের পক্ষ থেকে লাগাতার আক্রমণের পালা চলছেই। কিন্তু তারপরেও রাজ্যপাল নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা নানাও অভিযোগ করেছে যে মানুষের টাকা নিয়ে বিদেশে গিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। ফলে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় ফিরতেই রাজ্যপালের এই প্রশ্ন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। রাজ্যের মানুষের কাছেও এই প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কত শিল্প নিয়ে আসলেন বাংলায়! ফলে আর যাই হোক না কেন, আগামী দিন যে এই বিষয়ে রাজ্যপালের চাপে অস্বস্তিতে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদেশ সফরের সাফল্য নিয়ে যে তাকে জবাব দিতেই হবে, তাতে কার্যত নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -