এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > সিঙ্গুরের চেহারা বদলে যেত! মমতার ইগোতেই বিপত্তি, ধুয়ে দিলেন শুভেন্দু!

সিঙ্গুরের চেহারা বদলে যেত! মমতার ইগোতেই বিপত্তি, ধুয়ে দিলেন শুভেন্দু!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এক সময় তার নেতৃত্বে করা আন্দোলনে রাজ্যের মানুষ এবং সিঙ্গুরের মানুষ ভেবেছিল যে, তাদের লাভ হবে। কিন্তু এখন তারা উপলব্ধি করতে পারছে যে, সেই সময় সিঙ্গুরে বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে টাটারা যে শিল্প স্থাপন করতে এসেছিলে,ন তা না করতে দিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। টাটা গোষ্ঠী কোনো লস করেনি, উল্টে লস করেছেন সিঙ্গুরের সেই সমস্ত কৃষকরা, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্লায় পড়ে সেই সময় শিল্প বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর অনেক বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বলেছিলেন, সেখানে নাকি কৃষিজমি হবে। কিন্তু সেই জমিতে চাষ করার মত পরিস্থিতি আজকে আর নেই। রাজ্যে এখন হচ্ছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। যে সম্মেলন থেকে লাভ বলতে কিছুই হয় না। আর এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা শিল্প বান্ধব কথা বলা হলেও, একসময় যেভাবে বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন এই রাজ্যের শিল্পকে ধ্বংস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই সময়কার কথা তুলে ধরে রাজ্যে যে শিল্পের পরিস্থিতি নেই, তা স্পষ্ট করে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিভাবে তৈরি হওয়া একটি শিল্পকে অন্য রাজ্যে বিতাড়িত করাতে বাধ্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সে কথাও তুলে ধরলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এদিন মুখ্যমন্ত্রী যখন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মজে রয়েছেন, তখন সিঙ্গুরের কথা তুলে ধরে তাকে তুলোধোনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আজকে সিঙ্গুর কত উন্নত হতে পারত! এই জায়গাকে চেনা যেত না। কিন্তু একজনের ইগোর কারণে আজকে টাটা চলে গিয়েছে। তাই মানুষ বলে, এই রাজ্যের নেত্রী বটে, কিন্তু শিল্প ভাগান গুজরাটে। আজকে সিঙ্গুরে চাষের মত পরিস্থিতি নেই। সেই জমি আর চাষযোগ্য জমি হবে না। গোটা রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।”

একাংশ বলছেন, সেই সময় বাম সরকারের হিংসার মাত্রাও চরম বেড়ে গিয়েছিল। তাই সিঙ্গুরের মানুষ ভেবেছিলেন যে, বাম সরকার বুঝি শিল্প স্থাপনের নাম করে এখানে সর্বনাশ করবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্লায় পড়ে তারা সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত এখানে একটা বড় মাপের শিল্প হয়নি। আর এখন সিঙ্গুরের মানুষরা উপলব্ধি করতে পারছে যে, সেই সময় বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পাল্লায় পড়ে তারা যে শিল্পবিরোধী আন্দোলন করেছিলেন এবং টাটাকে এই রাজ্য থেকে বিদায় জানিয়েছিলেন, তাতে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারাই। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো এখন ক্ষমতার সিংহাসনে রয়েছেন। কিন্তু যে মানুষগুলো আন্দোলন করেছে, যাদের জমি আর এখন চাষযোগ্য নেই, তাদের কি হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা কোনটাই এই অযোগ্য মুখ্যমন্ত্রীর নেই। তিনি এখন মুখ লুকিয়ে সিঙ্গুরের মানুষের কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন বলেই কটাক্ষ বিরোধীদের।

বিজেপির দাবি, শুভেন্দু অধিকারী একদম ঠিক কথাই বলেছেন। সিঙ্গুরকে সম্পূর্ণরূপে শেষ করে দিয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শিল্প গড়তে দিলে কি অসুবিধে হত? তাহলে তো কর্মসংস্থান যেমন হত, তেমন ক্ষতিপূরণ পেতেন এই সমস্ত কৃষকরা। কিন্তু তা না করে সব সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে বিরোধী নেত্রী থাকার সময় রাজ্যকে ধ্বংস করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ক্ষমতায় এসেও তিনি সেই একই কাজ করে চলেছেন। আর যাই হোক এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বিশ্বাস করা মানে তা মস্ত বড় ভুল বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, কি করে নিজের হাতে ক্ষমতা রাখা যায়, কি করে নিজে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যায়, বিরোধী নেত্রী থাকার সময় সব সময় সেই চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতা পাওয়ার জন্য মানুষের সমস্ত স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন তিনি। মানুষকে সাথে নিয়ে তাদেরকে বোকা বানিয়ে এমন একটা আন্দোলন রাজ্যের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, যাতে শিল্পের সমস্ত সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তখন রাজ্যের সরল সাদাসিধে মানুষগুলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চালাকিটা ধরতে পারেনি। কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে যে, যে সর্বনাশ রাজ্যের হয়ে গিয়েছে, তা কোনোমতেই মেটার মত জায়গায় নেই। তবে যতটুকু যা অবশিষ্ট আছে, সেটাকে রক্ষা করতে হলে গর্জে উঠতে হবে এই ক্ষমতাসীন শাসকের বিরুদ্ধে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!