এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > সৌরভকে মুখ করে শিল্পের বার্তা! মমতার ঢংয়ের শেষ নেই, বড় প্রশ্নে খোঁচা শুভেন্দুর!

সৌরভকে মুখ করে শিল্পের বার্তা! মমতার ঢংয়ের শেষ নেই, বড় প্রশ্নে খোঁচা শুভেন্দুর!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- প্রায় 12 বছর হয়ে গেল, রাজ্যে তৃণমূলের সরকার রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো জেলায়, কোনো জায়গায় বড় মাপের কোনো শিল্প স্থাপন করতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। প্রত্যেক বছর ঘটা করে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হচ্ছে। এবারও দু’দিনব্যাপী সেই সম্মেলন শুরু হয়েছে। আর সেখানে বাংলার মহারাজা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। শিল্পের বার্তা দিয়েছেন। তাকে আবার বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।তবে এই সমস্ত কাণ্ডকলাপ যখন হচ্ছে, তখন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শিল্পপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হয়ে ওঠা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হঠাৎ করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এত শিল্পের কেন বার্তা দিচ্ছেন! তিনি কি শিল্পপতি হয়ে উঠলেন! এই প্রশ্ন সকলের মনের মধ্যেই ছিল। আর তাতেই যেন ঘি ঢেলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

প্রসঙ্গত, এদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কবে শিল্পপতি হলেন? তিনি অনেকগুলো ফ্ল্যাট করেছেন শুনেছি। অনেকে টাকা দিয়েও আবার সেই ফ্ল্যাট পাননি, এটাও শুনেছি। তবে ক্রিকেটার হিসেবে তাকে নমস্কার। কিন্তু তিনি তো শিল্পপতি নন। কোনো শিল্প করেননি।” এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দুবাবুর এই বক্তব্যের পর বলা হতে পারে যে, বাংলার মহারাজাকে, বাংলার দাদাকে বিজেপি আক্রমণ করছে। কিন্তু না, এটা আক্রমণের বিষয় নয়। এটা বাংলার কোটি কোটি বেকার যুবক-যুবতীদের বিষয়। যারা কর্মসংস্থানের দিকে তাকিয়ে আছেন, তাদের ভবিষ্যতের বিষয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তো তেমন বড় মাপের কোনো শিল্পপতি নন। তিনি তো ক্রিকেটার, এটা তো অত্যন্ত ঠিক কথা। ফলে তিনি এই সমস্ত শিল্পবান্ধব কথা বলে কি করবেন? এতদিন তো অনেক প্রতিশ্রুতি রাজ্যের মানুষ শুনেছে। তারা তো এবার কাজ চায়। তাই এই সমস্ত মন গলানো কথা বলে সময় নষ্ট এবং মিথ্যে আশা তৈরি হওয়া ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না বলেই দাবি একাংশের।

বিজেপির দাবি, বর্তমানে এই সৌরভবাবুর সঙ্গে দিদিমনির গদগদ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তবে এই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে যখন অমিত শাহ গিয়েছিলেন, তখন তাকে যা ইচ্ছে তাই বলে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের। তখন যেন দু চোখের বিষ হয়ে গিয়েছিলেন বাংলার মহারাজা। তবে বিজেপি অবশ্য তাকে ক্রিকেটার হিসেবে সব সময় সম্মান করে। তিনি দেশকে গর্বিত করেছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে অন্তত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখ থেকে কোনো কথা কেউ শুনতে চায় না। কারণ আর যাই হোক, শিল্প করতে গেলে একটা অভিজ্ঞতা লাগে। সেটা সৌরভবাবুর অন্তত নেই। তাই তাকে মঞ্চে দাঁড় করিয়ে তার মুখ থেকে শিল্প সম্ভাবনার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে শোনালেও তাতে চিরে ভিজবে না। আগে দুই চারটি শিল্প স্থাপন করুন। তারপর ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলীকে শিল্পপতি সৌরভ গাঙ্গুলী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ভাববে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন সমাজের বিশিষ্ট মানুষদের এই শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে নিয়ে এসে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। চুরিতে তো তার সরকার ফেঁসে গিয়েছে। তার সরকারের ভাবমূর্তি মানুষের কাছে যথেষ্ট প্রশ্নের মুখে। সামনে যে লোকসভা ভোট আসছে, সেখানে এই তৃণমূল রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়বে বলেই দাবি বিরোধীদের। তাই এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে শেষ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মত ফ্রেশ মুখদের সামনে নিয়ে এসে তার সরকারের সঙ্গে সবাই রয়েছে, এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তিনি কতটা শিল্প-দরদী। কিন্তু ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার মানুষ শুধু নয়, গোটা দেশের মানুষ সম্মান করে, সমর্থন করে। তাই তিনি যখন এই সমস্ত মঞ্চে থাকছেন, যখন চুরি দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দেওয়া মানুষগুলোর পক্ষে কথা বলছেন, তখন সেই বাংলার দাদাকে নিয়েও হতাশ হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র প্রেমী সাধারণ মানুষেরা। অন্তত তার মুখ থেকে মাননীয়ার প্রশংসা তাদের ভাবাবেগে যথেষ্ট আঘাত দিচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!