প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা আবহের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠক সেরে আসার পরেই এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যালোচনা বৈঠক করেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। যেখানে উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে একাধিক নির্দেশ দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। জানা যায়, এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের এই পর্যালোচনা বৈঠক থেকে একগুচ্ছ ঘোষণা করেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান।

যেখানে ঝাড়গ্রাম এলাকায় হাতির আক্রমণে কেউ যদি মারা যান, তাহলে তাদের পরিবারের উদ্দেশ্যে স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। শুধু তাই নয়, মাওবাদীদের হাতে যারা মারা গিয়েছেন এবং নিখোঁজ হয়েছেন, এছাড়াও 10 বছরের মধ্যে যারা ফেরত আসেননি, তাদের স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি এবং আর্থিক সাহায্য করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বভাবতই বাংলার প্রশাসনিক প্রধানের এহেন ঘোষণায় উজ্জীবিত হয়েছেন সকলে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে যখন হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে, ঠিক তখনই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে এরকম চমকপ্রদক ঘোষণা শুনতে পাওয়ায় তা আশার আলো তৈরি করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে বেশ কয়েক হাজার কনস্টেবল পদে প্রমোশন হচ্ছে। এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বেশ কিছু মন্দিরের উন্নয়ন এবং এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্য আর্থিক বরাদ্দের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি সবথেকে বড় সমস্যা বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান না হওয়া। তাই রাজ্যে আরও বেশি করে চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা করতেও দেখা যায় বঙ্গের প্রশাসনিক প্রধানকে। একাংশ বলছেন, সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন।

তার আগে বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে উন্নয়নের মন্ত্র দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা বিগত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি অনেকটাই ভালো ফল করেছে। আগামী দিনে ক্ষমতা দখল করতে এখন থেকেই তারা ব্লু প্রিন্ট সাজাতে শুরু করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে উন্নয়নের মধ্যে দিয়েই যে বাংলার মানুষের মন জয় করা সম্ভব হবে, তা বুঝতে পেরে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই উত্তরবঙ্গের পর পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সফরে গিয়ে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ঘোষণা করতে দেখা গেল তাকে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুরোহিত ভাতা থেকে শুরু করে মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরত আনা, বিভিন্ন ব্যাপারে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকার মানুষের মন জয়ের চেষ্টা করলেন। বিগত লোকসভা নির্বাচনে এই মেদিনীপুর এলাকায় তৃণমূলের ফলাফল খুব একটা ভালো হয়নি। যেখানে ব্যাপকভাবে সাফল্য পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

তাই আগামীদিনে বিজেপি যাতে সাফল্য না পায়, তার জন্য নানা প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে এলাকার মানুষের পাশে মা মাটি মানুষের সরকার যে সব সময় রয়েছে, তার বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যালোচনা বৈঠকে একগুচ্ছ দিক উঠে এল।এখন উন্নয়নের বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষের মন জয় করতে কতটা সক্ষম হন, তা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ভোটবাক্স খোলার পরেই পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।