এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিজেপি ছেড়ে হেভিওয়েট তৃণমূলে ফিরছেন খবর চাউর হতেই ধুমধুমার তৃণমূলের অন্দর, জোর জল্পনা!

বিজেপি ছেড়ে হেভিওয়েট তৃণমূলে ফিরছেন খবর চাউর হতেই ধুমধুমার তৃণমূলের অন্দর, জোর জল্পনা!


গত লোকসভা নির্বাচনের পর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব দেওয়া হয় অর্পিতা ঘোষের উপর। আর বিপ্লব মিত্র সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়ার পরেই তিনি সদলবলে যোগদান ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদানের পর থেকেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল, জেলায় বিপ্লব মিত্র ম্যাজিক আর নেই। কিন্তু এখনও সেই বিপ্লব মিত্র খবরের শিরোনামে এবং তাকে কেন্দ্র করেই যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে, তা ফের প্রমাণিত হয়ে গেল।

সূত্রের খবর, এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুমিতা রায়ের ছেলে ফেসবুকে বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন বলে একটি পোস্ট করেন। আর এতেই তীব্র বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ছেলে কেন এই ধরনের পোস্ট করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা। জানা গেছে, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুমিতা রায়ের বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

আর এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শুভাশিস পাল এবং তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। কেন দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বাড়িতে আক্রমণ করল তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা? একাংশ বলেছেন, বিপ্লব মিত্র দলে থাকার সময়ে রীতিমত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন এই শুভাশিস পাল।

তবে বিপ্লব মিত্র দল থেকে চলে যাওয়ার পরেই অর্পিতা ঘোষ শুভাশিসবাবুকে জেলার কার্যকরী সভাপতির পদ দিয়ে তার গুরুত্ব অনেকটাই বাড়িয়ে দেন। তবে তার গড়েই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ট হওয়ায় তার সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না শুভাশিস পালের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু এবার সেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুমিতা রায়ের ছেলে বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে যোগদানের ব্যাপারে একটি খবর ফেসবুকে পোস্ট করার সাথে সাথেই শুভাশিসবাবুর অনুগামীরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করে পাল্টা বদলা নিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে তৃণমূল তৃণমূলে তো গন্ডগোলই জিইয়ে থাকবে!

এক্ষেত্রে বিপ্লব মিত্রকে অপ্রাসঙ্গিক করার ব্যাপারে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব স্লোগান কতটা বাস্তবায়িত হবে; কেননা বিপ্লব মিত্র না থেকেও যেভাবে তাকে নিয়ে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাতে আখেরে লাভ হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টিরই বলে মত একাংশের। ইতিমধ্যেই এই গোটা ঘটনায় ফেসবুক লাইক করে হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুমিতা রায় শুভাশিস পালের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

এদিন তিনি বলেন, “আমার বাড়িতে শুক্রবার সন্ধ্যায় কিছু ছেলে হঠাৎ এসে হামলা চালায়। আমার মেয়ে ও মাকে মারধর করেছে। আমার সোনার গয়না ও মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে‌। আমি জানতে পেরেছি সমস্ত ঘটনা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শুভাশিস পাল করিয়েছে। এমন ঘটনায় আমি ভীত হয়ে ফেসবুক লাইভ করে মানুষের কাছে সাহায্য চাইছি। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে ঘটনার কথা জানিয়ে হরিরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমার ছেলে ভুল করে একটি পোস্ট ফেসবুকে করেছিল। আমার ছেলে তো রাজনীতি করছে না। আমাকে দল ডেকে সেই বিষয়ে বলতে পারত। বাচ্চা ছেলে, ভুল করে ফেলেছে। তার জন্য এমন হামলা করবে ওরা?”

যদিও বা গোটা ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শুভাশিস পাল। তিনি বলেন, “আমি ঘটনা শুনেছি। আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। আমি রাতে বালুরঘাট থেকে বাড়ি ফিরেছি। সভাপতির সঙ্গে আমার শত্রুতাও নেই, মিত্রতাও নেই। বাজার গরম করার জন্য এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উনি পঞ্চায়েত সমিতি চালাচ্ছেন। তিনি ও তার ছেলে বিপ্লব মিত্র জিন্দাবাদ বলেছেন ফেসবুকে। বিজেপির হাত শক্ত করতে কাজ করছেন।

পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের সঙ্গে সভাপতির বিবাদ চলছে।” কিন্তু এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে তো আখেরে ক্ষতি হবে তৃণমূল কংগ্রেসের! খোদ দলের পঞ্চায়েত সমিতি যেভাবে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, তাতে জেলা নেতৃত্ব কি কোনো পদক্ষেপ নেবে না?

এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যে বা যারা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বাড়িতে ঢুকে হামলা করেছে, তাদের অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। দলের কর্মী হলেও তাদের রেয়াত করা হবে না। আমাকে হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন তাদের কাজ করবে। আইন আইনের পথে চলবে। তবে সেসময় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফেসবুক লাইভ করে ঠিক করেননি‌। আমি এই ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নেব।” তবে জেলা নেতৃত্ব যে কথাই বলুন না কেন, যে ঘটনা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুকে ঘটে গেল, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!