এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > নজরে জঙ্গলমহল ফিরে পাওয়া বলেই কি ছত্রধরের পরিবারের জন্য ঢেলে সরকারি “উপহার”? সরব বিরোধীরা

নজরে জঙ্গলমহল ফিরে পাওয়া বলেই কি ছত্রধরের পরিবারের জন্য ঢেলে সরকারি “উপহার”? সরব বিরোধীরা


বিগত বামফ্রন্টের আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জঙ্গলমহলে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে অনস্বীকার্য ভূমিকা ছিল লালগড় আন্দোলনের প্রধান ছত্রধর মাহাতোর। তবে বাম আমলের শেষের দিকে তিনি শ্রীঘরে চলে যাওয়ায় তৃণমূল সরকারের শুরুটা দেখা সম্ভব হয়নি জনসাধারণ কমিটির এই প্রাক্তন নেতার। দীর্ঘদিন শ্রীঘরে কাটাতে হয়েছে তাকে। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, যে ছত্রধর মাহাতো তৃণমূলের সুদিনের জন্য লড়াই করেছেন, তাকে জেল থেকে ছাড়ানোর জন্য কেন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না তৃণমূল সরকার?

আর এরই মাঝে সম্প্রতি বেশ কিছুদিন আগে জেল থেকে মুক্ত হয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন সেই ছত্রধর মাহাতো। আর এর পরেই তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে নানা মহলে শুরু হয়েছিল জল্পনা। এমনকি ছত্রধর মাহাতোর কাছে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলেও জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন তিনি। এদিকে গত লোকসভা নির্বাচনের জঙ্গলমহলে তৃণমূল কংগ্রেসের ফলাফল খারাপ হওয়ার পর সেই মাটিতে ঘাসফুল ফোটানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে রাজ্যের শাসক দল।

সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে ছত্রধর মাহাতোকে দিয়ে জঙ্গলমহলে নিজেদের মাঠে শক্ত করতে এবার কি তার পরিবারকে সরকারি উপহার দেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার! এখন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। সূত্রের খবর, রাজ্য নারী শিশু কল্যাণ এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের যুগ্মসচিবের 6 মে স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত মঙ্গলবার ছত্রধর মাহাতোর বাড়ি এসে পৌঁছেছে। যেখানে দেখা গেছে, ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো পশ্চিমবঙ্গ সমাজকল্যাণ পরিষদের সরকার মনোনীত সদস্য হয়েছেন।

আর ব্লক প্রতিনিধির তরফে তাঁর বাড়িতে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার সাথে সাথেই নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের তরফে দাবি করা হচ্ছে, আসলে ছত্রধর মাহাতোকে নিয়ে এখন জঙ্গলমহলে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্যই তার স্ত্রীকে এই পদ দিয়ে বাগে আনতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। কেননা এর আগে তৃণমূল জমানাতেও ছত্রধর মাহাতো জেল থেকে বের হতে পারেননি। অথক্যঃ লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলে শাসকদলের ভরাডুবির পর একের পর এক ‘উপহার’ দেওয়া হচ্ছে তাঁর পরিবারকে!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রথমেই, হঠাৎ করে তাঁর জেলমুক্ত ঘটে তৃণমূল জামানের ৯ বছরের মাথায় এসে। এরপর চাকরি জুট যায় তাঁর দুই পুত্রের! আর এবার সরকারি পদ মিলে গেল তাঁর স্ত্রীর ভাগ্যেও! ফলে, এই নিয়ে তীব্রভাবে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। যদিও বা এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সমাজ কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারপার্সন সুরঞ্জনা চক্রবর্তী বলেন, “গত জানুয়ারিতে এক সদস্যের মৃত্যুর কারণে একটি পদ শূন্য হয়। ওই পদে নিয়তি দেবীকে কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ পর্ষদের অনুমোদন ক্রমে মনোনীত করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “জেলাস্তরে সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্তরা পর্ষদে আসায় নারী, শিশু কল্যাণ ও সমাজকল্যাণের কাজকে আরও ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।” তবে সুরঞ্জনাদেবী এই ব্যাপারে যে কথাই বলুন না কেন, বিরোধীদের তরফে কটাক্ষ কিন্তু কমছে না কিছুতেই। এদিন এই প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি সুকুমার সথপতী বলেন, “জঙ্গলমহলে তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যেতেই ছত্রধরকে রাজনৈতিক স্বার্থে মাঠে নামানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এর আগে তার দুই ছেলে চাকরি পেয়েছেন। এবার তার স্ত্রীর সরকারি পদপ্রাপ্তী তারই ইঙ্গিত।”

যদিও বা বিরোধীদের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বীরবাহা সোরেন। এদিন তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট দপ্তর নিয়তিদেবীকে যোগ্যতার ভিত্তিতে সদস্য মনোনীত করেছে। বিরোধীরা সবেতেই রাজনৈতিক অভিসন্ধি খোঁজে।” তবে গোটা বিষয় নিয়ে যেভাবে শাসক-বিরোধী তরজা সৃষ্টি হল, সরকারের পক্ষ থেকে যে পদ পেলেন, তাতে তারা কতটা খুশি? এদিন এই প্রসঙ্গে ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো বলেন, “লকডাউনের মধ্যে এমন পদপ্রাপ্তী আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। এবার সরকারিভাবে মানুষের কাজ করতে পারব, এটা ভেবে ভালো লাগছে।”

এদিকে এই ব্যাপারে ছত্রধর মাহাতো বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে নিয়তিকে এমন সুযোগ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। লকডাউন কাটলে কলকাতায় পর্ষদের সদর কার্যালয়ে গিয়ে বিশদে নিয়তি জেনে আসবে।” আর এখানেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছত্রধর মাহাতোর স্ত্রী নিয়তি মাহাতোকে এই সরকারি পদ দিয়ে রাজ্য সরকার বা রাজ্যের শাসকদল পরোক্ষে বার্তা দিতে চাইছে। তাহলে কি বিরোধীদের পক্ষ থেকে যে কথা বলা হচ্ছে, তা সত্যি! সরকার কি তবে ছত্রধর মাহাতোকে ব্যাবহার করতে তার স্ত্রীকে সরকারি পদ দিল! এখন এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!