এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, অস্বস্তিতে শাসকদল!

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, অস্বস্তিতে শাসকদল!

 

সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতায় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের আয়োজিত মিছিলকে কেন্দ্র করে আবারও প্রকাশ্যে এল তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থকের হতাহত হওয়ার খবর রয়েছে। জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ভাঙ্গড়ের কুলবেরিয়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও, কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে খবর।

এলাকার স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের কাছ থেকে জানতে পারা যায়, দুই নম্বর ভাঙ্গড় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার কাটাতলা থেকে বামনঘাটা বাজার এলাকায় বাসন্তী হাইওয়ের উপরে এই মিছিলটি আয়োজন করা হয়েছিল।

উক্ত মিছিলে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শওকত মোল্লা। যথারীতি সেই মিছিলে যোগদান করার জন্য ভাঙ্গড় এলাকার কুলবেড়িয়া গ্রাম থেকে কর্মী-সমর্থক আসতে শুরু করে। কিছু কর্মী-সমর্থক এসে উপস্থিত হয়ে পড়ে। কিন্তু এলাকায় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বের সঙ্গে বরাবরই গোষ্ঠী কোন্দল ছিল সেই গ্রামের স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাবির সেখের। আর সেই কারণেই ওই মিছিলে যেন কর্মীসমর্থকরা যোগ না দেয়, তার জন্য তিনি রীতিমতো হুমকি প্রদান করে এলাকায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, স্থানীয় এই তৃণমূল নেতা সাবির শেখ এক সময় এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। তবে সাবির সাহেবের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হলেও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ওই মিছিলে অনেক কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত হতে শুরু করে বলে জানা যায়। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মিছিলে যোগদান করার অপরাধে সাবির সেখের লোকজন মিছিল থেকে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের উপরে হামলা চালানো হয়। শুধু তাই নয়, তৃণমূল যুব কংগ্রেস কর্মী শহিদুল ইসলামের মাথা পর্যন্ত ফাটিয়ে দেওয়া হয়।

এখানেই শেষ নয়, এলাকা সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল যুব কংগ্রেস কর্মীদের তরফ থেকে আবার সাবির শেখের অনুগামীদের উপরে আক্রমণ চালানো হয়। দুই পক্ষের এই হাতাহাতিতে জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আহতদেরকে জিরানগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় ভাঙ্গড় 2 নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি কাশেফুল করুব খান বলেন, “দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বে নির্দেশে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মিছিলের আয়োজন করা হয়। ওই মিছিলে যাওয়া নিয়ে তৃণমূলের কিছু লোকজন আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় এক যুব তৃণমূল কংগ্রেস তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর মাথা ফেটে গেছে। আমাদের বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”

আবার এই ব্যাপারে অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাবির সেখের তরফ থেকে তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ওরাই মিছিল করে ফেরার পথে আমাদের কয়েকজনের উপরে বাঁশ লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে। আমাদের কয়েকজন জখম হয়েছেন। উল্টে ওরাই মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের আশানুরূপ ফল না পাওয়ার পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে বারবার গোষ্ঠী কোন্দল থামানোর কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মত প্রতিটি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জেলায় যেন গোষ্ঠী কোন্দল না হয়, সেদিকে নজর রেখে চলেছেন।

কারণ রাজনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী স্পষ্ট, যদি তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান না করতে পারে, তাহলে আগামী দিনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে তৃণমূলের এই দুর্বলতা বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে। কিন্তু এরকম সময়ে ভাঙ্গড় এলাকায় আয়োজিত সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী মিছিলকে কেন্দ্র করে, তৃণমূল কংগ্রেসের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে তৃণমূলের দলীয় শৃঙ্খলাকে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!