এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের সভা থেকে শুভেন্দুকে বড়সড় বার্তা তৃণমূল নেতা নেত্রীদের, জেনে নিন বিস্তারিত!

তৃণমূলের সভা থেকে শুভেন্দুকে বড়সড় বার্তা তৃণমূল নেতা নেত্রীদের, জেনে নিন বিস্তারিত!

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নন্দীগ্রাম তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একচ্ছত্র অধিপতি শুভেন্দু অধিকারী। বিগত বাম আমলে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্ব দিলেও, মাটি কামড়ে পড়ে থেকে মানুষকে সংগঠিত করেছিলেন শুভেন্দুবাবু। শাসক থেকে বিরোধী সকলেই একথা স্বীকার করে নেন। তার পরবর্তীতে যতদিন গিয়েছে, ততই শুভেন্দু অধিকারী প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করেছে। তৃণমূলে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তিনি। তবে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এখন জল্পনার শেষ নেই। প্রতিবছর তৃণমূলের প্রতীককে সামনে রেখে নন্দীগ্রামের সূর্যোদয়ের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হলেও, এবার সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল না।

যেখানে অরাজনৈতিক ব্যানারে সেই কর্মসূচিতে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ডাকে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দুবাবু। আর তার বক্তব্যে তৃণমূল নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে বারবার কটাক্ষ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই প্রথম নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী অরাজনৈতিক ব্যানারে জনসভা করছেন, ঠিক তখনই পৃথকভাবে হাজরাকাটায় সভা করতে দেখা গেল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। যেখানে উপস্থিত থেকে থেকে দোলা সেন শুরু করে ফিরহাদ হাকিমের মত হেভিওয়েট মন্ত্রীরা নাম না করে বার্তা দিলেন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে। যার ফলে সেই নন্দীগ্রামে তৃণমূল এবং শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে ফাটল আরও স্পষ্ট হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, এদিন হাজরাকাটায় এই কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন বলেন, “প্রতিবার ভূমি উচ্ছেদ কমিটির ব্যানারে নন্দীগ্রাম দিবস পালন করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে আজ পর্যন্ত কোনোদিনই নন্দীগ্রাম দিবস পালন করা হয়নি। কিন্তু এবার হল। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। শুভেন্দুর কথাও অস্বীকার করা যাবে না। ভূমি উচ্ছেদ কমিটির মধ্যে এই বিভাজনের রাজনীতি আমরা চাই না। আমরা চাই ঐক্যের রাজনীতি।”

অর্থাৎ নাম না করলেও শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে দোলা সেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাকে কোনোমতেই অস্বীকার করা যাবে না। এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে দূরত্ব তৈরি করে পৃথক সভায় উপস্থিত হচ্ছেন এবং তা নিয়ে যেভাবে বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে, তা যে তারা কোনোভাবেই চাইছেন না, তা নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরে শুভেন্দুবাবুর মান ভাঙানোর চেষ্টা করলেন দোলা সেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে তৃণমূলের এই সভার অনেক আগেই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে কার্যত নাম না করে তৃণমূলের একাংশের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তিনি বলেন, “13 বছর পর নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়েছে।” অর্থাৎ এই কথা তিনি যে তৃণমূলের একদম শীর্ষস্তরের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। আর তারপরই এদিনের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যেভাবে জল্পনা তৈরি হচ্ছে এবং যেভাবে নন্দীগ্রাম দিবসে পৃথক দুটি সভা হল, তাতে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন দোলা সেন বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে দোলা সেনের পাশাপাশি এদিন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানের কথা ব্যাখ্যা করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অস্বীকার করা যাবে না। যারা বিজেপির হাত শক্ত করতে চাইছেন, তারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুর্বল করতে চাইছেন। তা করে আমরা আমাতেই থেমে যাব। আর মানুষের ক্ষতি করব। যারা বিজেপির হাত শক্ত করছেন, তারা ভুল করছেন। তাদের বাংলার মাটিতে কোনো স্থান নেই। মমতার আন্দোলন কখনও ভোলার নয়। যেদিন মমতার আন্দোলন ভুলে যাব, সেদিন আর আমাদের মন্ত্রীত্বে থাকার অধিকার থাকবে না। কেননা আমরাও সিঁড়ি দিয়ে উঠেছি। সেই সিঁড়ি তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

এদিকে নন্দীগ্রামের আন্দোলন তৃণমূলের অধিকার। কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিরহাদ হাকিম এই ধরনের মন্তব্য করে প্রকারান্তরে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা দিতে চাইলেন। কেননা কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারীর নানা আচার আচরণ নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হওয়ার সময় তাকে নাম না করে কটাক্ষ করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। আর তারপরেই পাল্টা মুখ খুলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, তার রাজনৈতিক উত্থানের পেছনে প্যারাসুট বা লিফটের অবদান নেই। তিনি সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উপরে উঠেছেন। আর এদিন নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তারাও সিঁড়ি ভেঙে উঠেছেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অন্যায় হলে যে তা বরদাস্ত করা হবে না, তা বোঝানোর চেষ্টা করলেন ফিরহাদ হাকিম।

অর্থাৎ তিনি এই কথা বলে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, শুভেন্দুবাবু দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে যেভাবে পৃথক সভায় যোগ দিয়ে নিজের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাতে লাভের লাভ কিছুই হবে না। স্বাভাবিকভাবেই নন্দীগ্রামকে নিয়ে এবং শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এদিন তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ার পরই যে তৃণমূল নেতৃত্ব ময়দানে নেমে এই ধরনের সভার মধ্যে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল, সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত বিশেষজ্ঞদের কাছে। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!