‘শক্তি প্রদর্শনে’ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বড় জমায়েতে যোগদান তৃণমূলের! ক্ষোভ বাড়ছে আমজনতার! তৃণমূল পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া বিজেপি রাজনীতি রাজ্য August 8, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা ভাইরাসের কারণে সেভাবে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বাংলায়। প্রতিমুহূর্তে বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের দিকে নানা অভিযোগ তুললেও, সেভাবে ময়দানে নামতে পারছেন না তারা। কেননা এই সময় যদি জনসমাগম করে ময়দানে নামা হয়, তাহলে জনসাধারনের মনে সেই রাজনৈতিক দল সম্পর্কে প্রশ্ন উঠতে পারে। তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকেই বিপদসংকুল অবস্থায় সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এবার তার দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই উঠল স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দলবদলের অনুষ্ঠান করার অভিযোগ। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরের পৌরসভার কমিউনিটি হলে একটি দল বদলের অনুষ্ঠান হয়। যেখানে বিজেপি থেকে প্রায় 300 পরিবার যোগ দেয় তৃণমূল কংগ্রেসে খবর। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে সকলকে সামাজিক দূরত্ব পালন করার কথা বলা হচ্ছে, তখন কেন তৃণমূল এত জনসমাগম করে এই দলবদল অনুষ্ঠান করল, তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। অনেকে বলছেন, তাহলে কি তৃণমূলের কাছে এখন নিজেদের পাল্লা ভারী করাই সবথেকে বড় টার্গেট? মানুষের জীবন সুরক্ষিত রাখা কি তাদের কাছে মূল বিষয় নয়? আর তাই তারা নিজেদের পাল্লা ভারী করতে এখন বিরোধী দল নিয়ে জনসমাগম করে সামাজিক দূরত্বকে পালন না করে এই ধরনের কাজ করতে শুরু করেছে, তখন এই সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সম্পাদক বানেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, “রঘুনাথপুরে পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় যেভাবে স্বাস্থ্যবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৃণমূল যেভাবে কর্মসূচি করল, তাতে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলেই আমাদের আশঙ্কা।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যবিধিকে ভেঙে ফেলার অভিযোগ তোলা হয়েছে। জানা গেছে, এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে পুরুলিয়া রঘুনাথপুর থানার মৌতোড় গ্রামের কালী মন্দিরে পুজো দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী-সহ বিজেপির একাধিক নেতা-কর্মী। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে যখন এই অভিযোগ তুলছে, তখন তারা সেই লকডাউন ভেঙে এইভাবে জমায়েত করে গোটা পরিস্থিতি কেন তারা পরিস্থিতি বিপদসংকুল করে তুলল! তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলা শুরু করেছে ঘাসফুল শিবির। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ যখন সংকটে, তখন কেন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে বেশি সচেষ্ট রয়েছেন? কেন তারা মানুষের দিকে তাকিয়ে সামাজিক দূরত্ব পালন করছেন না? এদিনই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সম্পাদক বানেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল নিজেদের দলের লোকের হাতে পতাকা ধরিয়ে একই কুমিরছানা বারবার দেখানোর চেষ্টা করছে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে নেতারা চাকরি বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাই মানুষের জীবন বিপন্ন করছেন।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূল সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, “উপস্থিত নেতাকর্মীদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বসতে বলা হয়েছিল। দেখেছি, সবাই সে কথা মেনে চলেছেন।” তবে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, রাজনৈতিক দলগুলো এখন মানুষের জীবনের অপেক্ষা নিজেদের প্রভাব বাড়াতে যে সব থেকে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন, তা কার্যত পরিষ্কার রাজনৈতিক মহলের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন নিজেদের দলের নম্বর বাড়ানোর জন্য যে আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে, তাতে হতাশ সাধারণ মানুষ। সকলেই বলেছেন, আসলে ভোট বড় বালাই। তাই মানুষের জীবন সুরক্ষিত রাখার দিকটা না দেখে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত রাখার জন্যই মানুষের জীবনকে আরও সংকটময় করে তুলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্তু এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে গণতন্ত্রের প্রতি এবং সেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা কতটা মজবুত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। আপনার মতামত জানান -