প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2021 এ বিজেপির ব্যাপক টার্গেট থাকা সত্ত্বেও কার্যত গেরুয়া ঝড়কে মিথ্যে করে দিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস‌। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা যে অটুট রয়েছে, তা কার্যত প্রমাণিত। আর তৃতীয়বার বাংলার ক্ষমতা দখল করার পরেই এবার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দলকে বিস্তারলাভ করাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই দলের সংগঠন ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যুব সমাজের আইকন বলে পরিচিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় স্তরে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য নেতাদের দায়িত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন তৃণমূল নেত্রী।

আর এই পরিস্থিতিতে কার্যত পরিষ্কার, আগামী 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির চাপ বাড়াতে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিরোধী মহাজোটের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ 2019 সালে যে বিরোধী মহাজোট কার্যত ফিকে হয়ে গিয়েছিল, 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে সেই মহাজোটকে সাফল্য প্রদান করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর সেই মত করেই এবার জাতীয় স্তরে দলের বিস্তার ঘটাতে আরও বড় চমক দিতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। জানা যাচ্ছে, আগামী জুলাই মাসে তৃণমূলের শহীদ দিবসের দিন তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা যোগদান হতে চলেছে। যা বিজেপির বিড়ম্বনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।

সূত্রের খবর, করোনা সংক্রমনের কারণে এবারের একুশে জুলাই ভার্চুয়ালি করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখাতে পারেন বিশিষ্ট অভিনেতা তথা দেশের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শত্রুঘ্ন সিনহা এবং বিশিষ্ট জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ভাইয়াপুরি গোপালাস্বামি ওরফে ভাইকো। অনেকে বলছেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এই জনপ্রিয় দুই নেতাকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির চাপ আরও বাড়িয়ে দিতে চাইছেন।

এক্ষেত্রে এই দুই জনপ্রিয় নেতা যদি ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখান, তাহলে তাদের সর্বভারতীয় রাজনীতিতে জায়গা করে দিয়ে তৃণমূলের বিস্তারের কাজ আরও ভালো করেই করতে পারবেন তৃণমূল নেত্রী। আর সমস্ত কিছু যদি ঠিকঠাক ভাবে এগোয়, তাহলে আগামী একুশে জুলাই এই দুই হেভিওয়েট মুখ তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে তাদের কাজ শুরু করতে পারেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় সংগঠনের দিকে সবথেকে বেশি মনোনিবেশ করেছেন। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এখন তার প্রধান লক্ষ্য দিল্লি থেকে বিজেপিকে সরানো। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃণমূল যেমন আলোচনা শুরু করেছেন, ঠিক তেমনই নিজের দলকে যাতে আরও শক্তিশালী করা যায় এবং দেশের মধ্যে বিজেপি বিরোধিতার দিক থেকে সবথেকে নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে, সেই চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া মুকুলবাবু ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দলকে বিস্তার লাভ করার জন্য তৈরি করছেন। আর তার মাঝেই শত্রুঘ্ন সিনহা এবং ভাইয়াকো গোপালাস্বামির মত দুই জনপ্রিয় নেতা তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদানের জল্পনা ছড়িয়ে পড়ল। সেদিক থেকে যদি এই দুই জনপ্রিয় নেতা আগামী একুশে জুলাই তৃণমূলের মঞ্চে পৌঁছে যান, তাহলে আগামী দিনে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপির চাপ বাড়িয়ে দিতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনেকটাই সুবিধে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।