এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > উন্নাওয়ের অপরাধীদের কি শাস্তি হবে ? হায়দ্রাবাদ কান্ডের পর প্রশ্ন উঠেছে দেশজুড়ে

উন্নাওয়ের অপরাধীদের কি শাস্তি হবে ? হায়দ্রাবাদ কান্ডের পর প্রশ্ন উঠেছে দেশজুড়ে


গত জুলাই মাসে দেশবাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছিল আরেকটি নাটকীয় ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তর প্রদেশে একটি ধর্ষণ মামলা সামনে আসে। যে ঘটনা সামনে আসার পরে সারা দেশবাসী তুমুল ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত উন্নাওয়ের অপরাধীদের কোনো শাস্তি  হয়নি। অন্যদিকে, বরং অভিযোগকারিণী আজ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে পরিবারের সদস্যদেরও তিনি হারিয়েছেন। শুধুমাত্র ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এই ঘটনাতেও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দেশের সর্বোচ্চ সংবাদমাধ্যমে দেশের আমজনতার ক্ষোভ বেরিয়ে এসেছিল। এদিন আবার হায়দ্রাবাদের এনকাউন্টার ঘটনায় সেই প্রসঙ্গ ফিরে এলো। উন্নয়নের ঘটনাটি একটু ফিরে দেখা যাক বরং।

এক তরুণী রায়বরেলি আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ভোররাতে বেরিয়েছিলেন ট্রেন ধরতে এবং সেখানেই তাকে পাঁচজন ঘিরে ধরে বেত মেরে, গলায় ছুরি চালিয়ে, গায়ে পেট্রল ঢেলে মৃত্যুমুখইয়ে,ঠেলে দেয়। কারণ এই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা করেছিল সে আর তারই সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিল আদালতে। প্রতিহিংসার আগুনে উন্নাও নির্যাতিতাকে পুড়তে হয়। অভিযুক্ত পাঁচজনকে পরবর্তীতে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে এই নির্যাতিত প্রতিটি ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। এবং এর সাথে এটাও জানিয়েছেন, জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল অপরাধীরা এবং তাই আবারও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তিনি ভোরবেলা আদালতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেননি, অপরাধীরা ধূর্ত নেকড়ের ন্যায় শিকারের খোঁজে বসেছিল রেলস্টেশনের গেটের পাশেই এবং নির্যাতিতা সে জায়গায় পৌঁছাতে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পিশাচের মত।

ভোররাত থাকাতে তরুণী চিৎকার কারোর কাছে পৌঁছায়নি। পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে তরুণী আগে থাকতেই চিনতেন। কারণ তারাই ধর্ষণে অভিযুক্ত ছিল। কিন্তু বাকি দুজন তাঁর অপরিচিত ছিল বলে জানা যায় সূত্রের মাধ্যমে। যদিও পরবর্তীতে পুলিশ জানিয়েছে, বাকি দুজন ওই ছেলেদের বাবা। প্রথমে ধমক দিয়ে কাজ না হওয়ায় তরুনীর ওপর আক্রমণ শুরু হয়। নির্যাতিতার কথায় জানা গেছে, ‘প্রথমে সপাটে লাঠির গা কষিয়ে দেয় আমার পায়ে। যন্ত্রণায় কঁকিয়ে উঠি। তারপর আবার, বারবার। সামনে, পিছন থেকে দফায় দফায় লাঠির ঘা পড়তে থাকে আমার সারা শরীরে।’

নির্যাতিতার কথায় জানা যায়, তিনি পা ভেঙে মাটিতে বসে পড়লে তার গলায় ছুরি বসিয়ে দেয় একজন। রক্তে ভেসে যান তিনি। যন্ত্রণায় ছটফট করার সময় তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে দেয় অপরাধীরা এবং তারপরেই আগুন ধরিয়ে দেয়। জ্বালাপোড়ার সেই যন্ত্রণা আর ব্যাখ্যা করেননি নির্যাতিতা। তিনি আরো জানান, গায়ে আগুন নিয়ে তিনি ছুটতে শুরু করেন এবং চিৎকার শুরু করেন। তাঁর চিৎকার শুনে কেউ একজন ফোন করে দেন পুলিশকে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করেছে বলে জানা যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গণধর্ষণের মূল অভিযুক্ত ছিল শিবম ত্রিবেদী। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে জেলে যাবার পর জামিন পেয়ে গ্রামে ফিরে ধর্ষণে আরেক অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদীর সাহায্য নিয়ে তরুণীকে পুড়িয়ে মারার ছক সাজানো হয়েছিল। উত্তর প্রদেশের পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ করা হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে তদন্তের নাড়ি নক্ষত্র জানতে জাতীয় মহিলা কমিশন রিপোর্ট চেয়েছে। এদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্যাতিতার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে বলে জানিয়েছেন।

নির্যাতিতা যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তার মেডিকেল সুপারেন্টেন্ড সুনীল গুপ্তা এদিন সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, প্রথমে দগ্ধ অবস্থায় তরুণীকে লখনৌ এর কিং জর্জেস মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁর জন্য স্পেশাল ব্যবস্থা করা হয় দেখভাল করার জন্য। তবে নির্যাতিতার প্রসঙ্গে কোন আশার বাণী শোনায়নি ডাক্তার। হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান শালাব কুমার জানিয়েছেন, ক্ষত অতি দ্রুত বাড়ছে এবং সেকারণে তরুনীর অবস্থা ক্রমেই আশঙ্কাজনক হচ্ছে আরো বেশি।

সূত্রের খবর, প্রায় 90 শতাংশ পুড়ে গেছে উন্নাওয়ের ধর্ষণের নির্যাতিতা তরুণী। তার মধ্যেই তিনি পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, হায়দ্রাবাদ হত্যাকাণ্ডে যদি এনকাউন্টার করা হয়, তাহলে উন্নয়নের ঘটনার নৃশংসতাও কিছু কম নয়, তবে সেখানে এনকাউন্টার কেন হল না?  অন্যদিকে, হায়দ্রাবাদ পুলিশের মতে, অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা এবং পুলিশের ওপর হামলা করায় তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। অর্থাৎ, এনকাউন্টার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, উন্নয়নের নির্যাতিতা আগেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মৃত্যুর আশঙ্কা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। এবার সমস্ত দেশ হায়দ্রাবাদ কাণ্ডের পর তাকিয়ে রয়েছে উন্নাওয়ের অপরাধীদের দিকে। দেশবাসী চরম শাস্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!