এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > পিবি সমীক্ষা – কোন অঙ্কে কেন্দ্রে পরবর্তী সরকার গড়তে পারে কে? প্রথম পর্ব

পিবি সমীক্ষা – কোন অঙ্কে কেন্দ্রে পরবর্তী সরকার গড়তে পারে কে? প্রথম পর্ব


লোকসভা নির্বাচনের আর এক বছরও বাকি নেই, ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। একদিকে যখন দ্বিতীয়বারের জন্য কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরতে আশাবাদী নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্ত্বাধীন বিজেপি, অন্যদিকে তখন তরুণ ব্রিগেডকে সামনে রেখে ও বিরোধীদের সঙ্গে কিছুটা নমনীয় সম্পর্ক গড়ে তুলে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেসও স্বপ্ন দেখছে কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের। কিন্তু দুই হেভিওয়েট জাতীয় দলের লড়াইয়ের মাঝে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রে অ-কংগ্রেসি ও অ-বিজেপি সরকার গঠনের লক্ষ্যে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের দিকে দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্রমশ উস্কে দিচ্ছেন কেন্দ্রে প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন। এই পরিস্থিতিতে আম জনতার মধ্যেও ক্রমশ বাড়ছে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে কৌতূহল।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আর তাই লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এর দিকে লক্ষ্য রেখে প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফ থেকে ভারতবর্ষের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে করা হয়েছিল একটি ওপিনিয়ন পোল। ২২ দিন ধরে দেশের ২৯ টি রাজ্য ও ৭ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যেখানে লোকসভা ভোট হবে, তার রাজ্যওয়ারী ফলাফল – আমাদের সমীক্ষা অনুযায়ী যা সামনে এসেছে তা তুলে ধরা হয়েছে, আপনাদের অনুরোধে সব রাজ্যের ফলাফল এক জায়গায় দেওয়া হল। তবে, এই সমীক্ষা কোনোমতেই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে নয়, এই মুহূর্তে ভারতবাসী কি ভাবছেন তার একটা প্রতিফলন তুলে আনার প্রচেষ্টা মাত্র। আগামী দিনে নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে আমরা তত ঘনঘন এই সমীক্ষা করে বোঝার চেষ্টা করব ভারতবাসীর জনমত কিভাবে পাল্টাচ্ছে। আমাদের করা সমীক্ষা অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে রাজ্যওয়ারি ফলাফল কি হতে পারে তা আগেই আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরেছিলাম। তার একঝলক দেখে নিতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

অর্থাৎ আমাদের সমীক্ষা অনুযায়ী গোটা ভারতবর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিক ফলাফল হতে পারে এইরূপ –

সারা ভারতবর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে (মোট আসন – ৫৪৩)
বিজেপি নেতৃত্ত্বাধীন এনডিএ – ২২৭
ফেডারেল ফ্রন্ট – ২০৫
কংগ্রেস নেতৃত্ত্বাধীন ইউপিএ – ১১১

আর তারমধ্যে ফেডারেল ফ্রন্টে বিভিন্ন দলগুলির সাম্ভাব্য আসন হতে পারে এইরূপ –
তৃণমূল কংগ্রেস – ৩২
বহুজন সমাজবাদী পার্টি – ২৬
সমাজবাদী পার্টি – ১৮
শিবসেনা – ১৫
আরজেডি – ১৪
ডিএমকে – ১৪
তেলেগু দেশম পার্টি – ১৩
ওয়াইএসআর কংগ্রেস – ১২
এনসিপি – ১১
এআইএডিএমকে – ১১
টিআরএস – ৯
বিজু জনতা দল – ৭
এএমএমকে (দিনকরণ) – ৫
লোকদল – ৩
জেডিএস – ৩
ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা – ৩
নির্দল ও অন্যান্য – ৯

এখন স্বাভাবিকভাবেই লাখ টাকার প্রশ্ন, তাহলে কোন অংকে কে গড়তে পারে কেন্দ্রের পরবর্তী সরকার? কেননা সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২ আসন – এনডিএ, ইউপিএ বা ফেডারেল ফ্রন্ট – কোনো জোটই পাচ্ছে না। আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক সম্ভাবনাগুলি –

১. কোন অঙ্কে এনডিএ জোট সরকার গঠন করতে পারে?
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে জোরালো সওয়াল করলেও, সেই জোটে কোন কোন দল থাকছে তা কিন্তু এখনো নিশ্চিত নয়। তিনি জানিয়েছিলেন দেশের সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে এই জোট হবে। তাই সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে এই জোট ধরা হয়েছে।

কিন্তু এই জোটে এমন কিছু শরিক আছে যারা কিন্তু রাজনৈতিক আদর্শগত ভাবে একেবারে একে অপরের বিপরীত মেরুতে। সুতরাং তারা কতটা এক ছাতার তলায় থাকে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। এই যুক্তিতে বলা যায় ডিএমকে ও এআইএডিএমকে একসাথে না থাকার সম্ভাবনা প্রবল। যেহেতু তৃণমূল নেত্রী ডিএমকের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে এআইএডিএমকে এনডিএ জোটে শামিল হয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, একই কথা প্রযোজ্য ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ক্ষেত্রে। অন্ধ্রপ্রদেশে টিডিপির সাথে তাদের লড়াই অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় টিআরএসের সঙ্গে। আর ইতিমধ্যেই বিজেপির তরফে ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে এনডিএতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সুতরাং ওয়াইএসআর কংগ্রেস এনডিএ জোটে চলে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

মহারাষ্ট্র থেকে শিবসেনা আর এনসিপি একযোগে এক ছাতার তলায় এলে – তাদের সমর্থকদের মধ্যে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে আসতে পারে। অন্যদিকে অমিত শাহরা এখন থেকেই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে শিবসেনাকে এনডিএতে ফিরিয়ে আনার। সরকার গড়ার প্রশ্নে তাই শিবসেনাকেও পাশে পেয়ে যেতে পারেন নরেন্দ্র মোদীরা।

বিজু জনতা দলের এবার বড় সমস্যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা হাওয়া। বিজেপি বিরোধিতা করতে গিয়ে ওড়িশা হাতছাড়া হয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা। আর তাই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে এনডিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিতেই পারেন নবীন পট্টনায়ক। দক্ষিণের আরেকদল এএমএমকে (দিনকরণ) কি করবে এখনো স্পষ্ট করে নি। তামিল রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে এনডিএতে শামিল হতে পারে তারাও।

এখানে নির্দল ও অন্যান্যদের ৯ টি আসন ধরা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে – আসামের এআইইউডিএফ – ২, বিহারে পাপ্পু যাদবের লোকতান্ত্রিক জনঅধিকার পার্টি – ১, জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ১ টি করে, কেরালার ১ টি নির্দল প্রার্থী, তেলেঙ্গানায় আইমিম – ১ ও পাঞ্জাব ও দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ১ টি করে। সুতরাং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সংখ্যালঘু ও প্রবল বিজেপি বিরোধী হওয়ায় এঁরা এনডিএতে এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

আর তাই সবমিলিয়ে ভোট পরবর্তী জোটের অঙ্কে এনডিএর সঙ্গে আসা উপরের দলগুলি মিলিয়ে সমীকরণ দাঁড়াতে পারে এইরকম –
বিজেপি নেতৃত্ত্বাধীন এনডিএ – ২২৭
এআইএডিএমকে – ১১
ওয়াইএসআর কংগ্রেস – ১২
শিবসেনা – ১৫
বিজু জনতা দল – ৭
এএমএমকে (দিনকরণ) – ৫
মোট – ২৭৭

ফলে এই সমীকরণেই কিন্তু এনডিএ জোট সরকার গঠনের জায়গায় চলে যাচ্ছে – কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ফিরে আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদী।

(আগামীকাল দ্বিতীয় পর্ব)

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!