এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির বিরুদ্ধে বিজেপির সভা, চরম গোষ্ঠীকোন্দল গেরুয়া শিবিরে, অস্বস্তিতে দল!

বিজেপির বিরুদ্ধে বিজেপির সভা, চরম গোষ্ঠীকোন্দল গেরুয়া শিবিরে, অস্বস্তিতে দল!

গত লোকসভা নির্বাচনে কিছুটা হলেও ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখা বিজেপি লোকসভায় আঠারোটা আসন পেয়ে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজে মনোযোগী হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় বসার পর তৃণমূলে যেভাবে অন্তর্কোন্দল গ্রাস করেছিল, ক্ষমতায় বসার আগেই তার থেকে দ্বিগুনভাবে এখন বিজেপিতে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

মাঝেমধ্যেই মন্ডল সভাপতি থেকে জেলা সভাপতি নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন নেতা কর্মীরা। যা নিয়ে বিজেপির শৃঙ্খলা প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গিয়েছিল। তবে কর্মী বিক্ষোভে নিজেদের দলের শৃঙ্খলা প্রশ্নের মুখে পড়লেও, বিজেপির তরফে বলা হয়েছিল, “বড় দলে এরকম হতেই পারে। তৃণমূলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হচ্ছে। বিজেপিতে এমনটা হয় না।” কিন্তু বিজেপি নেতারা এমন কথা বললেও, এবার তাদের মুখে রীতিমত ঝামা ঘষে দিয়ে পুরুলিয়া বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপর গোষ্ঠীর সভা নানা প্রশ্ন তুলে দিল।

সূত্রের খবর, সোমবার পুরুলিয়ায় “পুরুলিয়া জেলা বিজেপি বাঁচাও” কমিটির ব্যানারে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা একটি সভা করেন। যে সভা থেকে পুরুলিয়া জেলা বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হন দলের একাংশ। এদিনের এই সভায় টাঙানো ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবির নিচে লেখা ছিল, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করো, প্রতিরোধ করো, প্রয়োজন হলে প্রতিশোধ নাও।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর দলের একাংশ প্রকাশ্যে এভাবে সভা করে দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় পুরুলিয়া জেলা বিজেপি যে একদম দ্বিধা-বিভক্ত, তা আর বুঝতে বাকি রইল না কারোরই। জানা গেছে, এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া শহর মন্ডলের প্রাক্তন নেতা নির্মল কেশরী, বিজেপি ওবিসি মোর্চার প্রাক্তন জেলা সভাপতি পরেশ রজক, পুরুলিয়া বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী নগেন্দ্র ওঝা, জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য রাজীব মাহাতো সহ অন্যান্যরা।

এদিনের এই সভা থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্তমান জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন নির্মলবাবু। তিনি বলেন, “জেলা বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কোন্দল কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেই বহিষ্কার করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন নেতারা চান না, সংগঠন বিস্তৃত হোক। তারা মৌরসীপাট্টা চান। চাটুকারদের নিয়ে চলেন। কর্মীদের ঘাম রক্তে জেতা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেকগুলিই তৃণমূলের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।” আর বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের যখন সমবেত হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ার কথা, তখন দলের বিরুদ্ধে এভাবে প্রকাশ্যে এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সভা করায় বিজেপির শৃঙ্খলা নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

এদিন এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “যারা ওই সভা করেছেন, তাদের অনেককেই দল বিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের বাইরের লোক বিজেপি সম্পর্কে কি বলল, তাতে কোনো গুরুত্ব নেই। যারা বিজেপিকে ভালবাসেন বলে দাবি করছেন, তারা নিশ্চয়ই বিজেপির ছবি লাগিয়ে দলের নেতৃত্বের বদনাম করবেন না। তৃণমূলের কথা মত কিছু লোক এই কাজ করতে রাস্তায় নেমেছে। দলে গণতন্ত্র রয়েছে কিনা, তা প্রতিটি মণ্ডল কমিটির সদস্যরা জানেন।” এদিকে বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিজেপির একাংশ এভাবে প্রকাশ্যে সভা করে সরব হওয়ায় এটাকে হাতিয়ার করে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই ঘটনার সাথে তৃণমূলের নাম জড়ানো ঠিক নয়। এদিন যারা সভা করেছেন, তারা বিজেপির লোক বলেই পরিচিত।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন বিজেপির উচিত, তৃণমূলের বিরুদ্ধে একদম লড়াইয়ে নামা। কেননা তাহলেই তারা তাদের বাংলা দখলের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। কিন্তু তা না করে যেভাবে একেবারে প্রকাশ্যে বিজেপি বনাম বিজেপির লড়াই প্রত্যক্ষ করছেন মানুষ, তাতে সাধারণ মানুষের বিজেপির প্রতিও আস্থা উঠে যেতে শুরু করেছে। যার সুফল নিজেদের ঝুলিতে পুরতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন নিজেদের ভালোর জন্য বিজেপি কোন্দলকে দূরীভূত করতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!