এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > অপরাজিতা > সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –13, কলমে – অপরাজিতা

সোনার হরিণ চাই – ( লাভ স্টোরি ) – পর্ব –13, কলমে – অপরাজিতা


সংযুক্তা – হুম গো অনেকে কেস আছে , আসলে আমাদের মেসে একটা ঠাকুমা আছে , মানে আমরা ঠাকুমা বলি তাকে।( চন্দ্রেয়ীর বুঝতে অসুবিধা হয় নি কে সে ?কেননা চন্দ্রেয়ী অনেক নিয়ম কানুন মানে যেমন বিছানায় খাওয়া যাবে না, বাড়ি ঢুকেই পা ধুতে হবে, এঁটো হাতে জলের বোতল ধরা যাবে না এইসব অনেক কিছু। যে কারণে সংযুক্তা চন্দ্রেয়ী কম ঠাকুমা বেশি বলে। যার তার সামনে যখন তখন বলে। )

সংযুক্তা – তুই চিনিস তো চন্দ্রেয়ী, সো যেটা হয়েছে সেটা হলো আমাদের ঈশানদা ঠাকুমার প্রেমে পড়েছিল। আমি প্রথমে জানতাম না, ঠাকুমা যার কথা বলে, যার উপর এত বিরক্ত সে ঈশান দা, আমি ঈশান দাকে চিনি, কেননা ঈশানদা আর আমার দাদা একসাথে জব করতো, আমি ভাইফোঁটাও করেছি, আমাদের বাড়িতে অনেকবার এসেছেও। ইনফ্যাক্ট ইন্দ্রার সাতে আমার আলাপ ঈশান দার থ্রু দিয়ে। যাই হোক তোর মনে আছে আমি ঠাকুমার সাথে একটা পিকচার পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে তৃষার বার্থডে পার্টি থেকে আসার পর, তুইও লাইক করেছিলি ? মনে পড়েছে চন্দ্রেয়ীর।

সংযুক্তা – তার পরের দিন আমাকে ঈশানদা ফোন করে। ঠাকুমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে এন্ড দেন? আমাকে পরিষ্কার বলে ঠাকুমার প্রেমে পড়েছে, কিন্তু ঠাকুমা একেবারে পাত্তা দিচ্ছে না ,দেখেলেই রেগে যায় সো আমাকে হেল্প করতে হবে।

এরপর এক্সপ্লানেডে দেখা হওয়া, আমার ঈশানদার সাথে যাওয়া আর প্রেম সব কিছুই ঠাকুমা কে জ্বালানো। এন্ড গেস ঈশানদা আমাকে ভিডিও কল করলেও ক্যামেরা ঘোরানো থাকতো ঠাকুমার দিকে, তাই তো আমাকে সারা ঘর ঘুরে বেরিয়ে কথা বলতে হতো।

পার্লারের দিদি – বেশ ছেলে তো ?আহা গো কত কিছু করেছে!

সংযুক্তা – শুধু এই টুকু আরো আরো আছে, কত গালাগালি খেয়েছে ঠাকুমার কাছে তুমি জানো?

পার্লারের দিদি – কেন?

সংযুক্তা – কেননা যাতে ঠাকুমাকে দেখতে কোনো অসুবিধা না হয় তাই রাত্রে সানগ্লাস পরে থাকতো,

পার্লারের দিদি – কি? বলেই হা হা করে হাসতে লাগলো।

চন্দ্রেয়ীও এবার হেসে ফেললো, আস্তে আস্তে বললো – সিরিয়াসলি ?

সংযুক্তা – বেশ ডার্লিং, এন্ড ঠাকুমা যে ডিও ইউস করে সেটাই ঈশান দা মাখে যাতে ওর মনে হয় ঠাকুমা সবসময় ওর সাথে ওকে জড়িয়ে আছে।

পার্লারের দিদি – তোমাদের ঠাকুমা লাকি, এমন একটা ভালোবাসার মানুষ পাওয়া খুব কম কথা নয়, তা তোমাদের ঠাকুমা কোথায়? প্রেমে পড়েছে সেও?

সংযুক্তা – হুম

সাজানো কমপ্লিট। দেখো এবার বন্ধুকে , কেমন লাগছে

সংযুক্তা -খুব সুন্দর লাগছে। বলে আর একটা পিকচার তুললো।

পিঙ্কি এসেছে ওরাও সাজবে বলে।

আচ্ছা দিদি শোনো না আমি চেঞ্জ করবো, এই পিঙ্কি তোরা দিদিকে তোদের ঘরে নিয়ে গিয়ে সাজ প্লিজ।

পিঙ্কি – কেন তুমি আমাদের সামনে চেঞ্জ করো না।

সংযুক্তা – আমার সবার সামনে চেঞ্জ করতে লজ্জা করে।

পিঙ্কি -ওকে

সংযুক্তা – আচ্ছা বাইরে বল চন্দ্রেয়ী আমাকে একটু হেল্প করেই যাচ্ছে,

ঘরে কেউ নেই , চন্দ্রেয়ী আর সংযুক্তা।
দরজা বন্ধ করে দিলো সংযুক্তা।

সংযুক্তা – তোর জিনিসপত্র কোথায় ?

চন্দ্রেয়ী – কেন?

সংযুক্তা – ন্যাকা ? বললাম যে ইস্যান্ডা ওয়েট করছে।

চন্দ্রেয়ী – নো

সংযুক্তা – পাগলামি করিস না চন্দ্রেয়ী , প্লিজ,

কেউ তোকে এমনভাবে ভালোবাসতে পারবে না চন্দ্রেয়ী। ঈশান দা পাগলের মতো ভালোবাসে তোকে।
সেদিন বলেছিলো ঈশান দা তোকে প্রপোস করবে , আমি তাই মজা করেছিলাম তোর সাথে, তবে মিথ্যা বলিনি আমি আর ইন্দ্র বিয়ে করেছি। ওর বাড়ির একটু প্রব্লেম ছিল তাই।

তুই চলে যাবার পর ঈশান দা পাগলের মতো করছিলো , আমরা সামলেছি ,আমার ভীষণ নিজেকে অপরাধী লাগছিলো। চন্দ্রেয়ী প্লিজ, আর একটা কথা বলি – তুই যদি আজ না যাস, হয়তো ঈশান দা নিজেকে সামলাতে পারবে না। তুই ওর চোখ মুখ দেখলেই বুঝতে পারবি। তুই ওর সোনার হরিণ চন্দ্রেয়ী। তোকে অনেকবার বলেছে – গোল্ডেন ডিয়ার, ইটস মিন – সোনার হরিণ।

চন্দ্রেয়ী – তো? আমি কেন যাবো ওর সাথে? যে তোকে এত কথা বলতে পারে সে আমাকে কেন বলতে পারে না , আর আমি তোর কথাই কেন যাবো?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ওদিকের মানুষটার কথা শুনবেন না – আমাদের ঈশান , সেই বাউন্ডুলে, সাইকো মানুষটার।গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঈশান, সিএম এর গাড়ি নিয়ে এসেছে।
অনেক কিছু চলছে ওর মধ্যে। ভীষণ টেনশন হচ্ছে ওর। যা প্ল্যান করেছে সব ঠিক থাকে হবে তো ? যদি না হয় যদি অন্য কিছু হয় যদি যদি চন্দ্রেয়ী অন্য কারুর হয়ে যায়, আর বাঁচবে না ঈশান। অনেক কিছু হারিয়েছে, পাবার কিছু ছিল না কিন্তু চন্দ্রেয়ীকে দেখার পর আবার নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছা হয়েছে ঈশানের। একটা গোছানো জীবন বাঁচতে ইচ্ছা হয়েছে ঈশানের। কিন্তু যদি ওকে হারিয়ে ফেলে তাহলে আর না কিছু পাবার থাকবে না কিছু হারানোর থাকবে।

কয়েকমাস আগেও জানতো না ঈশান কেউ আসতে চলেছে ওর জীবনে। নিজের কোম্পানির কাজ নিয়ে পরে থাকা সময় কাটানোর একটা ছুতো। তারপর ঘুরতে বেরিয়ে পড়া , আর ইচ্ছা হলে সি এম দের সাথে পোগ্রামে যাওয়া। এই তো ছিল জীবন।

সেদিন কুর্গ থেকে ফিরে সি এম এর বাড়ি গিয়েছিলো ঈশান। দোতলার বারান্দায় শুনতে পেয়েছিলো একটা মিষ্ট গলার গান গানটা ছিল ‘আমার সোনার হরিণ চাই’ থেমে গিয়েছিলো ও।বাইরে থেকে দেখেছিলো – একটা নতুন মেয়ে,লাল পেড়ে সাদা শাড়ী পরে আছে ,খোলা চুলটা গোটা পিঠটা ঢেকে রেখেছে। ঈশানের মা অমন লাল পেরে সাদা শাড়ী পড়তো, চুলটাও অনেক বড় ছিল। কোথায় যেন ঈশানের মনে হয়েছিল এই সে যাকে এতদিন ধরে ঈশান খুঁজছে। মুগ্ধ হয়ে দেখছিলো। কিন্তু হঠাৎ একটা চিৎকারে চমক ভেঙেছিল। চন্দ্রেয়ী ভয় পেয়েছিলো।

সেই শুরু, ঈশানকে দেখে চন্দ্রেয়ীর ঐভাবে তাকানো, রাগ করা, সাইকো ভাবা, ভালো লাগতো ঈশানের। আর সেই কারণেই এত রাগাত ঈশান।

সংযুক্তার সাথে দেখা করা প্রেম প্রেম খেলা। রোজ সকালে সংযুক্ত চন্দ্রেয়ীর একটা সদ্য স্নান করা পিকচার পাঠাতো , তারপর ভিডিও কল , মুগ্ধ হয়ে দেখতো ঈশান। চন্দ্রেয়ী অবশ্য রাগ করতো , কিন্তু তাতে কি।

তারপর যেদিন শুনলো চন্দ্রেয়ীর বিয়ে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিলো। যখন শুনেছে যে চন্দ্রেয়ীর ইচ্ছা নেই ধরে প্রাণ এসেছে।

সেদিন ট্রেন থেকে নেমে বেঞ্চে শুয়ে এটাই ভাবছিলো ঈশান , যদি চন্দ্রেয়ী ঈশানের এই বাউন্ডুলে জীবনটা গুছিয়ে দিতো। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছিলো ,ছুড়ে ওটার আগে ওদিকের দাড়কজায় চন্দ্রেয়ীকে দেখেছিলো, ঈশানকে খুঁজছে ?ছুটে গিয়েছিলো ঈশান , পরে যাচ্ছিলো চন্দ্রেয়ী , যদি সেদিন ঈশান চন্দ্রেয়ীকে না ধরতে পারতো ও ও ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিতো। বুকে টেনে নিয়েছিল চন্দ্রেয়ীকে, ভয়ে জড়িয়ে ধরেছিলো ঈশান। চন্দ্রেয়ীও জড়িয়ে ধরেছিলো। ঈশানের মনে হয়েছিল এখানেই সময়টা থেমে যাক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!