প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সদ্য গঠন হয়েছে মন্ত্রিসভা। তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দল তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর আশঙ্কাকে বাস্তবায়িত করে সোমবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং শাসকদলের এক বিধায়ককে। উল্লেখযোগ্য ভাবে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

বর্তমানে নিজাম প্যালেসে রয়েছেন সেই ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই ভোটের পরেই এভাবে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং শাসক দলের এক বিধায়ক তথা প্রাক্তন নেতাকে গ্রেপ্তার করার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এটিকে রাজ্যের মন্ত্রী গ্রেফতার হতে না হতেই তড়িঘড়ি কনভয় নিয়ে সিবিআই দপ্তরে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে রীতিমত নিজের প্রতিবাদী ভাবমূর্তি তুলে ধরে তাঁকে গ্রেপ্তার না করা হলে তিনি নিজাম প্যালেস ত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে।

সূত্রের খবর, আজ বেলা 11 টায় নিজাম প্যালেসে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি সিবিআই দপ্তরে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আর তারপরই যেভাবে তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের এবং বিধায়কদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে যে তিনি যথেষ্ট ক্ষুব্ধ, তা জানিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি।” পাশাপাশি যদি তার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিধায়কদের এভাবে আটক করা হয়, তাহলে তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে বলে রীতিমত জেহাদ ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআইয়ের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, তিনি কোনোমতেই গোটা ঘটনাকে ছেড়ে কথা বলবেন না। এক্ষেত্রে চক্রান্তের কথা তুলে ধরে সিবিআই অফিসার ধরনা দিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল সরকারের উপর যেন এই ঘটনায় কার্যত বাজ ভেঙে পড়েছে। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ হাকিম গ্রেপ্তার হয়েছেন, তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় আসার পরই কেন এভাবে নারদা কান্ডের কথা তুলে ধরে গ্রেপ্তার, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন তিনি।

আর এবার সরাসরি ধর্নায় বসে গিয়ে নিজের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিধায়কদের বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। অনেকে বলছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের গ্রেফতার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অত্যন্ত চাপের কারণ। তবে তার এই প্রতিবাদ কার্যত বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে ধরেছে। তবে সিবিআইয়ের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ এবং তাকেও গ্রেপ্তার করার দাবি কার্যত বেনজির বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।