অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ কৌতুকের স্বরে বলে, “টাকা কি গাছে ফলে?” টাকা গাছে ফলতে হয়তো কেউই দেখেনি, তবে এইভাবে হঠাৎ করে রাশি রাশি টাকা কোনো কারণ ছাড়াই ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাওয়ায় হতবাক অনেকেই। না শুনতে গল্প বলে মনে হলেও ঘটনাটি একেবারেই সত্যি। আর আশ্চর্য্য এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া- চিৎনান এবং কাশমলি পঞ্চায়েতে।

সূত্রের খবর, এই দুই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন মানুষদের মোবাইলে গত শুক্রবার দুপুর থেকেই ব্যাংকে টাকা ঢোকার মেসেজ আসতে শুরু করে। প্রথমে ঘটনাটিকে ভুয়ো ভাবলেও পরে অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে চমকে যান গ্রাহকেরাও। জানা গেছে, এই ঘোড়াবেড়িয়া- চিৎনান পঞ্চায়েতের ভৌমিক পাড়ায় অধিকাংশ মানুষই তাঁদের একাউন্টে কুড়ি লক্ষ টাকা জমা পড়েছে বলে নিজেদের মোবাইলে মেসেজ পেয়েছেন।

এইরকমই অ্যাকাউন্টে 27 হাজার টাকা জমা পড়ার খবর আশায় অনেকটাই উচ্ছ্বসিত হন ঘোড়াবেড়িয়া গ্রামের মধু মল্লিকের বোন রুকসানা। এদিন এই প্রসঙ্গে রুকসানার দাদা মধু মল্লিক বলেন, “আমার বোন সাত বছর আগে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। তেমন কোনো লেনদেন হয়নি। অথচ ওর অ্যাকাউন্টে 27 হাজার টাকা জমা পড়েছে।” তবে সকলের মোবাইলেই যে এই অর্থপ্রাপ্তির মেসেজ এসেছে তা নয়, তাইতো ঠিক কোন কারণে এই টাকা ঢুকলো তা ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই।

এদিকে গত শুক্রবার থেকে ব্যাঙ্ক ধর্মঘট চলায় তাঁদের একাউন্টে আদৌ টাকা ঢুকেছে কিনা সেই ব্যাপারে নিশ্চিত নন গ্রাহকেরাও। এদিকে ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে স্থানীয় 2 রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্তাদের সঙ্গেও কোনো ভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে প্রথমে গ্রাহকদের ব্যাংক একাউন্টে এই টাকা ঢোকার মেসেজের খবর পাওয়াতে জেলা প্রশাসন ভেবেছিল, হয়ত বিগত বন্যায় যে সমস্ত চাষির ফসল নষ্ট হয়েছিল তাদেরই বীমার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে কলেজ ছাত্র এবং দিনমজুরদের একাউন্টেও এই টাকা ঢোকায় সেই বক্তব্য থেকে সরে আসে প্রশাসন। কিন্তু ঠিক কি কারণে এই টাকা ঢুকলো?

এদিন এই প্রসঙ্গে হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শংকর প্রসাদ পাল বলেন, “বিষয়টি জানি। কোন খাতের টাকা তা লিড ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলব। সোমবার থেকেই এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করা হবে।” সব মিলিয়ে এখন আচমকা অর্থ প্রাপ্তিতে রীতিমতো থ বনে গিয়েছেন হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া চিৎনান এবং কাশমলি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ মানুষ।