এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিজেপির হট্টগোল ফিনিশ, তবে গন্ডগোল কি তৃনমূলের জন্যই? স্পষ্ট ইঙ্গিত পদ্মের!

বিজেপির হট্টগোল ফিনিশ, তবে গন্ডগোল কি তৃনমূলের জন্যই? স্পষ্ট ইঙ্গিত পদ্মের!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গত দুই তিন দিন আগে থেকে বাংলার অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা দিনরাত এক করে একটাই খবর বারবার করে দেখাচ্ছিলেন যে, বিজেপিতে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে তাদের দলের নেতা, কর্মীরা রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলছেন। যা দেখে যারা মন থেকে বিজেপি করেন, তারা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বিজেপির মত দলে এটা কখনই কাঙ্খিত নয় বলেও দাবি করেছিলেন একাংশ। তবে এসবের মাঝেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, তৃণমূল পরিকল্পনা মাফিক কাউকে কাউকে পাঠিয়ে তাদের পার্টি অফিসের সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু দুদিন আগে এত বিক্ষোভ, এত হট্টগোল, মুহূর্তের মধ্যেই তা শেষ হয়ে গেল কি করে! তাহলে কি বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের ষড়যন্ত্র ধরে ফেলেছে জন্যই এবার যারা গন্ডগোল করছিলেন, তারা সেখান থেকে সরে পড়লেন?

গেরুয়া শিবিরের দাবি, হট্টগোল মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, পেছন থেকে কেউ বা কারা ইন্ধন দিয়েছেন, বিজেপির প্রতি ষড়যন্ত্র করার জন্য। যে কারণেই বিজেপি নেতারা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র ধরে ফেলতেই সেই যাবতীয় গন্ডগোল কার্যত ফিনিশ। এমত পরিস্থিতিতে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তার মন্তব্যের পর আরও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে যে, সত্যিই বিজেপিকে চাপে রাখার জন্য তৃণমূল কাউকে কাউকে লেলিয়ে দিয়ে তাদের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে বিজেপির অবস্থা ভালো নয়, এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেই চেষ্টায় ফেলিওর বলেই দাবি সমালোচকদের।

প্রসঙ্গত, এদিন বিজেপির এই দ্বন্দ্ব এবং পার্টি অফিসের সামনে যাবতীয় বিক্ষোভ নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “পেছন থেকে তৃণমূলের কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করে এই ভেদাভেদ দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের দলে যারা পুরনো, যারা নতুন, তারা সকলে মিলে একসাথে কাজ করছেন। পুরনোদের অভিজ্ঞতা নিয়েই তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এভাবেই 2024 সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।” এক্ষেত্রে লকেটদেবী কিন্তু বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, এমনকি রাহুল সিনহা থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, সকলের নামই উল্লেখ করেছেন।

একাংশ বলছেন, লকেটদেবী বর্তমানে সাংসদ ছাড়া আর তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদে নেই। ফলে তার দলের প্রতি অভিমান থাকতেই পারে। কিন্তু তিনি তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, তার কথা বলার ধরনের মধ্যে দিয়ে একবারও এটা বোঝানোর চেষ্টা করেননি। ফলে এটা স্পষ্ট যে, বিজেপি যারা মন থেকে করেন, তারা কোনোভাবেই দলের প্রতি অসন্তুষ্ট নন। তৃণমূল চাপে পড়েছে জন্যই, নিয়োগ দুর্নীতিতে ফেঁসে গিয়েছে জন্যেই আড়াল থেকে বিজেপির অন্দরে গৃহযুদ্ধ লাগানোর পরিকল্পনা করছে বলেই মত একাংশের।

গেরুয়া শিবিরের দাবি, বিজেপির মত দলে এসব করে কোনো লাভ নেই। দুদিন হট্টগোল হলো, তারপর সব উধাও হয়ে গেল। কিন্তু তৃণমূল গোটা রাজ্যে জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। নীচুতলা থেকে একদম উপর তলা, সব জায়গায় ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের মধ্যেই। তবে বিজেপিতে এসব নেই। বিজেপি সর্বভারতীয় দল এবং এখানে শৃঙ্খলা মেনে কাজ হয়। তৃণমূল চেস্টা করেছিল, কিভাবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে চাপে রাখা যায়, তাদের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করা যায়। কিন্তু দুদিনের দ্বন্দ্ব মুহূর্তেই ফিনিশ হয়ে গেল। কারণ তৃণমূলের চালাকি ধরা পড়ে গিয়েছে। পেছন থেকে লোক দিয়ে নিজেদের লোককে পার্টি অফিসের সামনে নিয়ে এসে বিক্ষোভ করিয়ে তৃণমূল নিজেরাই লজ্জায় পড়ে গিয়েছে। তাই নিজেদের বিপদ ঢাকতে বিজেপিকে এভাবে চাপে ফেলতে পারবে না রাজ্যের শাসকদল বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের কাছে করার মতো আর কোনো পরিস্থিতি নেই। তারা সব দিক থেকেই ফেঁসে যেতে শুরু করেছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে যেভাবে একের পর এক নেতার নাম আসছে এবং যেভাবে জেরা করা হচ্ছে, তাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ধরার পথে এগোচ্ছে। যে কোনো মুহূর্তে তৃণমূলের যে কোনো নেতার জন্য দুঃসংবাদ আসতে পারে। তাই কিভাবে খবরকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, তার জন্য বিজেপি অফিসের সামনে নিজেদের লোক দিয়ে তৃণমূল একটা চেষ্টা করেছিল, বিশৃঙ্খলা তৈরি করার। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর মত নেতা তৃণমূলের সেই চালাকি ধরে ফেলেছেন।

বিজেপি নেতৃত্ব যারা বিক্ষোভ করেছেন, তাদের আলোচনার জন্য আহ্বান করেছেন। ফলে আর যাই হোক, বিজেপি তৃণমূলের মত দল নয় যে, কর্মীদের কথা না শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে! তাই আলোচনার ভিত্তিতেই সব গন্ডগোল এক রাতের মধ্যেই কার্যত ফিনিশ। যা দেখে লকেট চট্টোপাধ্যায়ও বুঝে গিয়েছেন যে, বিজেপি অফিসের সামনে এই বিক্ষোভ আসলে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র। এভাবে আর যাই হোক, বিজেপিকে আটকানো যাবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!