“দরকার হলে বুথ জ্যাম করে ভোট করবো।” শাসকদলের সদস্যের এই বক্তব্যে উঠলো ঝড় রাজ্য October 2, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকের কাঠি পড়েই গেছে। এই বিধানসভা নির্বাচনকে তাদের সম্মান রক্ষার লড়াই হিসেবে দেখতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। প্রসঙ্গত এই নির্বাচনে জয়লাভ করলে পশ্চিমবঙ্গের মসনদ রক্ষায় হ্যাট্রিক হতে চলেছে শাসকদলের। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম ফুটলে গেরুয়াময় বাংলা গঠনের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে বিজেপির। বস্তুত গত ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মতো আগামী বিধানসভা নির্বাচন যে ততটা সহজ হবে না, সে কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই শাসক দলের পক্ষে। কারণ, পূর্বের তুলনায় বাংলার মাটিতে নিজের যথেষ্ট রকম প্রভাব বিস্তার করতে সফল হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাই আসন্ন নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়ে উঠে-পড়ে লেগেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বীরভূম জেলায় তৃণমূলকে নির্বাচনে জয়যুক্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রাত দিন এক করে দিচ্ছেন তিনি শাসক দলের ঘর গোছাতে, সংগঠনকে জোরদার করতে। এ কারণেই জেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিক কর্মী সভা করে চলেছেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই কর্মীসভা গুলিতে নানা কিছু বিষয় তিনি দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের কাছে প্রশ্ন করছেন। নানাবিধ প্রশ্ন করে সেই এলাকাতে শাসক দলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তিনি, বাতলাচ্ছেন সমস্যার দ্রুত সমাধানের পথ। কিন্তু তাঁর একাধিক কর্মিসভাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়ে নানা বিতর্ক, গুঞ্জন, উঠেছে নানা অভিযোগ। ইতিপূর্বে বিজেপি শিবির থেকে অভিযোগ এসেছিল যে, এই কর্মীসভা গুলিতে যথেচ্ছভাবে লোক সমাগম ঘটেছে, সেইসঙ্গে অমান্য করা হচ্ছে সামাজিক দূরত্বের বিধি। আবার এক কর্মী সভাতে, রাস্তা সারাইয়ের দাবি জানানোয় জনৈক বুথ সভাপতিকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। আবার এক সভাতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে শাসকদল তৃণমূলের অকৃতকার্যতার কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছিল এই দলেরই এক প্রভাবশালী নেতাকে। এরকম যখন একাধিক বিতর্কর সূত্রপাত ঘটেছে এই বুথ কর্মী সভাগুলিকে কেন্দ্র করে, সেই আবহে গতকাল বৃহস্পতিবার এক কর্মীসভায় শোরগোল ফেলে দিল জনৈক তৃণমূল সদস্যর এক বক্তব্য। জন্ম দিল যা একরাশ বিতর্কের। প্রসঙ্গত গতকাল বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলার হিয়াত নগরে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এক কর্মীসভার আয়োজন করেছিলেন। এই কর্মীসভায় পাইকর ২ নম্বর ব্লকের ২৫০ নম্বর বুথের জনৈক তৃণমূল কর্মী মহঃ আরিবুল ইসলামকে আগামী বিধানসভা ভোটে লিডের বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডল প্রশ্ন করেছিলেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জেলা সভাপতির এই প্রশ্নের উত্তরে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে শাসকদলের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতির বিষয়ে একাধিক বক্তব্য রাখেন তিনি। তার সূত্রেই তৃনমূল সদস্য মহঃ আরিবুল ইসলাম জানালেন যে, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বামফ্রন্টের সদস্য ছিলেন। এরপর গত ২০১৫ সালে তিনি বাম ত্যাগ করে যোগদান করেন তৃণমূলে। এরপর গত ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কিছুটা লিড দিয়েছিলেন। আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর এলাকায় লিড অনেকটা বাড়বে বলে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। তৃনমূল সদস্য মহঃ আরিবুল ইসলামের কাছ থেকে আগামী বিধানসভা নির্বাচন সম্পর্কে ইতিবাচক বক্তব্য শুনে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন , ” সিওর, বাড়বে?” জেলা সভাপতির এই প্রশ্নের জবাবে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ” সিওর। বাড়বে। দরকার হলে বুথ জ্যাম করে ভোট করবো।” তাঁর মুখ থেকে এ কথা শোনার পরই অনুব্রত মণ্ডল মঞ্চ থেকে থামিয়ে দেন তাঁকে এবং সেইসঙ্গে বলেন, ” না না না “। এভাবে অনুব্রত মণ্ডল তাঁকে সহজেই থামিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর সেই বচন বিরোধীদের হাতে এক বিরাট অস্ত্র তুলে দিল। কারণ ইতিপূর্বে বিভিন্ন নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূল বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করা, বিরোধীদের ভয় দেখানো, নমিনেশন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়া, ছাপ্পা সহ বিভিন্ন রকম অনৈতিক উপায়ে ভোট করাবার একাধিক অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের বিরোধীমহল।গতকাল তৃণমূল দলের হিয়াত নগরের কর্মীসভায় তৃনমূল সদস্য মহঃ আরিবুল ইসলামের এই বক্তব্যের পর বিরোধীদের বলতে শোনা যায়, ” আমাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয় ওই তৃণমূল কর্মীর বক্তব্যেই।” তৃণমূল দলের সদস্যের এই বিতর্কিত মন্তব্যে যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল তা অস্বীকার করবার উপায় নেই। আপনার মতামত জানান -