এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দেবকে নিয়ে ইস্যু, সেটাও মমতার নতুন নাটক? পর্দাফাঁস বিরোধীদের!

দেবকে নিয়ে ইস্যু, সেটাও মমতার নতুন নাটক? পর্দাফাঁস বিরোধীদের!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এক অদ্ভুত ট্র্যাতিশন শুরু হয়েছে। যেখানে রাজনৈতিক নেতারা চুরি করছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভোট রাজনীতিতে নামানোর চেষ্টা করেছেন, তাদের দিয়ে নিজের দল যাতে ক্ষমতায় থাকে। লোকসভা থেকে বিধানসভা, সব জায়গায় এইরকম সেলিব্রিটি মুখকে প্রার্থী করার চেষ্টা হয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও সেই হাতিয়ার বেছে নিয়েছে। কিন্তু যারা মানুষের সঙ্গে মেশে না, যারা দিনরাত টেলিভিশন মিডিয়াতে অভিনয় করতেই ব্যস্ত, তারা কি করে মানুষের সেবা করবেন! এই প্রশ্ন কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে এভাবে সেলিব্রিটি মুখদের দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল সর্বনাশের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, এই অভিযোগটাও ছিল। আর এসবের মধ্যেই সাম্প্রতিককালে হঠাৎ করে তৃণমূল সাংসদ তথা বিশিষ্ট অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেবকে নিয়ে একটা নতুন চর্চা শুরু হয়েছে। একটা অংশ খবর করতে শুরু করে যে, দেব তৃণমূলের ওপর রাগ করেছেন, তিনি আর ভোটে দাঁড়াবেন না। এমনকি দেবের পক্ষ থেকেও একের পর এক জল্পনা মূলক পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তাকে নিয়ে যাতে চর্চা হয়, সেই রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছিল? যদি সত্যিই দেবের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি হয়ে থাকে, তাহলে শেষ পর্যন্ত কেন তিনি সেই সম্পর্ক ছিন্ন করলেন না! তাহলে কি সবটাই একটা নাটক ছিল? শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেবের বৈঠকের পর এই বিশিষ্ট অভিনেতা তথা তৃণমূল সাংসদ যা বললেন, তারপর প্রশ্ন উঠছে যে, এরা শুধুমাত্র মানুষকে ঠকাতেই জানে।

প্রসঙ্গত, দেবকে নিয়ে এতদিন বিভিন্ন চর্চা হয়েছে। যখন সন্দেশখালিতে আগুন জ্বলছে, যখন সেখানকার মানুষ জনপ্রতিরোধ করছে, তখন এই সরকার বুঝতে পেরেছে যে, এবার তাদের যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। তাহলে কি সেই কারণেই দেবকে নিয়ে একটা ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল! যারা অনুপ্রাণিত মিডিয়া, তারা সেই খবর করে রাজ্যের মানুষের চোখ সন্দেশখালি থেকে ঘুরিয়ে রাখতে পারবে, এইরকম একটা চেষ্টা এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তার ভাইপো শুরু করেছিলেন? প্রশ্নটা এই কারণেই উঠছে, কারণ দেব, যিনি এতদিন রাজনীতি পছন্দ করতেন না বলতেন, হঠাৎ করেই তিনটি সরকারি কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়ে দিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পরেই আবার ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন যে, না, রাজনীতি তাকে ছাড়বে না। কিন্তু কার এত হিম্মত ছিল, যদি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখের উপর বলতে পারতেন যে, না, আমি এই নোংরা রাজনীতিতে থাকব না। তাহলে তাকে কে আটকে রাখে! কিন্তু তিনি তা বলার মত মেরুদন্ড রাখেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই একটা চিত্রনাট্য এতদিন দেবকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল। তার সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়ছে। এসব খবর বেশি করে দেখালে হয়ত সন্দেশখালি ধামাচাপা পড়ে যাবে। আর সেই কারণেই এই খবর নিয়ে এতদিন চর্চা হয়েছে। আর সেটা শনিবারের দেবের নতুন মন্তব্য থেকে আরও বেশি করে পরিষ্কার হয়ে গেল বলে মনে করছেন একাংশ।

বিরোধীদের দাবি, যখনই রাজ্যে ভয়ংকর কোনো ঘটনা ঘটে, তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুপ্রাণিত মিডিয়ার দিয়ে অন্য খবর করানোর চেষ্টা করেন। তার দলের এই নেতাদের শুরু ওই নেতাবে শুরু এমন করে আসল বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই সন্দেশখালির ঘটনা এই সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে, সেটা স্পষ্ট। আর সেই কারণেই দেবকে দিয়ে এতদিন একটা নাটক করানো হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ সেটা গ্রহণ করে না সেটা নিয়েই মেতে থাকেন। কিন্তু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন, সেটা ভেস্তে গেল। মানুষ এই সন্দেশখালীর ঘটনা নিয়ে বিরক্ত‌। যে সমস্ত খবর সামনে আসছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, নারী নিরাপত্তা এই রাজ্যে প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। তাই দেবকে নিয়ে খবর তৈরি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসল বিষয়কে ধামাচাপা দিতে পারবেন না বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবেন, এখনও তাকে রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করে। কিন্তু তিনি ভুল ভাবছেন। সন্দেশখালীর ঘটনা অনেকটা বাম আমলে নন্দীগ্রামের মত। এখানকার জনতার প্রতিরোধ বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই সরকারকে আর কেউ ভয় পায় না। তাই সেটা বুঝতে পেরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যে, দেবকে দিয়ে একটা নতুন নাটক সবার সামনে আনানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা যে সত্যি নাটক, তা শনিবার শেষ পর্যন্ত তার অভিনেতা সাংসদ নিজেই বুঝিয়ে দিলেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!