এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > হেভিওয়েট নেতাকে জেলেই থাকার নির্দেশ, নারদকান্ডে জামিন পেলেও অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের!

হেভিওয়েট নেতাকে জেলেই থাকার নির্দেশ, নারদকান্ডে জামিন পেলেও অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  সম্প্রতি নারদ কান্ডে ব্যাপক অস্বস্তি বেড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। যেখানে রাজ্যের চার হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর তারপর থেকেই সেই সমস্ত হেভিওয়েটকে মুক্তি দিতে রীতিমতো তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোমর বেঁধে ময়দানে নামা হয়েছিল। তবে নারদ কান্ডে যখন তৃণমূল সবরকম চেষ্টা করছে, তখন তৃণমূলের শীর্ষনেতা ছত্রধর মাহাতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার হলেও, কেন তার বিরুদ্ধে তৃণমূল গলা ফাটাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। আর এই পরিস্থিতিতে নারদ কান্ডে চার হেভিওয়েট ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

তারা নিজেদের নিজেদের জগতে বহাল তবিয়তে কাজ করছেন। তবে অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে তৃনমূলের আরেক নেতা জঙ্গলমহলের ছত্রধর মাহাতোর। ইতিমধ্যেই এনআইয়ের কাছে গৃহবন্দি থাকার জন্য আবেদন করেছিলেন ছত্রধর মাহাতো। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। যার ফলে ব্যাপক অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 2009 সালের 27 অক্টোবর রাজধানী এক্সপ্রেস পণবন্দি এবং খুনের ঘটনায় হাজতবাস হয়েছিল ছত্রধর মাহাতোর। পরবর্তীতে তৃণমূল সরকার আসার পরেও দীর্ঘদিন শ্রীঘরে ছিলেন তিনি। তবে কিছুদিন আগেই জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ছত্রধর মাহাতো।

তারপর বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে সাফল্য পাইয়ে দেওয়ার জন্য সেই ছত্রধর মাহাতোকে কাজে লাগিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি তাকে রাজ্যস্তরে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোট জঙ্গলমহলে শেষ হতে না হতেই আবার তাকে এনআইএর পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে নারদ কান্ডে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরে তাদের হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটোছুটি করলেও, কেন জঙ্গলমহলে সাফল্য দেখানো ছত্রধর মাহাতোর সক্রিয়তা দেখাচ্ছে না তৃণমূল নেতৃত্ব, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

আর বর্তমানে নারদ কান্ডে অভিযুক্ত চার হেভিওয়েট যখন জামিনে মুক্ত হয়ে নিজেদের মত করে রাজনৈতিক এবং সংসার জীবন পালন করছেন, তখন জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকতে হচ্ছে সেই ছত্রধর মাহাতোকে। সম্প্রতি এনআইএর কাছে গৃহবন্দি থাকার আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার আদালতের পক্ষ থেকে তার সেই আবেদন সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দেওয়া হল। জানা গেছে, আগামী 15 জুন পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে ছত্রধর মাহাতোকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূলের ঘরে একদিকে যেমন স্বস্তির নিঃশ্বাস, তেমনই ছত্রধর মাহাতোকে নিয়ে কাঁটা বিঁধছে শাসকদলের। আগাগোড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মহাশ্বেতা দেবী, কবীর সুমন সহ সমাজের বিশিষ্ট মানুষ তথা রাজনৈতিক কর্তা- ব্যক্তিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ছত্রধর মাহাতোর। কিন্তু বাম জমানার একেবারে শেষ লগ্নে মাওবাদী নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন রকম অসামাজিক বিধ্বংসীমূলক কাজকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে কেন্দ্র তথা রাজ্য তদন্তকারী সংস্থাদের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয় ছত্রধর মাহাতোকে।

আর তার বিরুদ্ধে বর্তমানে যে প্রধান অভিযোগ, সেই রাজধানী এক্সপ্রেস পনবন্দী করার সময় উল্লেখযোগ্য ভাবে রেলমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম অথবা মদন মিত্রের পাশে দাঁড়ানোটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে যতটা সহজ ছিল, ছত্রধর মাহাতোর ক্ষেত্রে কিন্তু ততটাই কঠিন। তাই প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক মদতহীন ভাবে আইনি লড়াইয়ে পরিশেষে ছত্রধরের পরিণাম কি হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!