এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > কেজরীওয়ালের রাজনৈতিক কৌশলের চাপে দ্বিধাগ্রস্ত বিজেপি সরকার

কেজরীওয়ালের রাজনৈতিক কৌশলের চাপে দ্বিধাগ্রস্ত বিজেপি সরকার


গতকাল অর্থাৎ রবিবার রামলীলা ময়দানে জনতার মাঝখানে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে আম আদমি পার্টি বিরোধী দল বিজেপিকে সম্পূর্ণরূপে ধরাশায়ী করেছে সম্প্রতি। বিপুল ভোটে উন্নয়নের ডঙ্কা বাজিয়ে নিজেদের ঝুলিতে ভোট ভর্তি করেছে আপ। সূত্রের খবর, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী নেতৃত্বদের আমন্ত্রণ না জানালেও কেজরিওয়ালের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। কেজরিওয়াল নিজে এই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে রবিবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত হননি।

এই নিয়ে পরপর তিনবার জিতে হ্যাটট্রিক করল আম আদমি সরকার। রবিবার শপথ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ হিসেবে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী বারাণসির নিজের কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সশরীরে হাজির না হলেও বারংবার তিনি কেজরিওয়ালের বক্তব্যের হাত ধরে জনগণের সামনে এসেছেন। এদিন শপথ মঞ্চ থেকেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে দিল্লিতে উন্নয়নের সরকার চালানোর জন্য সাহায্যের প্রতিশ্রুতি চাইলেন।

শপথ মঞ্চ থেকে এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ প্রার্থী হয়েছেন। প্রসঙ্গত, নির্বাচনে জেতার পরেই কেজরিওয়াল ও প্রধানমন্ত্রী একে অপরকে টুইট করেন। অবশ্য নরেন্দ্র মোদী সাধারণ অভিনন্দনের টুইট করেন কেজরিওয়ালকে। কিন্তু কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রীর উত্তরে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর সমালোচনা। অরবিন্দ কেজরিওয়াল তার টুইটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাথে হাত মিলিয়ে দিল্লিবাসীর জন্য কাজ করার আশা প্রকাশ করেছেন। এ দিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল লিখেছেন, ‘আপনার আন্তরিক অভিনন্দনের জন্য ধন্যবাদ। আমি আশা করেছিলাম আপনি আসবেন। কিন্তু আপনার ব্যস্ততার কথাও আমি বুঝি। এখন আমাদের উচিত এক সঙ্গে কাজ করা যাতে দিল্লি আগামীতে গোটা ভারতের কাছে গর্বের হয়ে উঠতে পারে।’

আর এই বার্তাই রাজনৈতিক মহলে বহন করে এনেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক কৌশলজাত বক্তব্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কৌশল ছিল মেরুকরণের রাজনীতি। অন্যদিকে, নির্বাচনী প্রচারে শুধুমাত্র উন্নয়নের উপরেই জোর দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই অনুযায়ী প্রচারও চালিয়েছিলেন তিনি। এদিন শপথ গ্রহণের সময়ও রামলীলা ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিকে আরেকবার তুলে ধরেন জনগণের সামনে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিবাসীর জন্য উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, সামনের 5 বছর আর কোনো নির্বাচনী লড়াই নেই। তাই আপের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য দিল্লির উন্নয়ন। আর তা করতে গেলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারকে পাশে পাওয়া দরকার। তাই সেই কৌশল বজায় রাখার জন্যই মোদির অভিনন্দন টুইটার জবাবে কায়দা করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল একসঙ্গে কাজ করার বার্তাটি দিয়েছেন। প্রসঙ্গত দিল্লিতে সবথেকে বেশি উন্নয়ন হয়েছে ইউপিএ সরকারের আমলে শীলা দীক্ষিতের নেতৃত্বে। কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দল থাকায় উন্নয়নের কাজে সুবিধা হয়েছে অনেক। কিন্তু আম আদমি পার্টি সরকারের পক্ষে তা সম্ভব নয়।

ইতিমধ্যে, আম আদমি পার্টি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে অসহযোগিতার। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই মুহূর্তে অভিযোগ না করে যদি হাতে হাত মিলিয়ে এগোনো যায় তাহলে আখেরে লাভ কেজরিওয়াল সরকারের হবে। এই মুহূর্তে কেজরিওয়ালের সামনে চ্যালেঞ্জ দিল্লির উন্নয়ন। আর এই উন্নয়নের স্বার্থেই দিল্লির জনগণ তাকে বিপুল ভোটে জয় করিয়ে করিয়ে এনেছে মসনদে। তাই উন্নয়নের কাজ করবার জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই মুহূর্তে বিজেপি সরকার যথেষ্ট চাপে কেজরির হাত বাড়ানোর বার্তায়।

কারণ সহযোগিতা চেয়ে জনসাধারণের সামনে কেজরিওয়াল দরজা খোলা রাখলেন, ভবিষ্যতে তিনি বলতে পারবেন সাহায্য চেয়ে সাহায্য পাননি।তবে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল অন্য সমীকরণের, তাতে আপাতত রাজনৈতিক কৌশলের ছায়া দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা প্রার্থনা করলেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে, কেজরিওয়ালকে সাহায্যের হাত না বাড়ালে খুব স্বাভাবিকভাবেই জনগণের চাপের মুখে পড়বে বিজেপি সরকার। আপাতত দিল্লির রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে, সে দিকে লক্ষ্য রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!