লোকসভায় হারছে তৃণমূল? ইঙ্গিত কি পেয়েই মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন মমতা? কটাক্ষ বিজেপির! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য October 12, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ভাইপো যতই বলার চেষ্টা করুন না কেন, বিজেপি রাজ্যে নেই, এমনকি সর্বভারতীয় বিজেপিকেও তারা ক্ষমতাচ্যুত করবেন, মনে মনে তারা যথেষ্ট ভয় রয়েছেন। তা না হলে দুর্গাপুজোর আগে মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিজেপি নিয়ে সকল মন্ত্রীদের সতর্ক করে দিতে দেখা যেত না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। আর এই কথা আমরা বলছি না। এই কথা বলছে রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন, বিজেপি ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মনে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। বর্তমানে তারা পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলের আসনে রয়েছে। আগামী দিনে তারা ক্ষমতায় আসতে চলেছে, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে ভালো করে ঢুকে গিয়েছে। সেই কারণেই নিজের বাড়িতে পুজোর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক করে বিজেপির ভূত দেখতে শুরু করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অন্তত তেমনটাই বলছেন সমালোচক মহলের একাংশ। সূত্রের খবর, পায়ে চোট লাগার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িতে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেই কারণেই তার বাড়িতেই মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর সেখানেই একটি বড় নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত মন্ত্রীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “পুজোর সময় এলাকা ছাড়া চলবে না। বিজেপি পুজোর সময় অশান্তি করতে পারে। তাই সমস্ত মন্ত্রীদের এলাকার যে কোনো ঘটনার দিকে নজর রাখতে হবে।” তবে প্রতিবারই মুখ্যমন্ত্রী পূজোর আগে মন্ত্রীদের এলাকায় থাকার নির্দেশ দেন। ফলে এবার তো তিনি নতুন কোনো নির্দেশ দিচ্ছেন না। তাই এই নিয়ে মাথাব্যথা হওয়ার মত তেমন কোনো বিষয় রয়েছে বলে মনে করছেন না একাংশ। তবে অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার বিজেপির ভূত দেখছেন। যে কারণে তিনি মন্ত্রীদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন যে, বিজেপি অশান্তি করতে পারে। আসলে আর কিছুই না। রাজ্যের পরিস্থিতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। তিনি এখন তার ভাইপোকে রাজ্যপাট তুলে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সেই কারণে নিজে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করতে পারছেন না। ভাইপোকে সামনে রেখে অসুস্থতার কারণে তিনি বাড়িতে বসে রয়েছেন। তবে এত কিছু করার পরেও মুখ্যমন্ত্রী হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে, বিজেপির প্রতি মানুষের ভরসা বাড়ছে। সেই কারণে যে করেই হোক, বিজেপির ঘাড়ে দায় চাপিয়ে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেই দাবি বিরোধীদের। বিজেপির দাবি, পুজো পেরোলেই লোকসভা নির্বাচন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি বাংলার 42 টি আসনের মধ্যে কটা আসন আদৌ পাবেন, তা নিজেই জানেন না। যত সময় এগোচ্ছে, ততই শুভেন্দু অধিকারী প্রতিপক্ষের নেতা হিসেবে মানুষের মন জয় করে নিচ্ছেন। আর এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রবল চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিনি খুব ভালো করে বুঝে গিয়েছেন, তার পক্ষে এবার লোকসভা নির্বাচনে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তো দূরের কথা, বাংলায় এক অংকের সংখ্যা পেরোনোও হয়ত সম্ভব হবে না। আর সেই কারণেই পুজোর মধ্যেও কি করে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানো যায়, তার চেষ্টা শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালো করে জানেন, পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই বেশিরভাগ জেলাতে তার দল জয়লাভ করেছে। কিন্তু আগামী লোকসভা নির্বাচন সেভাবে হবে না। কড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরার মধ্যে দিয়েই সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে সেখানে যদি তৃণমূল ভালো ফল না করতে পারে, তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে, রাজ্যে কিভাবে স্থানীয় ভোটগুলিতে জয়লাভ করে শাসক দল! আর তাতে সাধারণ মানুষ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পরিবর্তন ঘটাতে আরও বেশি তৎপর হয়ে উঠবেন। আর এই অদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখন থেকেই সব ব্যাপারে কি করে বিজেপিকে দোষারোপ করা যায়, তার চেষ্টা শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এদিন মন্ত্রীসভার বৈঠকেও তার মুখে শোনা গেল বিজেপির কথা। মোটের উপর মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে ভয় পাচ্ছেন। তাই এদিন “বিজেপি অশান্তি করতে পারে” বলে একটা নাটুকে মন্তব্যে তিনি মাইলেজ পাওয়ার চেষ্টা করলেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -