এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার সিদ্ধান্ত বয়কট? শুভেন্দুর আহ্বানে জাগবে রাজ্য! ব্যাপক চাপে তৃনমূল!

মমতার সিদ্ধান্ত বয়কট? শুভেন্দুর আহ্বানে জাগবে রাজ্য! ব্যাপক চাপে তৃনমূল!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দুর্গাপুজোয় এক অদ্ভুত রেওয়াজ শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। যে বাংলা সংস্কৃতির পীঠস্থান, যে বাংলায় হিন্দু শাস্ত্র পঞ্জিকা মেনে পালন হয় সমস্ত পুজো, সেখানে দেবীপক্ষ পড়ার আগেই পূজার উদ্বোধন করে দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই ভার্চুয়ালি বিভিন্ন জেলা ধরে ধরে পূজোর উদ্বোধন শুরু করে দিয়েছেন তিনি। আর সেই বিষয় নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী সেই বিষয় নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তার দাবি, দেবীপক্ষ পড়ার আগেই কি করে এই পূজা উদ্বোধন হয়? কেন হিন্দু শাস্ত্রকে এভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছে! আর শুধু এই প্রশ্ন তোলাই নয়। এবার একেবারে গোটা রাজ্যের মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর এই ভার্চুয়ালি পুজো উদ্বোধন বয়কট করার আহ্বান জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

অনেকে বলছেন, বেশিরভাগ ক্লাবই হয়তো মুখ্যমন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজকেই পূজা উদ্বোধন করে নেবেন। কারণ তারা খুব ভালো মতো জানেন যে, সরকারের আহবানে যদি তারা সাড়া না দেন, তাহলে পুলিশ দিয়ে তাদেরকে ভয় দেখানোর প্রক্রিয়া চলবে। অর্থনৈতিকভাবে তাদের সাহায্য দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি রাখতে হিন্দু শাস্ত্রের উর্ধ্বে উঠে তারা এই কাজ করতে বাধ্য। কিন্তু যারা মেরুদন্ড সোজা রেখে চলেন, তারা অন্তত শুভেন্দু অধিকারীর কথায় মুখ্যমন্ত্রী আহবানে সাড়া দেবেন না বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

প্রসঙ্গত, আজ বিকেলেই কালীঘাটের বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি জেলার পুজোগুলোর উদ্বোধন করতে শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তার আগেই রাজ্যবাসীর কাছে করজোড়ে হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করার জন্য একটা বড় আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা। এদিন তিনি বলেন, “যারা শাস্ত্রজ্ঞান মেনে পুজো করেন, যারা অঞ্জলি দেন, যারা চক্ষুদান মানেন, তাদের কাছে অনুরোধ, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভার্চুয়ালি উদ্বোধন আপনারা বয়কট করুন।” অনেকে মনে করতেই পারেন যে, মুখ্যমন্ত্রী এত পূজো উদ্বোধন করছেন, এটা দেখে শুভেন্দু অধিকারীর গাত্রদাহ হচ্ছে‌। তাই তিনি তাকে বাধা প্রাপ্ত করতেই এই ধরনের আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু একেবারেই তা নয়‌।

একাংশের যুক্তি, শুভেন্দু অধিকারী নিজেও হিন্দু ধর্মের মানুষ। তাই শাস্ত্র মতে পুজো হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী বলে তিনি মনে করেন। দেবীপক্ষের আগেই কেউ দুর্গা প্রতিমার মুখ দেখেন না। মুখ্যমন্ত্রী যা ইচ্ছে, তাই করার চেষ্টা করলেও, যখন পুজোর একটা প্রস্তুতি সমস্ত প্যান্ডেলে চলছে, তখন এই ধরনের তড়িঘড়ি উদ্বোধন হিন্দু ধর্মকে অবজ্ঞা করা বলেই দাবি একাংশের। গেরুয়া শিবিরের একাংশের মতে, আগে দুর্গাপুজোয় একটা উন্মাদন ছিল। ষষ্ঠী থেকে পুজো শুরু হত। তার আগে প্যান্ডেল তৈরির প্রস্তুতি দেখা যেত। কিন্তু এখন মহালয়ার আগে দেবীপক্ষের আগেই এই সরকারের বদান্যতায় পুজো শুরু হয়ে যায়। ফলে মানুষের মধ্যে শাস্ত্র নিয়ে সচেতনতা অনেক কমে গিয়েছে।

দুর্গাপূজো এখন কালচারাল উৎসবে পরিণত হয়ে গিয়েছে বাংলায়। তাই শুভেন্দু অধিকারী যা বলেছেন, তা গোটা রাজ্যের হিন্দু সনাতনী সংস্কৃতির মানুষদের মনের কথা। অবশ্যই দুর্গাপুজো বাঙালির অন্যতম বড় উৎসব। কিন্তু উৎসবের থেকেও বেশি এখানে আচার-বিচার অনুযায়ী শাস্ত্র মেনে পুজো করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেই শাস্ত্রকেই যখন দেবী পক্ষের আগে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে অবজ্ঞা করা হচ্ছে, তখন হিন্দু সংস্কৃতি প্রশ্নের মুখে বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, আজকে তৃণমূলের কাছে ক্ষমতা রয়েছে, আজকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তার আবেদনে সাড়া দিয়ে সকল ক্লাবগুলি পূজা উদ্বোধন করতে বাধ্য হবে। শুভেন্দু অধিকারীর ডাকে হয়ত অনেকেই সাড়া দেবেন না। কিন্তু যারা যারা শুভেন্দুবাবুর এই বক্তব্য শুনেছেন, তারা মন থেকে এটা বিশ্বাস করেন যে, দেবীপক্ষের আগে পূজো উদ্বোধন করা শাস্ত্রগত ভাবে অনুচিত। পিতৃপক্ষে কখনই পূজোর উদ্বোধন হয় না। ফলে ক্ষমতায় বিভোর হয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই হ্যাতে হ্যা মিলিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের ফতোয়া হয়ত অনেকে মানতে বাধ্য হবেন। কিন্তু একদিন আসবে, যখন হিন্দু ধর্ম রক্ষিত হবে রাজ্যে। আর সেই সময় দুর্গা পুজো হবে শাস্ত্র অনুযায়ী। যেদিন শুভেন্দু অধিকারীর কথা মতোই বাংলার মানুষ জাগবে। রক্ষিত হবে বাংলার ধর্ম। পালন হবে উৎসব। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!