মমতার আর এক মন্ত্রীও ফাঁসতে চলেছে? চাপ বাড়ছে ভাইপোরও! শুভেন্দুর কথায় ভয়াবহ ইঙ্গিত! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য November 5, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্যে এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, যেখানে দুর্নীতি করেনি এই রাজ্যের শাসক দল। তবে তারা ভেবেছিল, এভাবে দুর্নীতি করেই পার পেয়ে যাবে। কিন্তু দেশের আইন ব্যবস্থা কাউকে ছাড়ে না। তাই এখন তৃণমূল সরকারের একের পর এক মন্ত্রী গ্রেপ্তার হতে শুরু করেছেন। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবি করছেন, তার সময়ে কোনো ভুল হয়নি। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো ত্রুটি কেউ ধরতে পারবে না বলেও বড় বড় গলায় মন্তব্য করেছেন রথীন ঘোষ। কিন্তু সিস্টেম যখন একটাই, তখন কিভাবে তার সময় দুর্নীতিমুক্ত হয়ে যাবে? কারণ যখন একদম তৃণমূলের ওপর মহল থেকে এই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তখন মন্ত্রী বদল হয়তো হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। বিরোধীরা তেমনটাই দাবি করেছে। আর এবার সেই ব্যাপারেই বিস্ফোরক মন্তব্য করে তৃণমূলের অন্দরে কম্পন ধরালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমন একটি কথা তিনি বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে নিয়ে বললেন এবং সেই জালে স্বনামধন্য ভাইপোকে জড়িয়ে ফেললেন, তাতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রসঙ্গত, এদিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করার পাশাপাশি রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রীকে নিয়েও প্রতিক্রিয়া দেন শুভেন্দুবাবু। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, জ্যোতিপ্রিয়র বদলের রথীন এসেছে। কিন্তু এটা অনেকটা পুরনো বোতলে নতুন মদের মত। মন্ত্রী বদল হলেও যে বাকিবুর রহমান গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেই বাকিবুর রহমানের মাধ্যমে ভাইপোর পিএ সুমিতের কাছে সমস্ত টাকা পৌঁছে দেওয়া হত বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। অর্থাৎ তৃণমূলের উপর তলার নেতারা হয়তো জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এই গ্রেপ্তারির পর কিছুদিনের মধ্যেই তার মাথা থেকে হাত তুলে নেবে। তারা হয়তো বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেপ্তারির পেছনে একমাত্র তিনিই দায়ী। তিনি অপকর্ম করেছেন, তাই তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনভাবেই জড়িত নয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিলেন যে, তৃণমূলের ওপরতলার নির্দেশেই এই সমস্ত অপকর্ম হয়েছে এবং যে দুর্নীতি হয়েছে, তার টাকা পৌঁছে গিয়েছে হেভিওয়েটদের কাছে। অর্থাৎ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব যতই নিজেদের স্বচ্ছ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করুন না কেন, শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তাতে তারা আর হালে পানি পাবেন না বলেই মনে করছেন একাংশ। বিজেপির দাবি, এই রাজ্যের শাসক দল আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িত। ওপরতলা থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে জন্যেই নেতা মন্ত্রীরা দুর্নীতি করার সাহস পেয়েছেন। তাই এখন বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী নিজেকে সততার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। এমনকি এই দলের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীও নিজেকে সততার প্রতিমূর্তি হিসেবে সামনে আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এসব করে লাভ হবে না। দুর্নীতি যে হয়েছে এবং তা যে ওপরতলার মদতেই হয়েছে, তা স্পষ্ট। ভাইপোর আপ্ত সহায়কের কাছে যে টাকা পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, তার জবাব তো দিতে হবে তৃণমূল নেতৃত্বকে। তা না হলে আগামী দিন যদি আরও বড় কোনো রাঘব বোয়ালের ডাক আসে, তখন তো আবার তৃণমূল প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণ করা হচ্ছে বলে নাকিকান্না কাঁদতে শুরু করবে। তাই দুর্নীতি যদি নাই হয়ে থাকে, তাহলে এর স্বপক্ষে নিজেদের স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে সঠিক যুক্তি সামনে আনুক শাসকদল বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, রেশন বন্টনে যে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে, তাতে আগামী দিনে আরও অনেকের ডাক আসতে পারে। শিক্ষার পর এই দুর্নীতি তৃণমূলের অনেক রাঘববোয়ালের ঘুম কেড়ে নিতে পারে। ওপরতলার দিকে ধীরে ধীরে অভিযোগের আঙুল উঠছে। তাই এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্ব চেষ্টা করবে, নিজেদের দোষ ধামাচাপা দেওয়ার। তবে শুভেন্দু অধিকারীও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। তিনি ভেতরের অনেক খবর জানেন। তাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে খাদ্য দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও যে পরিমাণ দুর্নীতির টাকা তৃণমূলের ওপরতলার কোনো একজনের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, তা নিয়েই এবার বোমা ফাটালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। যার ফলে তৃণমূলের আরও এক হেভিওয়েট মন্ত্রী যেমন ফেঁসে যেতে পারেন, ঠিক তেমনই নতুন জালে জড়িয়ে যেতে পারেন স্বনামধন্য ভাইপো। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -